শেখ রাসেলের দ্বিতীয় নাকি বসুন্ধরা কিংসের প্রথম

ঘরোয়া ফুটবলে নিজেদের সেরা সময়টা শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র কাটিয়েছিল ২০১২-১৩ মৌসুমে। ফেডারেশন কাপ, স্বাধীনতা কাপ ও লিগ শিরোপার স্বাদ নিয়েছিল দলটি। এরপর আর শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। অন্যদিকে নবাগত বসুন্ধরা এ মৌসুমে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালের মঞ্চে উঠেছে। ফেডারেশন কাপের রানার্সআপ হওয়া দলটির সামনে আছে প্রথম শিরোপা জয়ের হাতছানি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2018, 02:11 PM
Updated : 25 Dec 2018, 02:11 PM

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামী বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় মুখোমুখি হবে দুই দল।

এবারের স্বাধীনতা কাপে শেখ রাসেলের শুরুটা ছিল সাদামাটা। দুই ড্রয়ে গ্রুপ পর্ব পেরুনো সাইফুল বারী টিটুর দল অবশ্য পরের দুই ধাপ পেরিয়েছিল দাপটের সঙ্গে। কোয়ার্টার-ফাইনালে গতবারের রানার্সআপ চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-০ গোলে হারানোর পর সেরা চারে একই ব্যবধানে জিতেছিল ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে। কোচ টিটুরও মনে হচ্ছে গুছিয়ে উঠেছে তার দল।

“আমাদের শুরুটা কঠিন ছিল। কঠিন একটা গ্রুপে ছিলাম। শক্ত দুটি দলের বিপক্ষে খেলতে হয়েছে। সেটা অবশ্য ভাল হয়েছে আমাদের জন্য। দল ম্যাচ বাই ম্যাচ উন্নতি করেছে। এর সব কৃতিত্ব ছেলেদের।”

একটি করে জয় ও ড্রয়ে গ্রুপ সেরা হওয়া বসুন্ধরা কিংস পরের দুই ধাপ পার হয় টাইব্রেকারে বাজিমাত করে। কোয়ার্টার-ফাইনালে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটিকে হারানোর পর সেমি-ফাইনালে শক্তিশালী আবাহনী লিমিটেডকে অস্কার ব্রুসনের দল হারায় টাইব্রেকারে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর নৈপুণ্যে।

মৌসুম শুরুর টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর কাছে হেরে যাওয়ার পর আরেকটি শিরোপা লড়াইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বসুন্ধরা কোচ ব্রুসন জানালেন প্রস্তুত তার দল।

“ফাইনালে ওঠাটা কেবল চাপ নয়, সন্তুষ্টিরও। আমরা কঠিন গ্রুপ উতরে এসেছি। যেখানে আমাদের মোকাবেলা করতে হয়েছে শক্ত প্রতিপক্ষকে। যেটা আসলে আমাদের সহায়তা করেছে। ফাইনালে আমরা চেষ্টা করব ভিন্ন মাত্রার ফুটবল খেলতে। শিরোপাটা জিততে ছেলেরা মুখিয়ে আছে।”

৩ গোল নিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা আজিজভ আলিশের, ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড আলেক্স রাফায়েল দি সিলভা, নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল ওডোইনসহ পুরো শক্তির দলই পাচ্ছে শেখ রাসেল।

কোস্টা রিকার হয়ে বিশ্বকাপ খেলা ফরোয়ার্ড দেনিয়েল কলিনদ্রেস সোলেরাকে পেলেও কিরগিজস্তানের হয়ে খেলতে যাওয়া বখতিয়ার দুইশবেকভ মঙ্গলবার রাতে ফিরবেন বলে তার খেলা নিয়ে অনিশ্চিত বসুন্ধরা কোচ ব্রুসন।

দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে বসুন্ধরা। প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ মিলিয়ে খেলা তিন ম্যাচে বসুন্ধরার জয় দুটি। একটি ড্র। তবে বসুন্ধরা কোচ প্রতিপক্ষকে মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছেন না।

“শেখ রাসেলের রয়েছে একটি শক্তিশালী ও নিরেট রক্ষণভাগ। মাঝ মাঠটাও গোছালো। আর রয়েছে ভাল মানের আক্রমণত্রয়ী। তবে আমাদের ভাবনায় শুধু রাসেল নয়, আমরা নিজেদের খেলা নিয়েও ভাবছি।”

“ফাইনালের আগে আমি কিছুই উদযাপন করছি না। আসলে আমার উদযাপন শুরু হবে ২৭ ডিসেম্বর থেকে। তখনই আমি ভাববো কিভাবে ক্রিসমাস, নতুন বছর উদযাপন করবো।”

২০১৩ সালের পর স্বাধীনতা কাপের দ্বিতীয় শিরোপা জেতার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে দলের মধ্যে বাড়তি একটা চাওয়াও কাজ করছে বলে জানান কোচ টিটু।

“ফাইনালটা জেতার জন্য, শুধু ওঠার জন্য নয়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে একটা ট্র্যাজেডি ঘটেছিল। আমাদের ফুটবলার সোহেল রানা সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী এবং সন্তানকে হারায়। দুদিন আগে সে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছে। এটা আমাদের অন্যভাবে উজ্জীবিত করছে।”

“আমার মনে হয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাবটা দুই দলেরই সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। ট্রফিতো কিনে নেওয়া যায় না। ট্রফি অর্জন করে নিতে হয়। লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই থামবে না- ফাইনালে এটাই আমাদের মূল মন্ত্র।”