বিদেশি ফরোয়ার্ডদের দাপট, ধুঁকছে দেশিরা

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের এবারের আসরে আট দলের মধ্যে দুটি বাংলাদেশের। পারফরম্যান্সের পাল্লায় চট্টগ্রাম আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস দুই মেরুর বাসিন্দা। ভারতের দল তিনটি মোহনবাগান, গোকুলাম কেরালা ও চেন্নাই সিটি। গোকুলামের উজ্জ্বলতা যতখানি, আই লিগের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই ততটাই মলিন। গ্রুপ পর্ব শেষে দলীয় ও ব্যক্তিগত পরিসংখ্যান নিয়ে এই আয়োজন।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরচট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2019, 12:37 PM
Updated : 27 Oct 2019, 12:39 PM

এবারের আসরে দলীয় পরিসংখ্যান অদ্ভূত একটা বিষয় দেখাচ্ছে। নামের সঙ্গে ‘চ্যাম্পিয়ন’ শব্দটা কোনোভাবে সেঁটে থাকলেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়! টিসি স্পোর্টস, চেন্নাই সিটি, বসুন্ধরার ছিটকে যাওয়া যে সেটাই বলছে।

চ্যাম্পিয়ন মানে বিদায়

টিসি স্পোর্টস-শেখ কামাল ক্লাব কাপের গতবারের চ্যাম্পিয়ন। বসুন্ধরা-বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন। চেন্নাই সিটি-ভারতের আই লিগের চ্যাম্পিয়ন। এই তিন দল ছিটকে গেছে গ্রুপ থেকে! ‘বি’ গ্রুপে চার দলের মধ্যে চেন্নাই চতুর্থ, বসুন্ধরা তৃতীয় হয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে টিসি স্পোর্টস শেষে করেছে চতুর্থ হয়ে! টিসি ও চেন্নাই বিদায় নিয়েছে জয়হীন থেকে!

বাকি পাঁচ দলের সঙ্গে সেঁটে নেই চ্যাম্পিয়নের তকমা, যাদের মধ্যে চারটি উঠেছে সেমি-ফাইনালে। একমাত্র লাওসের ইয়াং এলিফ্যান্টস বিদায় নিয়েছে দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে। মোহনবাগানের সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে ছিটকে গেছে তারা।

এদিকে চট্টগ্রাম আবাহনী, ওদিকে টেরেঙ্গানু

গ্রুপ পর্বে মোট গোল হয়েছে ৪৫টি। ‘এ’ গ্রুপে সবচেয়ে বেশি গোল দিয়েছে প্রতিযোগিতাটির ২০১৫ সালের চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী (৮টি)। ‘বি’ গ্রুপে সবচেয়ে গোল দেওয়া দল টেরেঙ্গানু (৯টি)।

দুই গ্রুপ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি গোল হজম করা দলের তালিকায় যথারীতি ছিটকে যাওয়া তিন ‘চ্যাম্পিয়ন’! চেন্নাই সিটি (১০টি), বসুন্ধরা (৯টি) ও টিসি স্পোর্টস (৮টি) গোল খেয়েছে।

বিদেশি ফরোয়ার্ডদের দাপট, ধুঁকছে দেশিরা

আক্রমণভাগে আলো ছড়ানোর তালিকায় বিদেশিরা এগিয়ে। টেরেঙ্গানুর ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত জাপানী ফরোয়ার্ড ব্রুনো সুজুকি ৪ গোল নিয়ে গোলদাতাদের তালিকায় শীর্ষে। ৩টি করে গোল আছে যে পাঁচ জনের, তারাও সবাই বিদেশি-লি টাক, জালাল কুদো, হেনরি কিসেকা, সোম্যাক্সি কেয়োহানাম ও চিনেডু ম্যাথিউ। এদের মধ্যে ব্রুনো ও লি টাক করেছেন হ্যাটট্রিক।

দেশিদের মধ্যে ২ গোল আছে চট্টগ্রাম আবাহনীর অধিনায়ক জামাল ভূইয়ার, যিনি মূলত মিডফিল্ডার। গোলদাতার তালিকায় স্থানীয় ফরোয়ার্ড হিসেবে নাম আছে একমাত্র মতিন মিয়ার (১টি)। এছাড়া আছেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত (১টি)।

‘ধারেই’ চট্টগ্রাম আবাহনীর চমক

জামাল ভূইয়া, ইয়াসিন আরাফাত, রিয়াদুল ইসলাম রাফি, আরিফুর রহমান, রহমত মিয়া মাজহারুল ইসলাম হীমেল-চট্টগ্রাম আবাহনীর ধার করে আনা ফুটবলারের তালিকাটা বেশ বড়। এমনকি তাদের কোচ মারুফুল হকও ‘ধারে’ এসেছেন! কিন্তু ধারেই বাজিমাত করছে তারা! দেশের একমাত্র দল হিসেবে উঠেছে সেমি-ফাইনালে। অথচ গত লিগেও বন্দরনগরীর দলটি ১৩ দলের মধ্যে হয়েছিল অষ্টম! মজার বিষয়, প্রথম আসরেও চট্টগ্রাম আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ‘ধার’ করে আনা ফুটবলারে ভর করে।

সেখানে লিগে অভিষেক মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়ে চমকে দেওয়া বসুন্ধরা মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ করেও প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে এসে ব্যর্থ।