নেপালের কাঠমাণ্ডু-পোখারায় আগামী ১ ডিসেম্বর শুরু হবে এসএ গেমসের ত্রয়োদশ আসর। ২৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৫টিতে অংশ নিবে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার খেলাধুলার সর্বোচ্চ এই আসরে গতবার ভারোত্তোলন থেকে এসেছিল ১টি সোনা, ২টি রুপা ও ৩টি ব্রোঞ্জ।
গত জুলাই থেকে আইভি রহমান সুইমিং পুল লাগোয়া জিমনেশিয়ামে চলছে মাবিয়া-মোস্তাইন-সুমনদের অনুশীলন। ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার দিকে তাকালে যথেষ্ট সময় নয় মোটেও। প্রতিদিন ছয়শ টাকার কিছু বেশি মেলে খাবারের জন্য, একজন ভারোত্তোলকের পুষ্টির জন্য সেটাও খুব বেশি নয়। কিন্তু পদক এনে দেওয়ার ভারটুকু সবসময় থাকে তাদের কাঁধে। এবারও আছে।
৭ জন করে ছেলে ও মেয়ে নিয়ে এবারের ভালোত্তোলনের দল। গতবারের পদকজয়ীদের মধ্যে মাবিয়া, মোস্তাইন বিল্লা, ফুলপতি চাকমা, রোকেয়া সুলতানা সাথী, মোল্লা সাবিরা আছেন এবারের দলে। নেপালে সাতটি ওজন শ্রেণিতে কে কে লড়বেন, তাও নির্ধারিত হয়েছে।
শিলং-গুয়াহাটির আসরে সেরার বেদীতে উঠে আনন্দাশ্রু ঝরেছিল মাবিয়ার চোখ দিয়ে। যে দৃশ্য ছুঁয়ে গিয়েছিল দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের। এবারও তাকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ চড়ছে। মাবিয়াও প্রস্তুত সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে হাসতে। হাসাতেও।
“আলহামদুলিল্লাহ, প্রস্তুতি ভালো। এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে। সোনার পদকের প্রত্যাশা আপনারা করতেই পারেন। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণের জন্য যেটা আমাকে দেওয়া উচিত ছিল, সেটা গত চার বছরে দেওয়া হয়নি। তবে এসএ গেমসের কিছুদিন আগে আমাদের ক্যাম্প করা হয়েছে। তারপরও লক্ষ্য বিগত রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাওয়া।”
গতবারের ব্রোঞ্জজয়ী বিল্লা বড় স্বপ্ন দেখছেন না। শ্রীলঙ্কার প্রতিযোগী ২৬৫ কেজি তুলে গতবার তার ইভেন্টে সোনা জিতেছিলেন। রুপাজয়ী নেপালের প্রতিযোগী তুলেছিলেন ২৪২ কেজি। ২২৫ কেজি তোলা বিল্লা তাই প্রতিপক্ষের সঙ্গে নিজেদের ব্যবধান, বাস্তবতা তুলে ধরলেন অকপটে।
“ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের ভারোত্তোলকরা অনেক দিন ধরে অনুশীলন করছে। দেখলাম অনেক ভালো করছে। ভারতের তরুণরাও ভালো করছে। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৫০-৬০ কেজি তুলছে। আমি ১২৮-১৩০ কেজি তুলতে পারি। স্ন্যাচে পারি ১০৩-১০৪ কেজি। দীর্ঘ সময় অনুশীলন করতে পারলে বলতে পারতাম পদক পাব।”
জাতীয় ভারোত্তোলনের গত দুই প্রতিযোগিতায় সোনা জেতা সুমন চন্দ্র রায়ও সুর মেলালেন বিল্লার সঙ্গে। দাবি তুললেন দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলনের।
“ভারত, পাকিস্তান আমাদের চেয়ে ভালো। তবে ভাগ্যে থাকলে গোল্ড আমাদেরও হয়ে যেতে পারে। দেখা যাক। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৬০ কেজি ও স্ন্যাচে ১২০ কেজি উঠিয়েছি। এটা দিয়েই গোল্ড হতে পারে। দেখা গেল ভারত, পাকিস্তানের অ্যাথলেটদের কোনো দুর্ঘটনা হয়ে যেতে পারে…তখন আমরা পেতে পারি। কেননা, ওরা ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৭০ কেজি এবং স্ন্যাচে ১৩০ কেজি তোলে।”