দশে ১০ তহুরা, বাকিরা ৯

বাছাইয়ের পারফরম্যান্স ছিল চোখ ধাঁধানো। প্রথম রাউন্ডে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। দ্বিতীয় রাউন্ডে রানার্সআপ। কিন্তু মেয়েদের এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বের লড়াইয়ে বিবর্ণ দল। চার দলের মধ্যে চতুর্থ হয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যায় তারা। বাছাই আর মূল পর্বের ফলের ব্যবধান আকাশ-পাতাল হলেও কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন দলের পারফরম্যান্সে খুশি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের নিরিখে ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুনকে দিচ্ছেন ১০-এ দশ।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2019, 01:51 PM
Updated : 23 Sept 2019, 01:52 PM

থাইল্যান্ডের চোনবুরিতে হওয়া বয়সভিত্তিক এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের শুরুটা স্বাগতিকদের কাছে ১-০ গোলে হেরে। পরের ম্যাচে জাপানের কাছে ৯-০ ব্যবধানে উড়ে যায় রব্বানীর দল। গ্রুপের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জয়ের আশা জাগিয়েও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে শেষ পর্যন্ত করে ২-২ ড্র। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় কোচ তুলে ধরলেন প্রতিপক্ষের সঙ্গে নিজেদের ব্যবধান। শিষ্যদের আকণ্ঠ প্রশংসার সঙ্গে করলেন কিছুটা সমালোচনাও।

‘বাস্তবতার নিরিখে ভালো পারফরম্যান্স’

বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে ২৭ গোল দিয়ে বাংলাদেশ হজম করেনি একটিও। দ্বিতীয় রাউন্ডে ১১ গোল দিয়ে খেয়েছিল মাত্র ৩টি। সেখানে মূল পর্বে ১২ গোল হজম করে দিয়েছে মাত্র ২টি!

এ পর্যন্ত হওয়া আট আসরে থাইল্যান্ড একবার তৃতীয় হয়েছে। দুইবার চতুর্থ। এবার গ্রুপ পর্ব পেরুতে না পারা থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দারুণ লড়াই করে হারে দ্বিতীয়ার্ধে একমাত্র গোল খেয়ে। জাপান বরাবরই শক্তিশালী; প্রতিযোগিতার তিনবারের চ্যাম্পিয়ন। অস্ট্রেলিয়ারও একবার চতুর্থ হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। সেখানে বাংলাদেশ এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মূল পর্বে খেলল এবং অভিজ্ঞতাও সেই একই-গতবারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়!

ম্যাচের ফলের দৃষ্টিকোণ থেকে অভিজ্ঞতা তিক্ত। কিন্তু পারফরম্যান্সের নিরিখে শিষ্যদের প্রশংসা করলেন বাংলাদেশ কোচ। ব্যর্থতায় ভরা জাপান ম্যাচকেও রব্বানী দেখছেন অন্য চোখে।

“থাইল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমরা ভালো খেলেছি কিন্তু জিততে পারিনি। জাপান অনেক শক্তিশালী দল। তাদের বিপক্ষে আমরা লড়াই করতে পারিনি; কারণ ওই ম্যাচটা নিয়ে মেয়েরা একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিল। দ্রুত কয়েকটা গোল খাওয়ার কারণে খেই হারিয়ে ফেলেছিল।”

“সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও আমরা ভালো খেলেছি। আসলে আমাদের নিয়ে প্রত্যাশা বেশি থাকে। কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা অনেকে বুঝতে চায় না।  আমাদের প্রতিপক্ষ দলগুলো ইউরোপে অনুশীলন করে। তাদের অন্যান্য সুবিধাও অনেক। তবে যে যাই বলুক, আমি খুশি মেয়েদের খেলায়।”

তহুরাকে ১০, বাকিদের ৯

অস্ট্রেলিয়ার কাছে গতবার ৩-২ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার দুই দফা এগিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে ২-২ ড্র করে দল। দুটি গোলই প্রতিআক্রমণ থেকে দারুণ দক্ষতায় করেন তহুরা।

অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ছোটখাট গড়নের কারণে মাথার ওপর দিয়ে যাওয়া বল লাফিয়ে উঠেও আটকাতে পারেননি গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। প্রতিপক্ষের প্রথম সমতায় ফেরা গোলের পেছনে কিছুটা দায় ছিল আঁখি খাতুনের। সামনে থাকা বল ক্লিয়ার করতে পারেননি নির্ভরযোগ্য এই ডিফেন্ডার। জাপান ম্যাচেও হজম করা তৃতীয় গোলটির দায় আঁখির; প্রতিপক্ষের পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন তিনিই! প্রত্যাশার শতভাগ দিতে না পারায় আঁখির সমালোচনা করলেন রব্বানী।

“তহুরা দারুণ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে। পারফরম্যান্সের জন্য আমি ওকে দশের মধ্যে দশই দিব। বাকিদের দিব ৯ করে। আর আঁখির ব্যাপারটা….আসলে সে দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার। অভিজ্ঞতা এবং শারীরিক গড়নের কারণেও তার কাছে প্রত্যাশাটা বেশি থাকে সবসময়। কিন্তু এবার সেরাটা দিতে পারেনি আঁখি। তবে ফুটবলে এমন হয়।”