চার যুগের বেশি সময় পর গত ১০ অক্টোবর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইরান ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার ম্যাচটিতে মাঠে বসে খেলা দেখেন ইরানের মেয়েরা। ম্যাচটি ১৪-০ গোলে জেতে স্বাগতিকরা।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে মাঠে বসে পুরুষদের ফুটবল দেখতে পারছিলেন না দেশটির নারীরা। ওই ম্যাচ দিয়ে তাদের জন্য খুলে যায় স্টেডিয়ামের দুয়ার। তিন হাজারের বেশি নারী খেলা দেখেন তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা একটি গ্যালারিতে বসে। পতাকা শোভিত ছিল গ্যালারি। দলের রঙ লাল, সবুজ আর সাদায় সেজেছিল মেয়েরা। তেহরানে ছিল উৎসব মুখর পরিবেশ।
তবে রোববার লিগে একই স্টেডিয়ামে পেইকানের বিপক্ষে পার্সেপলিসের ২-১ গোলে জেতা ম্যাচে ছিল না মেয়েদের মাঠে ঢোকার অনুমতি। পুরো দেশেই ছিল একই চিত্র, কোথাও মেয়েদের জন্য খুলেনি স্টেডিয়ামের দুয়ার।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সেখানে পুরুষদের খেলা দেখতে নারীরা স্টেডিয়ামে যেতে পারছিলেন না। যদিও দেশটির কোনো আইনে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই বলে জানায় মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
কিছু দিন খেলা দেখার জন্যে এক নারী পুরুষের বেশে স্টেডিয়ামে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়ে যান এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচারে ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে আশঙ্কায় সাহার খোদায়ারি সেপ্টেম্বরের শুরুতে আদালত প্রাঙ্গনের বাইরে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এক সপ্তাহ পর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
সাহারের এই নির্মম মৃত্যু ইরানের ভেতর ও বাইরে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি করে। সাহারের প্রিয় দল ছিল এসতেকলাল, যাদের জার্সির রঙ নীল। সেই অনুসারে বিশ্বজুড়ে তিনি ‘ব্লু গার্ল’ নামে পরিচিতি পান। সমস্যার সমাধানে ফিফা শক্ত অবস্থান নিলে ইরান-কম্বোডিয়া ম্যাচে দেশের মেয়েদের স্টেডিয়ামে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিল দেশটির ফুটবল কর্তৃপক্ষ। সেই ম্যাচের পর আগের অবস্থানেই ফিরে গেল ইরান।