মিনেরভার সঙ্গে আবাহনীর স্বস্তির ড্র

দুইবার পিছিয়ে পড়ে দুইবারই সমতায় ফিরল আবাহনী ক্রীড়া চক্র। এএএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে নিজেদের মাঠে ধারহীন ফুটবল খেলা বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নদের শেষ পর্যন্ত ওই ড্রয়ের স্বস্তিটুকুই থাকল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2019, 01:56 PM
Updated : 17 April 2019, 02:52 PM

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বুধবার এএফসি কাপের ‘ই’ গ্রুপে ভারতের চ্যাম্পিয়ন মিনেরভা পাঞ্জাবের সঙ্গে ২-২ ড্র করা আবাহনীর দুই ম্যাচের পয়েন্ট ৪। মিনেরভার পয়েন্ট ২।

শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে মিনেরভা। দ্বিতীয় মিনিটে মাহমুদ আল আমনার জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল। দ্বাদশ মিনিটে আমনার বাড়ানো ক্রসে স্যামুয়েল লাল মুয়ানপুইয়ার শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

তিন মিনিট পর রক্ষণের ভুলে এগিয়ে যায় ভারতের দলটি। মাকান উইংলের বাড়ানো ক্রস আটকানোর জন্য রক্ষণে ছিলেন না কেউ। গোলমুখ থেকে সহজেই প্লেসিং শটে জাল খুঁজে নেন অধিনায়ক আমনা।

পিছিয়ে পড়া আবাহনী ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেয়নি। অষ্টাদশ মিনিটে আফগানিস্তানের ফরোয়ার্ড মাসিহ সাইঘানির হেড অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে যাওয়ার দুই মিনিট পর সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। কেরভেন্স ফিলস বেলফোর্টের বাড়ানো বলে নিখুঁত প্লেসিং শটে জালে জড়িয়ে দেন নাবীব নেওয়াজ জীবন।

গুছিয়ে ওঠা আবাহনীর এগিয়ে যাওয়ার দারুণ একটি সুযোগ নষ্ট হয় ২১তম মিনিটে। সতীর্থের বাড়ানো বল ধরে সানডে চিজোবা গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন। কিন্তু তার দূরের পোস্টে নেওয়া শট আটকান গোলরক্ষক। এরপর ফিরতি বলে জীবনের দুর্বল শট ফেরান এক ডিফেন্ডার।

প্রচণ্ড গরমে ৪০তম মিনিটে কুলিং ব্রেকের পর বদলি নেমেই মিনেরভাকে এগিয়ে নেন গোপালান ভালিয়াভিত্তু। সাইঘানির উদ্দেশে রায়হানের বাড়ানো দুর্বল পাস ধরে বুলেট শটে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন গোপালান।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সমতার স্বস্তি ফেরে আবাহনী শিবিরে। বাঁ দিক থেকে ওয়ালী ফয়সালের কর্নার বাঁক খেয়ে ক্রসবারে লেগে ফেরার পর ডি-বক্সের জটলার মধ্যে থেকে দ্রুত টোকায় জাল খুঁজে নেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড চিজোবা।

দ্বিতীয়ার্ধেও আবাহনীর খেলায় চেনা ছন্দ ফেরেনি। মিনেরভার আক্রমণ সামলে ৮০তম মিনিটে চিজোবার বাড়ানো বলে জীবনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে নিজেদের মাঠে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয় বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নদের।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেপালের চ্যাম্পিয়ন মানাং মার্সিয়াংদিকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল আবাহনী। চেন্নাইন এফসির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে এ প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল মিনেরভা।

ম্যাচ শেষে ড্র নিয়ে স্বস্তির কথা জানান আবাহনী কোচ লেমোস।

“এটা আনন্দদায়ী ম্যাচ ছিল। তবে আমি একটু হতাশ; কেননা আমরা জিততে চেয়েছিলাম। ম্যাচের আগেই বলেছিলাম গোল খাওয়া যাবে না। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দুইবার পিছিয়ে পড়ার পর দল সমতায় ফিরেছে। ছেলেদের নিয়ে আমি গর্বিত। কেননা যখনই তারা পিছিয়ে পড়েছে, তখনই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।”

“আমরা কিছু ভুল করেছি। এই পর্যায়ে ‍ভুল করলে তার মাশুল দিতে হয়। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা বদলে গিয়েছিলাম। গোলের সুযোগও পেয়েছিলাম কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। তবে ড্রটা ভালো। কেননা হারলে গ্রুপপর্ব আমাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে যেত।”

প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে ১ পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পেরে খুশি মিনেরভা কোচ শচিন বারদে।

“তিন পয়েন্ট পেতে পারতাম কিন্তু তা না পেলেও এক পয়েন্ট পেয়ে খুশি। কেননা, এটা আমাদের জন্য অ্যাওয়ে ম্যাচ। দুই দলই ভালো খেলেছে। এখনও অনেক ম্যাচ বাকি আছে এবং আমি মনে করি, আমাদের পরের রাউন্ডে যাওয়ার আশা আছে।”