নির্ভার থেকে সাফল্যের লক্ষ্য বাংলাদেশের

অপেক্ষার দিন গুণে কেটে গেছে প্রায় ৯টি বছর। এসএ গেমস ফুটবলে সবশেষ সোনার পদক জয়ের স্মৃতিটা ফিকে হয়ে গেছে। না পারার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এবার প্রাপ্তির উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে উন্মুখ বাংলাদেশ। তবে কোচ জেমি ডে বরাবরের মতোই সাধবানী, কৌশলী। নির্ভার থেকে নিজেদের সেরাটা মেলে ধরে সর্বোচ্চ ফল পাওয়ার চিরায়ত ছকেই থাকছেন তিনি।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2019, 02:33 PM
Updated : 21 Nov 2019, 02:33 PM

১৯৯৯ সালে এই নেপালেই প্রতিযোগিতাটির ফুটবল ইভেন্টে প্রথম সোনার পদক জিতেছিল বাংলাদেশ; সেবার স্বাগতিকদের ১-০ গোলে হারিয়েছিল দল। ২০১০ সালে নিজেদের মাঠে আফগানিস্তানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দ্বিতীয় ও শেষ সোনালি হাসি হেসেছিল দল। এরপর শুরু তৃতীয় সোনার পদকের অপেক্ষা।

যে নেপালে ফুটবলের প্রথম সোনার পদক জয়ের গল্প লেখা, সে দেশেই আগামী ১ ডিসেম্বর কাঠমাণ্ডু-পোখারায় শুরু হবে এসএ গেমসের ত্রয়োদশ আসর। ২৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৫টিতে অংশ নিবে বাংলাদেশ। শিলং ও গুয়াহাটিতে গতবার ফুটবলের দুই বিভাগ থেকে এসেছিল দুটি ব্রোঞ্জ। এবার অংশ নিচ্ছে না মেয়ে ফুটবল দল। পদকের ভার তাই ছেলেদের কাঁধে।

এরই মধ্যে ২০ জনের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। অনূর্ধ্ব-২৩ বছর বয়সীদের নিয়ে হওয়া এই ইভেন্টে তিন জন সিনিয়র খেলোয়াড় খেলানোর সুযোগ আছে। এ কোটায় ঠাঁই পেয়েছেন জাতীয় দলের তিন চেনা মুখ জামাল ভূইয়া, ইয়াসিন খান ও নাবীব নেওয়াজ জীবন।

দীর্ঘদিন ধরেই মাঝমাঠের নির্ভরযোগ্য সেনানি জামাল। জাতীয় দলের মতো এসএ গেমসের দলের মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ মুঠোয় রাখার মূল দায়িত্ব তার কাঁধে। নেতৃত্বেও থাকবেন ২৯ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়। রক্ষণের নির্ভরতার নাম ইয়াসিন। আক্রমণভাগে বেছে নেওয়া হয়েছে গত প্রিমিয়ার লিগে ১৬ গোল করা আবাহনী লিমিটেডের ফরোয়ার্ড জীবনকে।

দলে নতুন মুখ ৪ জন। গোলরক্ষক পাপ্পু হাসান ও মাহফুজ হাসান প্রিতম, আক্রমণভাগে আল আমিন ও রাকিব হোসেন।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নেপালের উচ্চতার বিষয়টি মাথায় রেখে ২৬ নভেম্বর দেশটিতে যাওয়ার পরিকল্পনাও সেরে রেখেছেন কোচ জেমি ডে। তবে পদক নিয়ে পরিকল্পনা, ভাবনার প্রশ্নে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ডে জানালেন, প্রত্যাশার চাপ তরুণদের কাঁধে দিতে চান না এখনই। বার্তা একটাই-নিজেদের মেলে ধরো।

“এসএ গেমসে পদক জেতা নিয়ে ছেলেদের ওপর আমার তরফ থেকে কোনো প্রত্যাশার চাপ নেই। তাদের বলেছি, যদি আমরা ভালো খেলতে পারি, তাহলে আমাদের পদক জয়ের সুযোগ থাকবে।”

“নেপালের উচ্চতা নিয়ে আমাদের ভাবনা আছে। এ কারণে ফেডারেশনকে বলেছি, আমাদের ২৬ তারিখে নেপালে পাঠাতে। যাতে করে আমরা এই সমস্যার সঙ্গে আগে থেকে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পারি।”

ফুটবলে এবার অংশ নিচ্ছে না গতবার নেপালের কাছে হেরে রানার্সআপ হওয়া ভারত। বাংলাদেশের মূল প্রতিপক্ষ তাই স্বাগতিক নেপাল। ভারতের সরে দাঁড়ানো দলের জন্য দারুণ সুযোগ মানলেও ডে বরাবরের মতোই সতর্ক।

“যেহেতু ভারত খেলছে না, আমি মনে করি এটা আমাদের জন্য আরও ভালো সুযোগ। আমি মনে করি, একটা পদক জয়ের জন্য আমাদের দল ও খেলোয়াড়রা যথেষ্ট ভালো। যদি আমরা ভালো খেলতে পারি, তাহলে আমাদের ফাইনালে ওঠার ভালো সুযোগ আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, অন্যরাও ফাইনাল খেলতে চাইবে।”

দল: আনিসুর রহমান জিকো, পাপ্পু হোসেন, মাহফুজ হাসান প্রিতম, বিশ্বনাথ ঘোষ, রহমত মিয়া, ইয়াসিন খান, টুটুল হোসেন বাদশা, রিয়াদুল হাসান রাফি, ইয়াসিন আরাফাত, সুশান্ত ত্রিপুরা, জামাল ভূইয়া, বিপলু আহমেদ, রবিউল হাসান, আল আমিন, মাহবুবুর রহমান, সাদউদ্দিন, নাবীব নেওয়াজ জীবন, রাকিব হাসান, আরিফুর রহমান ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম।