চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। দেশের বাইরে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলেতে এসে ফাইনালে ওঠা টেরেঙ্গানু বাজিমাতের অপেক্ষায়। ২০১৫ সালে এ প্রতিযোগিতার প্রথম শিরোপা জেতা চট্টগ্রাম আবাহনী চার বছর পর আবারও চেনা আঙিনায় বিজয়োল্লাসে মেতে উঠতে মুখিয়ে আছে।
ফাইনাল পর্যন্ত পথচলায় দুই দলের পরিসংখ্যান দিচ্ছে জমজমাট দ্বৈরথের উত্তাপ। চার ম্যাচে ১৩ গোল দিয়েছে টেরেঙ্গানু, খেয়েছে ৭টি। চট্টগ্রাম আবাহনী দিয়েছে ১১টি, হজম করেছে ৫টি।
দুই দলের আক্রমণভাগও দিচ্ছে জমাট লড়াইয়ের আভাস। টানা দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা লি টাক ও চার গোল দেওয়া ব্রুনো সুজুকি জুটির সামর্থ্য আছে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার। কম যায় না চট্টগ্রাম আবাহনীর আক্রমণভাগও। চার গোল করা চিনেডু ম্যাথিউ, তিন গোল করা চার্লস দিদিয়েরের সঙ্গে মলিনতা কাটিয়ে লুকা রতকোভিচ (২টি) জ্বলে উঠলে চট্টগ্রাম আবাহনীও ফিরে পেতে পারে মুকুট।
চট্টগ্রাম আবাহনী কোচ মারুফুল হকের মতে অবশ্য মাঝমাঠের লাগাম যার মুঠোয়, ম্যাচও থাকবে তার নিয়ন্ত্রণে। মানিক হোসেন মোল্লা হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে সফল হওয়ায় জামাল ভূইয়াকে সেমি-ফাইনালে একটু ওপরে খেলিয়েছেন তিনি। জামাল-মানিক জুটিকে দিয়ে লি টাক-ব্রুনোর তাল কেঁটে দেওয়ার ছক কষছেন মারুফুল।
“ওরা মাঝমাঠ সবসময় নিয়ন্ত্রণ করে এবং সেখান থেকে ফরোয়ার্ডরা ধীরে ধীরে লিংক-আপ খেলার জন্য সামনে চলে আসে আর পেছনে একটা স্পেস রেখে আসে। লি টাক ও আরেকজন মিডফিল্ডার বলের জোগান দেয়। ব্রুনো ও শাইফিক আক্রমণ করে।”
“আমরাও দ্রুত আক্রমণ পছন্দ করি। বল নিজেদের অর্ধে পেলে সেখান থেকে দ্রুত আক্রমণে যাই। বিল্ডআপ খেলাটা নিজেদের অর্ধ্ব থেকে শুরু করি। মধ্যমাঠকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। লুকাকে ওরা মার্ক করবে। ফলে আমাদের অন্য ফরোয়ার্ডদের গোলের সুযোগ বেশি থাকবে।”
আবাহনী লিমিটেডের হয়ে এদেশের ঘরোয়া ফুটবল মাতিয়ে যাওয়া লি টাক এবারের ফাইনালে প্রতিপক্ষ শিবিরের দলনায়ক। চট্টগ্রাম থেকে শিরোপা নিয়ে ফিরতে প্রত্যয়ী এই ইংলিশ মিডফিল্ডার সতীর্থদের সতর্ক করছেন প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগ নিয়ে।
ফাইনালে গ্যালারির দর্শকেরও ভূমিকা থাকবে। চট্টগ্রাম আবাহনীর অধিনায়ক জামাল ভূইয়া জানালেন ভরা গ্যালারির সামনে খেলতে তারা এখন আর চাপ অনুভব করেন না। দলের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন উপভোগের মন্ত্র।
“আমাদের খেলোয়াড়রা এত দর্শকের সামনে খেলতে অভ্যস্ত নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা সেটা করতে পেরেছি। ফাইনালের একটা চাপ থাকবে। কিন্তু ছেলেদের বলেছি, এই চাপ, এত দর্শককে উপভোগ করে খেলতে।তাহলে আমাদের সাফল্য আসবে।”
টেরেঙ্গানু অধিনায়ক লি টাকের মনে হচ্ছে দর্শকের চাপটা থাকবে জামালদের ওপরই।
“বাংলাদেশের ফুটবলারদের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা আমার আছে।আমরা দর্শকের সামনে খেলতে অভ্যস্ত। বরং হোম ক্রাউডের কারণে চাপে থাকবে তারা।”