‘আরও গোল হওয়া উচিত ছিল’

ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজার পর সাবিনা-মৌসুমীরা কেউ নেচে উঠলেন না জয়ের আনন্দে। প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাত মেলানোর সৌজন্যতাটুকু সারার পর উৎসবহীনভাবে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ দল! ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, সহ-অধিনায়ক মিশরাত জাহান মৌসুমী যদিও বললেন জিতে খুশি তারা। কিন্তু ‘প্রত্যাশিত গোল’ না পাওয়ার হতাশা আড়াল করতে পারেননি দুজনের কেউই।

ক্রীড়া প্রতিবেদক নেপালের বিরাটনগর থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2019, 01:57 PM
Updated : 14 March 2019, 01:57 PM

নেপালের বিরাটনগরের শহীদ রঙ্গসালা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। আগামী শনিবার ‘এ’ গ্রুপের সেরা হওয়ার লড়াইয়ে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে দল।

ভুটানকে বাংলাদেশের চেয়ে এক গোল বেশি দেওয়া নেপাল গ্রুপ সেরা হওয়ার লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে। ম্যাচ ড্র হলেও গ্রুপ সেরা হবে তারা। অন্যদিকে বাংলাদেশের সামনে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই।

সাফের চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ধরে নিয়ে সেমি-ফাইনালে তাদেরকে এড়ানোর জন্য ভুটানকে বেশি গোল দেওয়ার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের। সেটা পূরণ হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে তাই গোলসংখ্যা প্রত্যাশিত না হওয়ার কথা বললেন রব্বানীও।

“আমাদের আজ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল। জয়লাভ করার দরকার ছিল এবং জয়লাভ করেছি; সেমি-ফাইনালে উঠেছি। মেয়েরা ৯০ মিনিটই সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলার চেষ্টা করেছে এবং আমি মনে করি, পুরো ম্যাচ আধিপত্য করেছি আমরা। ভুটান মোটামুটি ডিফেন্ডিংয়ের মধ্যে ছিল। বলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপরি আমাদের ছিল। জেতার জন্য আমি মেয়েদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

“আমি আগেও বলেছি মেয়েরা সুযোগ তৈরি করেছে, গোল আরও হতে পারত। মেয়েদের খেলায় আমি খুশি। দুই গোলে আমি খুশি কিন্তু গোল আরও হতে পারত। মেয়েরাও ওই জন্যই (বেশি গোলের) খেলেছে। চেষ্টা করেছে।  খন যেটা হয়নি, সেটা নিয়ে তো আর বলে কোনো লাভ নেই।”

গোলশূন্য প্রথমার্ধে তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে মৌসুমী দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর শেষ দিকে একক প্রচেষ্টার গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাবিনা খাতুন।

জয় পেলেও মাঝমাঠে হাঁটুর চোটে ভোগা কৃষ্ণা রানী সরকারের অভাব ঠিকই টের পেয়েছে দল। কৃষ্ণার শূন্যতা সানজিদা খাতুন পূরণ করতে পারেননি বলে মনে করেন কোচও।

“অবশ্যই (কৃষ্ণার অভাব অনুভূত হয়েছে)। কৃষ্ণা অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। অনেক দিন ধরে জাতীয় দলে নিয়মিত খেলছে।  আমার মনে হয় এ ম্যাচে কৃষ্ণা থাকলে আরও ভালো হত। আশা করি পরের ম্যাচে ওকে আমরা পাব।”

প্রথমার্ধে গোল না পেলেও চাপ অনুভব করেননি বলেও জানালেন রব্বানী। দলকে দ্বিতীয়ার্ধে মনোযোগ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে জানালেন তিনি।

“বার্তা ছিল বরারের মতোই। আমরা যদি ম্যাচের মধ্যে থাকতে পারি তাহলে গোল আসবে। প্রথমার্ধে মেয়েরা যে খেলাটা খেলেছে...ভালো খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধেও এই খেলাটা ধরে রাখতে হবে, তাহলে গোল আসবে। সেটা মেয়েরা অব্যাহত রাখতে পেরেছে এবং গোলও এসেছে। ”

ভুটান কোচ সুং জেয়া লি বাংলাদেশের প্রশংসা করলেও শারীরিক সামর্থ্যের দিক থেকে নেপালকে এগিয়ে রাখার কথা জানালেন সংবাদ সম্মেলনে।

“ম্যাচটা কঠিন ছিল। আগের ম্যাচের হারের পর আমাদের লক্ষ্য ছিল রক্ষণ সামলে আক্রমণে যাওয়ার। কিন্তু বাংলাদেশ ভালো দল। তারা আমাদের খুব বেশি সুযোগ দেয়নি।”

“(বাংলাদেশ-নেপাল) দুই দলই ভালো। নেপালকে মনে হয়েছে তারা শারীরীকভাবে শক্তিশালী। তাদের গতি বেশি। তবে স্কিলে আমার মনে হয়েছে দুটি দল সমান।”