টানা পাঁচ সাফে খেলার রোমাঞ্চ সাবিনার

মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের পথচলা যতদিনের, ঠিক ততদিনের পথচলা সাবিনা খাতুনেরও! পঞ্চম আসরে খেলতে নামার অপেক্ষায় থাকা ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড তাই অনুভব করছেন বাড়তি রোমাঞ্চ। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন অভিজ্ঞতার ডালা মেলে ধরে দলকে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দেওয়ার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিরাটনগর থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2019, 01:01 PM
Updated : 13 March 2019, 04:13 PM

নেপালের বিরাটনগরের শাহিদ রাংসালা স্টেডিয়ামে আগামী বৃহস্পতিবার ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভুটানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচ জিতলে সেমি-ফাইনালে উঠবে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল।

সেই ২০১০ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে বাংলাদেশের সঙ্গে শুরু সাবিনার পথচলা। গত চার আসরে দলের অনেক ভাঙা-গড়া, সাইনু প্রু মারমা-মাইনু প্রু মারমাদের মতো সতীর্থদের সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাওয়া, কৃষ্ণা-মারিয়া-মনিকাদের উঠে আসা দেখেছেন তিনি।

সাফে বাংলাদেশের পাওয়া না-পাওয়ার সবকিছুর সঙ্গেই ছিলেন সাবিনা। প্রথম আসরে সেমি-ফাইনাল খেলার পর পরের দুই আসরের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার বিষাদের সঙ্গী তিনি। ২০১৬ সালে ভারতের শিলিগুঁড়ি-গুয়াহাটির প্রতিযোগিতায় দলের প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠাতেও দারুণ ভূমিকা ছিল সাবিনার। গোল করেছিলেন ৬টি, যার চারটিই আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের পাওয়া ৬-০ গোলে জেতা ম্যাচে।

দেশের প্রথম মহিলা ফুটবলার হিসেবে মালদ্বীপের লিগে খেলেছেন। আলো ছড়িয়েছেন ভারতের লিগে সেথু এফসির হয়ে। সাবিনা এবার মুখিয়ে রাংসালায় রঙ ছড়াতে। অধিনায়ক হিসেবে দলের কাছে জানিয়ে রেখেছেন চাওয়াটাও।

“আমি প্রথম সাফ থেকেই আছি। আমি মনে করি সাফ নিয়ে আমার নিজের যে অভিজ্ঞতা, এটা আমার জন্য অনেক ইতিবাচক ব্যাপার। ভারতের বিপক্ষে দীর্ঘদিন খেলার অভিজ্ঞতা আমার আছে। নেপালের সঙ্গেও আছে। আসলে ভারত-নেপাল দলে যারা দীর্ঘদিন খেলছে তাদেরকে আমি চিনি।  এবারও চেষ্টা করব শতভাগ দিয়ে খেলার।”

“সেমি-ফাইনালে ওঠার জন্য আমাদের ভুটানের বিপক্ষে জিততে হবে। মোটামুটি মানসিকভাবে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে আছি। যেকোনো মূল্যে জিততে হবে আমাদের।”

ছবি: মোহাম্মদ জুবায়ের

সাফে ভুটানের কাছে কখনই হারেনি বাংলাদেশ। দুই মুখোমুখিতে দলের জয় ৯-০ এবং ১-০ গোলের।  তবে ভুটানকে মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছেন না সাবিনা।

“অবশ্যই বয়সভিত্তিকের চেয়ে ভুটানের জাতীয় দল ভালো।  ওরাও কিন্ত ‍নেপালের সঙ্গে ভালো খেলেছে। যাদের বিপক্ষে খেলা তাদের তো আর সহজ ভাবা যাবে না। তাদেরকে শক্ত প্রতিপক্ষই ভাবতে হবে।”

ভারতের কাছে ৩-১ গোলে হেরে গতবার শিরোপা স্বপ্ন গুঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের; সাবিনারও। এবার সেরা চারেই তাদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।  ভারতকে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ধরে নিয়ে কোচের মতো সাবিনাও ছক কষছেন ‘এ’ গ্রুপের সেরা হয়ে শিরোপাধারীদের সেমি-ফাইনালে এড়ানোর।

“অবশ্যই কোচের পরিকল্পনায় এ নিয়ে কিছু না কিছু তো আছেই। কিন্তু আমাদের মূখ্য বিষয় হলো আগে ভুটান ম্যাচে জিততে হবে। আমাদেরও গোল পার্থক্যের বিষয়টা মাথায় আছে…ভারতকে এড়ানোর বিষয়টিও মাথায় আছে। আমরা চেষ্টা করব আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে আমরা যেন ভালো ফিনিশিং দিতে পারি।”

গতবার সাবিনার সঙ্গে আক্রমণভাগে আলো ছড়িয়েছিলেন সিরাত জাহান স্বপ্নাও; ৫ গোল করেছিলেন তিনি। এবারও এই জুটির দিকে তাকিয়ে থাকবে দল। লক্ষ্য পূরণে স্বপ্নার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার ঘোষণা সাবিনার।

“আমরা চেষ্টা করব… আমরা আমাদের কাজটা সম্পন্ন করার জন্য শতভাগ দায়িত্ববান থাকব। যেহেতু আমরা স্ট্রাইকার, তো দলও আমাদের ওপর অনেক আশাবাদী যে আমরা আমাদের সেরাটা দিতে পারলে ভুটানকে ভালো ব্যবধানে হারাতে পারব। ”