‘ডিফেন্ডারদের ভুলে’ হেরেছে বাংলাদেশ

পঞ্চম মিনিটে আত্মঘাতী গোল করলেন মাসুরা পারভীন। দ্বিতীয় গোল হজম মাসুরা-রুপনা চাকমার বোঝাপড়ার ঘাটতিতে। তৃতীয় গোলটি মাঞ্জালী কুমারী করলেন আঁখি খাতুনকে বোকা বানিয়ে। নেপালের কাছে হারের পর বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন তাই দায় দিলেন ডিফেন্ডারদের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকনেপালের বিরাটনগর থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2019, 02:25 PM
Updated : 17 March 2019, 12:26 PM

নেপালের বিরাটনগরের শহীদ রঙ্গসালা স্টেডিয়ামে শনিবার মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ‘এ’ গ্রুপের সেরা হওয়ার লড়াইয়ে স্বাগতিকদের কাছে ৩-০ গোলে হারে বাংলাদেশ। সিনিয়র পর্যায়ের লড়াইয়ে এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো নেপালের কাছে হারল দল; বেরিয়ে আসতে পারল না ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে।

জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নেমে বড় হারের পর রব্বানী ডিফেন্ডারদের দায় দিলেও মাসুরা-আঁখিরা অনেক কিছু শিখেছেন বলে মনে করেন।

“গত কালকেও বলেছি নেপাল আমাদের চেয়ে সবদিক থেকে এগিয়ে। ওদের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। তাছাড়া তাদের মাঠে এবং স্থানীয় দর্শকের সামনে খেলা বলে তারা এগিয়ে থাকবে। এ ম্যাচ জিততে আমাদের শতভাগের বেশি দিতে হবে এবং সবচেয়ে বড় কথা এ ম্যাচে ছোটখাট ভুলও করা যাবে না। কিন্তু আপনারা দেখেছেন পঞ্চম মিনিটে মাসুরার ভুলে গোল হলো। এ রকম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে পাঁচ মিনিটে গোল খেলে খেলা থেকে পিছিয়ে যেতে হয়।”

“দ্বিতীয় গোলও মাসুরা-রুপনার ভুলে হয়েছে। তৃতীয় গোলটি হয়েছে আঁখির ভুলে। নেপাল কিন্তু ওভাবে কিছু করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে মেয়েরা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। ৯০ মিনিট তারা খেলার মধ্যে ছিল-এটা একটা ভালো দিক। এটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল। প্রতিকূলতা থেকে মেয়েদের শেখার অনেক কিছু আছে এবং আমি মনে করি তারা অনেক কিছু শিখেছেও।”

“মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাইয়ে ভারত ও নেপালের সঙ্গে ম্যান মার্কিং করে খেলেছিল মেয়েরা। সেখানে নেপালের সঙ্গে আমরা ড্র করতে পেরেছিলাম; কারণ ওই ম্যাচে মেয়েরা ভুল করেনি। কিন্তু এ ম্যাচে যদি মাসুরা রুপনাকে বলত লিভ ইট বা রুপনা মাসুরাকে ছেড়ে দিতে বলত তাহলে কিন্তু গোল নাও হতে পারত।”

গত নভেম্বরে অলিম্পিক বাছাইয়ে পিছিয়ে পড়ে নেপালের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছিল বাংলাদেশ। মিয়ানমারের সেই পারফরম্যান্স মেয়েরা বিরাটনগরে টেনে আনতে পারেনি বলে হতাশ রব্বানী।

“রক্ষণ নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। নেপালকে নিয়ে যে তথ্য, যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল মেয়েদের, তারা তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। শিউলি আজিমকে দেওয়া হয়েছিল ম্যান মার্কিংয়ের দায়িত্ব কিন্তু সে তা পারেনি।”

কোচের পাশে বলে মাশুরাও দিলেন ভুলের স্বীকারোক্তি। জানালেন নেপাল ম্যাচের ভুল থেকে শেখার কথাও।

“আমরা মোটেও নার্ভাস ছিলাম না। আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করেছি। কিছু কিছু ভুল করেছি। ওই সময় যদি রুপনা আমরা সঙ্গে কথা বলত তাহলে হয়ত গোলটা হতো না। কিন্তু এ ম্যাচ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি।”

“যে কোনো ম্যাচে প্রথম ম্যাচে পাঁচ মিনিটে গোল খেলে পিছিয়ে যেতে হয়। তারপরও আমরা মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। ভুল হলেও পরে শতভাগ দিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি। নেপালের খেলোয়াড়দের বয়স বেশি, অভিজ্ঞতা বেশি। শারীরিক গঠনেও ওরা আমাদের ভালো। হতে পারে এসব কারণে আমাদের ভুলগুলো হয়েছে।”

দাপুটে জয়ে সেরা চারে ওঠা নেপাল কোচ হরি খাড়কা দ্বিতীয়ার্ধে আঁখি-মাসুরাদের খেলার প্রশংসা করতে ভোলেননি। তার কথায়ও উঠে এলো মিয়ানমারের সেই ড্র।

“আমাদের লক্ষ্য ছিল শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে গোল করা এবং আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলে গোল পেয়েছি। পুরোটা ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ভালো খেলেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এ কারণে আমরা গোল বাড়িয়ে নিতে পারিনি।”

“অলিম্পিক বাছাইয়েও আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছি কিন্তু সে সময় আমার পরিকল্পনা কাজ করেনি। এবার করেছে। মিয়ানমারে ওরা রক্ষণ জমাট রেখে খেলেছিল। তবে সব কৃতিত্ব মেয়েদের। ওই ম্যাচের পর মেয়েরা অনেক পরিশ্রম করেছে। ”