৪০০ মিটারে জহিরের রেকর্ড

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪০০ মিটারে বাংলাদেশি অ্যাথলেটদের মধ্যে সেরা টাইমিং করেছেন জহির রায়হান। বিকেএসপির এই অ্যাথলেট ভেঙেছেন প্রায় ৩৩ বছরের পুরানো রেকর্ড।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2019, 02:04 PM
Updated : 25 Jan 2019, 03:12 PM

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুক্রবার ইলেক্ট্রনিক টাইমিংয়ে হওয়া ৪০০ মিটারে ৪৬ দশমিক ৮৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হন জহির।

সিউলে ১৯৮৬ সালের এশিয়ান গেমসের ৪০০ মিটারে মিলজার হোসেনের ৪৭ দশমিক ৫৫ সেকেন্ড টাইমিং ছিল বাংলাদেশি অ্যাথলেটদের মধ্যে আগের সেরা।

২০১৭ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে হওয়া ওয়ার্ল্ড অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপের ৪০০ মিটার স্প্রিন্টের হিটে ৪৮ দশমিক ০০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেমি-ফাইনালে উঠেছিলেন জহির। সেমি-ফাইনালে অবশ্য দৌড় শেষ করেছিলেন ৪৮ দশমিক ২২ সেকেন্ডে।

১৯৯৮ সালে ওয়ার্ল্ড ইয়্যুথ গেমসে ১০০ মিটারে আব্দুল্লাহ হেল কাফির সেমি-ফাইনালে ওঠার পর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের কোনো প্রতিযোগিতায় সেমি-ফাইনালে উঠার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন জহির।

দেশ ও দেশের বাইরে ট্র্যাকে আলো ছড়ানো জহির জানালেন রেকর্ড গড়ার আত্মবিশ্বাস নিয়েই নেমেছিলেন তিনি।

“ট্র্যাকে নামার আগেই মনে হয়েছে আমি রেকর্ড করতে পারব। কারণ কোচ যে বিভিন্ন ধরণের ট্রেনিং করিয়েছেন তা থেকেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম ভাল কিছু এবার সম্ভব।”

“ট্র্যাকে নামার আগে লক্ষ্য ছিল ভাল একটা শুরু করার। যেহেতু গত সামার মিটে সেরা হয়েছিলাম, সেহেতু এবার রেকর্ড ভাঙাই লক্ষ্য ছিল।”

নাইরোবির ওই প্রতিযোগিতার পর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চোখে আঘাত পেয়ে লম্বা সময়ের জন্য ট্র্যাকের বাইরে চলে যান জহির। ফিরেন গত বছরের জুলাইয়ে; সামার মিটে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। দুঃসময় থেকে শিক্ষা নেওয়া জহির জানালেন সামনের এসএ গেমসে ভালো কিছু করার আশাবাদও।

“ইনজুরির পর ফেরাটা অনেক কঠিন। যারা খেলোয়াড় আছেন…যে কোনও গেমসে হোক, তাদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা, নিজেকে সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখো, নিজের সুরক্ষা করা। কারণ ওই দুর্ঘটনাটা আমার জীবনে বড় একটা শিক্ষা।”

“পাঁচ মাস সময় আছে এসএ গেমসের। টাইমিং কমিয়ে আনা খুব কঠিন। খুব হার্ড ট্রেনিং করতে হবে। এই টাইমিং ধরে রাখলে চলবে না, আরও ভাল ট্রেনিং করে নিজেকে তৈরি করতে হবে।”

রেকর্ড হারালেও খুশি মিলজার দাবি তুললেন জহিরদের ঠিকঠাক যত্ন নেওয়ার। অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা দেওয়ার।

“দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বও অনেক এগিয়েছে। কিন্তু আমাদের অ্যাথলেটিক্স তেমনভাবে এগুতে পারেনি। আমার টাইমিং আরও আগেই ভাঙা উচিত ছিল। দেরিতে হলেও এই রেকর্ড যে জহির ভেঙেছে তাতে আমি অনেক খুশি।”

“এই ইভেন্টে দেশের কেউ যদি এসএ গেমস অথবা এশিয়ান গেমসে পদক পায় তবে আমিই সবচেয়ে বেশি খুশি হবো। এটা কিন্তু এশিয়ান স্ট্যান্ডার্ডের টাইমিং। এটা ধরে রাখতে পারলে ও এশিয়ান গেমসের ফাইনাল খেলতে পারবে। এখন দরকার নার্সিং, যেটা বিকেএসপি এবং ফেডারেশন যৌথভাবে করতে পারে।”

মেয়েদের ৪০০ মিটারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুমী আক্তার ৫৭ দশমিক ৪৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হন।

মেয়েদের শটপুটে আনসার ও ভিডিপির শ্রাবণী মল্লিক (১২ দশমিক ০৫ মিটার), ১০০ মিটার হার্ডলসে সুমিতা রানী (১৫ সেকেন্ড), লং জাম্পে নৌবাহিনীর রিংকি খাতুন (৫ দশমিক ৬৩ মিটার) ও জ্যাভলিন থ্রোয়ে সেনাবাহিনীর পাপিয়া আক্তার (৪০ দশমিক ৫৬ মিটার) সেরা হন।

ছেলেদের ৫ হাজার মিটার দৌড়ে সেনাবাহিনীর আল আমিন (১৫ মিনিট ৪৮ দশমিক ৯০ সেকেন্ড), হাইজাম্পে নৌবাহিনীর মাহফুজুর রহমান (২ মিটার), জ্যাভলিন থ্রোয়ে মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান (৬২ দশমিক ৯০ মিটার), হ্যামার থ্রোয়ে নৌবাহিনীর মাহফুজ হাসান (৪৭ দশমিক ০৮ মিটার), ১১০ মিটার হার্ডলসে সেনাবাহিনীর মির্জা হাসান (১৪ দশমিক ৮৭ সেকেন্ড) ও লং জাম্পে নৌবাহিনীর আল আমিন সেরা হন।

১০০ মিটার রিলের পুরুষ-মহিলা দুই বিভাগে নৌবাহিনী এবং ম্যারাথনে সেরা হন সেনাবাহিনীর ফিরোজ খান।

১০টি সোনা, ১৩টি রুপা ও ৫টি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে ২৮টি পদক নিয়ে দলীয়ভাবে শীর্ষে রয়েছে নৌবাহিনী।