প্রথমার্ধে অদম্য জার্মানি, দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত আর্জেন্টিনা

গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতে সুযোগ পেয়ে নিজেদের মেলে ধরলেন অনিয়মিতরা। গতিময় ফুটবলে আর্জেন্টিনার রক্ষণকে চাপে ফেলে শুরুর দিকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিল জার্মানি। কোণঠাসা আর্জেন্টিনা জেগে উঠলো দ্বিতীয়ার্ধে। লুকাস আলারিও ব্যবধান কমানোর পর অভিষিক্ত লুকাস ওকামপোসের শেষ দিকের গোলে ড্রয়ের স্বস্তিতে মাঠ ছাড়লো লিওনেল স্কালোনির দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2019, 08:42 PM
Updated : 10 Oct 2019, 08:26 AM

ডর্টমুন্ডের সিগনাল ইদুনা পার্কে বুধবার রাতে সাবেক দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মধ্যে প্রীতি ম্যাচটি ২-২ ড্র হয়েছে। সের্গে জিনাব্রির গোলে জার্মানি এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেছিলেন কাই হাভার্টস।

চোটের আঘাতে জার্মানি অনেকটা দ্বিতীয় সারির দলে পরিণত হলেও তাদের প্রথমার্ধের পারফরম্যান্সে তা বোঝার উপায় ছিল না। বিপরীতে বল দখলে এগিয়ে থাকলেও আর্জেন্টিনার আক্রমণে ছিল না তেমন ধার। বিরতির পর পাল্টে যায় চিত্র; লক্ষ্যে তিনটি শট রেখে তারা দুটিতে আদায় করে নেয় গোল।  

এ মাসের শুরুতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টটেনহ্যাম হটস্পারের জালে বায়ার্ন মিউনিখের গোল উৎসবে একা চার গোল করা জিনাব্রিই আর্জেন্টিনার বুকে প্রথম আঘাত হানেন। পঞ্চদশ মিনিটে অসাধারণ নৈপুণ্যে দলকে এগিয়ে দেন এই মিডফিল্ডার।

এর আগের মিনিটেই অবশ্য এগিয়ে যেতে পারতো তারা। দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন ইউলিয়ান ব্রান্ডট। তবে গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন এই মিডফিল্ডার।

কিছুক্ষণ পরেই দলকে আনন্দে ভাসান জিনাব্রি। ডান দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়ে ডিফেন্ডারদের ঘিরে থাকা অবস্থায় এক টোকায় সামনে বাড়িয়ে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে জিনাব্রির এটি দশম গোল।

২২তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে স্বাগতিকরা। মাঝমাঠে মার্কোস রোহোর ভুলে বল ধরে লুকাস ক্লোসতামান অনেকখানি ছুটে ডান দিকে জিনাব্রিকে পাস দেন। আর তিনি বাড়ান ছোট ডি-বক্সের মুখে কাই হাভার্টসকে। অনায়াসে বাকিটা সারেন তরুণ এই মিডফিল্ডার। জাতীয় দলের হয়ে এটা তার প্রথম গোল।  

৩১তম মিনিটে ভাগ্যের জোরে তৃতীয় গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় আর্জেন্টিনা। ২৫ গজ দূর থেকে লাইপজিগের লেফট-ব্যাক মার্সেলের দারুণ ফ্রি-কিক ক্রসবারে বাধা পায়। দুই মিনিট পর অবশ্য পোস্টে বল লাগার হতাশায় ডোবে অতিথিরা। প্রায় ২৪ গজ দূর থেকে মিডফিল্ডার রদ্রিগো দে পলের অতর্কিত জোরালো শট দূরের পোস্টে লাগে।

দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে আবারও প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় জার্মানি। তবে এবার গোলরক্ষককে একা পেয়ে দুর্বল শটে সুযোগ হারান এমরে কান।

৬৬তম মিনিটে ব্যবধান কমিয়ে লড়াইয়ে ফেরে আর্জেন্টিনা। বাঁ দিক থেকে মার্কোস আকুনার ক্রস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে দারুণ হেডে বল জালে পাঠান বায়ার লেভারকুসেনের ফরোয়ার্ড লুকাস আলারিও।

চার মিনিট পর লেয়ান্দ্রো পারেদেসের দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান জার্মানির গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ব্যবধান ধরে রাখতে পারেননি বার্সেলোনার এই গোলরক্ষক।

৮৫তম মিনিটে দারুণ গোছানো আক্রমণে সমতা টানে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ডি-বক্সে আলারিওর ছোট করে বাড়ানো বল পেয়ে জায়গা বানিয়ে কোনাকুনি শট নেন সেভিয়া মিডফিল্ডার ওকামপোস। বল এমরে কানের শরীর ছুঁয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেয়।

নিষেধাজ্ঞার কারণে নেই লিওনেল মেসি। গত কোপা আমেরিকার পর থেকে দলের বাইরে আছেন আনহেল দি মারিয়া ও সের্হিও আগুয়েরো। তিন তারকার অনুপস্থিতিতে খেলতে নেমে কোণঠাসা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের সমতূল্য এক ড্রয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।