সের্টোখোবসে গত বৃহস্পতিবার ব্রোঞ্জ জেতেন রোমান। এর আগে ২৪ বছর বয়সী এই আর্চার সেমি-ফাইনালে ওঠায় বাংলাদেশের একজন প্রতিযোগীর ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ নিশ্চিত হয়ে যায়।
দেশের আর্চারির ইতিহাসে সেরা সাফল্য এনে দেওয়া রোমানকে ঘিরে মঙ্গলবার শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে তৈরি হয় উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন ফেডারেশনের কর্মকর্তা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন তিনি। আর্চারি ফেডারেশনের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ ব্রোঞ্জ জেতা আর্চারকে দুই লাখ টাকার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়। আনন্দে আপ্লুত রোমানও দিলেন ধারাবাহিকতা ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি।
“কতটা খুশির বিষয় ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আসলে আমি কতটা খুশি, আপনারা নিজেরাই তা বুঝতে পারছেন। আশা করছি সামনে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।”
“বিশ্ব আর্চারিতে এটা আমার এবং দেশের প্রথম পদক। অন্য পদকগুলো তো পেয়েছি এশিয়ান পর্যায়ে। আমি মনে করি, এই পদক স্বর্ণের চেয়ে বেশি।”
র্যাঙ্কিং রাউন্ডে ৬৭৬ স্কোর করে ২০০ প্রতিযোগীর মধ্যে ২০তম হন তিনি। ব্রোঞ্জ জিততে রোমানকে একের পর এক ছিটকে দিতে হয়েছে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে।
তৃতীয় রাউন্ডে রোমানের প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২০১৬ সালের রিও দে জেনেইরো অলিম্পিকে দলগত ব্রোঞ্জ জেতা রায়ান টায়াক। চতুর্থ রাউন্ডের প্রতিপক্ষ কিম উজিন ছিল আরও শক্তিশালী। দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে গত অলিম্পিকে রিকার্ভের দলগত স্বর্ণ জেতা এই আর্চারের ঝুলিতে আছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপসে দলগত ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে চারটি স্বর্ণপদকও। র্যাঙ্কিং রাউন্ডে ৬৯৬ স্কোর গড়ে সেরা হওয়া উজিনকে ৬-৪ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠেন রোমান।
স্বাগতিক নেদারল্যান্ডসের ফন দেন বার্গকে ৬-২ ব্যবধানে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠার পর মালয়েশিয়ার মোহাম্মদ খায়রুল আনোয়ারের কাছে ৭-৩ সেট পয়েন্টে হেরে যান রোমান। এরপর ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে তিনি ৭-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দেন ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে ইতালির হয়ে দলগত স্বর্ণ জেতা নেসপোলিকে। রোমান জানালেন, এগিয়ে যেতে চান আরও বড় স্বপ্ন নিয়ে।
“একজন খেলোয়াড়ের বড় স্বপ্ন থাকে অলিম্পিকে পদক জেতা। আমারও সেই লক্ষ্য। কঠোর পরিশ্রম করছি। এর চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হবে। অলিম্পিকের আগে যে কয়টা গেম আছে, সেগুলোতে অংশ নিতে পারলে অলিম্পিকে পদক জেতা সম্ভব।”
“আমরা যতো গেম খেলব, তত অভিজ্ঞতা বাড়বে। আমি চেষ্টা করলে কেন সম্ভব নয়? ওরাও মানুষ, আমিও মানুষ। নেদারল্যান্ডসে কোচ বলেছিলেন, নিজের খেলাটা দিতে পারলে জিতবে। চেষ্টা করেছি নিজের কাজটি করার এবং সফল হয়েছি।”
রোমানকে নিয়ে আশাবাদী মার্টিন ফ্রেডারিখও। জার্মান এই কোচের চোখে তার এই শিষ্য ‘খুবই মেধাবী’ এবং পরিশ্রমী আর্চার।
“খুবই ভালো লাগছে। দলের সবাইকে নিয়ে, বিশেষ করে রোমানকে নিয়ে আমি খুশি। (অলিম্পিকের টিকেট) আমরা খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে গেছি! সে খুবই মেধাবী এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ ছেলে। সে খুবই কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমি যদি তাকে আরও ১০ মিনিট অনুশীলন করতে বলি, সে ৩০ মিনিট করে।”