আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে শুরু হবে ‘বি’ গ্রুপের মূল পর্বের লড়াই। উদ্বোধনী দিনেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফিলিপিন্সের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। ১ মার্চে মারিয়া-আঁখিদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক মিয়ানমার; বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে ৩ মার্চের প্রতিপক্ষ গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল চীন।
প্রথম পর্বে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে প্রতিপক্ষের জালে চীন গোল দিয়েছিল ৫৪টি; খায়নি একটিও। ‘ই’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন মিয়ানমার ১৯ গোল দিয়ে খায় ২টি; রানার্সআপ ফিলিপিন্স ৬টি দিয়ে ৫টি খেয়েছিল। ‘এফ’ গ্রুপের সেরা হওয়ার পথে বাংলাদেশ দেয় ২৭ গোল; খায়নি একটিও।
প্রথম পর্বের গোলের পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকা চীনকে শক্তিশালী মানছেন রব্বানী। গত বছর নভেম্বরে অলিম্পিক বাছাইয়ে জাতীয় দলের লড়াইয়ে মিয়ানমারের কাছে ৫-০ গোলে হেরে যাওয়ায় স্বাগতিকদের বয়সভিত্তিক দলটিকেও তিনি নিচ্ছেন না হালকাভাবে।
“চীন বিশ্বমানের দল। মিয়ানমার, ফিলিপিন্সও শক্তিশালী। তবে আমরা প্রতিটি খেলায় জয়ের জন্য নামব; আমরাও এখন শক্তিশালী দল। আমার বিশ্বাস, মেয়েরা তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে লক্ষ্য পূরণ হবে।”
বাছাইয়ের প্রথম পর্বে ৬ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ, চীন, লাওস, অস্ট্রেলিয়া, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড। সেরা দুই রানার্সআপ ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্স। তবে থাইল্যান্ড স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি মূল পর্ব খেলবে বলে তাদের বদলে ওই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সুযোগ মিলেছে ইরানের। এএফসির এবারের নিয়ম অনুযায়ী এই আট দল নিয়ে দুই গ্রুপে হবে দ্বিতীয় রাউন্ড। দুই গ্রুপের থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল পাবে থাইল্যান্ডের মূল পর্বের টিকেট।
গতবার বাছাইয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড ছিল না। প্রথম পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। অবশ্য থাইল্যান্ডে গিয়ে মূল পর্বে মেলেনি প্রত্যাশিত সাফল্য। দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে তলানিতে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করেছিল দল।
২০১৭ সালের ওই আসরে গ্রুপের শেষ ম্যাচে লড়াই করে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩-২ ব্যবধানে হেরে যাওয়া ম্যাচ থেকেও এবার অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন রব্বানী।
“গতবার মূল পর্বের শেষ ম্যাচে হারলেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ খেলেছিল মেয়েরা। ওই ম্যাচের পর দল অনেক উন্নতি করেছে। শক্তিশালী হয়েছে। এবার মূল পর্বে ওঠা চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু মেয়েরা গত বছর জানুয়ারি থেকে অনুশীলন এবং প্রচুর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার মধ্যে রয়েছে। আশা করি গতবারের মতো এবারও আমরা কোয়ালিফাই করতে পারব।”
এবারের ২৩ জনের দলে গতবারের মূল পর্বে খেলা ১১ জন আছে। অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা বর্তমান দল নিয়ে লক্ষ্য পূরণে আশাবাদী।
“অনেক দিন ধরে আমরা ক্যাম্পে আছি। অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছি। এবারও চেষ্টা করব কোয়ালিফাই করার।”
সহ-অধিনায়ক আঁখি খাতুনও সুর মেলালেন অধিনায়কের সঙ্গে, “আমাদের পুরো মনোযোগ থাকবে খেলার ওপর। গতবার কোয়ালিফাই করেছিলাম। এবারও একই লক্ষ্য আমাদের।”
দলের সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ১১ জন খেলোয়াড়ও মিয়ানমারে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী মার্চে নেপালে হতে যাওয়া সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতিও একই সঙ্গে চালিয়ে নেওয়ার উদ্দেশে এ সিদ্ধান্ত বলে বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে জানান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।
“সাফের প্রস্তুতির জন্য পুরোপুরি বাফুফের অর্থায়নে এই ১১ জনকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি। একই হোটেলে থাকবে ওরাও। এএফসির বিধি-নিষেধের কারণে একই টিম বাস ও মাঠে অনুশীলন করতে পারবে না ওরা। এ জন্য আমরা আলাদা বাস, অনুশীলনের মাঠ সব ব্যবস্থা করেছি।”