দারুণ অর্জনের হাতছানিতে মুখোমুখি আবাহনী-বসুন্ধরা

দুই দলের সামনে দারুণ অর্জনের হাতছানি। আবাহনী লিমিটেডের সামনে এককভাবে ফেডারেশন কাপের সর্বোচ্চবারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ। প্রথমবারে খেলতে এসে বাজিমাতের সুযোগ বসুন্ধরা কিংসের। মৌসুমের প্রথম ফাইনালে অভিজ্ঞের সঙ্গে নবাগতের লড়াইটা তাই উত্তেজনার রেণু ছড়াচ্ছে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2018, 12:36 PM
Updated : 22 Nov 2018, 12:36 PM

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামী শুক্রবার বেলা সাড়ে ৪টায় মুখোমুখি হবে ‍দুই দল। ১০টি করে শিরোপা নিয়ে মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের সঙ্গে ফেডারেশন কাপে যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছে আবাহনী।

বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে সেরা হয়ে ঘরোয়া ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে আসা বসুন্ধরা শক্তিশালী দল গড়ে দলবদলের সময়ই চমকে দিয়েছিল। ফেডারেশন কাপে শুরুটাও করেছিল মোহামেডানকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ফাইনালে আসার পথে সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে হারায় দলটি।

এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৩ গোল দিয়ে বসুন্ধরা খেয়েছে ৫টি। ৫ ম্যাচে ৩ জয় ও দুই ড্র। অপরাজিত থেকে শিরোপা মঞ্চে এসে দলীয় স্লোগানই সংবাদ সম্মেলনে শোনালেন সহকারী কোচ আবু ফয়সাল আহমেদ।

“বসুন্ধরা কিংসের একটাই স্লোগান-, সেটা হলো বর্ন টু বিট। আমাদের লক্ষ্যই চ্যাম্পিয়ন হব। গ্রুপ পর্বে দুটি ম্যাচে সমস্যা হলেও আমরা এখন ফাইনালে উঠেছি। ভালো খেলে আবাহনীর মতো জায়ান্টকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।”

গ্রুপ পর্বে আবাহনীর শুরুটা ছিল সাদামাটা। একটি করে জয়-হারে গ্রুপ রানার্সআপ হওয়া দলটি পরে নিজেদের গুছিয়ে নেয় অনেকটা। সেরা আটে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩-২ ব্যবধানে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে হারানোর পর সেমি-ফাইনালে সানডে চিজোবার হ্যাটট্রিকে শেখ জামালকে হারায় ৪-২ গোলে।  এ পর্যন্ত ৮ গোল দিয়ে ৫টি খেয়েছে আবাহনী। ৪ ম্যাচে ৩ জয় ও এক হার। কোচ জাকারিয়া বাবু অবশ্য গত দুই ম্যাচের নৈপুণ্য চাইছেন শিষ্যদের কাছে।

“ফাইনালের জন্য আমরা প্রস্তুত। স্বাভাবিক নিয়মে আবাহনী আবাহনীর জায়গায় চলে এসেছে। আশা করি গত দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে চ্যাম্পিয়ন হতে পারব।”

অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে থাকলেও শক্তির পাল্লায় ‍দুই দল প্রায় সমানে সমান। রক্ষণে আবাহনীর নির্ভরতা দেশি খেলোয়াড়ে; ওয়ালী ফয়সাল, তপু বর্মনের মতো অভিজ্ঞদের সঙ্গে আছেন রায়হান হাসান, টুটুল হোসেন বাদশা। অভিজ্ঞ নাসিরউদ্দিন চৌধূরী, সুশান্ত ত্রিপুরার সঙ্গে স্পেনের হোর্হে গতোর ব্লাস যোগ হওয়ার বসুন্ধরার রক্ষণও শক্তিশালী।

মাশুক মিয়া জনির সঙ্গে কোস্টা রিকার হয়ে বিশ্বকাপ খেলা দেনিয়েল কলিনদ্রেস সোলেরার বোঝাপাড়া দারুণ। এ দুজনের সঙ্গে কিরগিজস্তানের বখতিয়ায় দুইশবেকভ ও ব্রাজিলের মার্কোস সিলভার উপস্থিতিতে মাঝমাঠ নিয়ে অনেকটাই নির্ভার বসুন্ধরা। সোলেরা দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেও ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ ছিলেন সেরা চারের বাঁধা পেরুনোর নায়ক।

এদিকে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড চিজোবার সঙ্গে আফগানিস্তানের মাসিহ সাইঘানি ও হাইতির কেরভেন্স ফিলস বেলফোর্টে সাজানো আবাহনীর আক্রমণভাগও ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে যেকোনো মুহূর্তে।

একটি করে হ্যাটট্রিকসহ ৪টি করে গোল নিয়ে সেরা গোলদাতা হওয়ার লড়াইয়ে থাকা সোলেরা বনাম চিজোবার দ্বৈরথের দিকেও তাকিয়ে থাকবে দুই দল। এ লড়াইয়ে আবাহনী কোচ জাকারিয়া এগিয়ে রাখছেন নিজের শিষ্যকে।

“আমি চিজোবাকে এগিয়ে রাখছি। সে তার স্বাভাবিক খেলায় ফিরে এসেছে। শেষ দুই ম্যাচে গোল পেয়েছে। আমি কাউকে হুমকি মনে করি না। জার্সি পরলে সবাই এক; কে বিশ্বকাপ খেলল আর কে খেলল না তা বড় কথা নয়।”

বসুন্ধরার ফরোয়ার্ড সবুজের চোখে এগিয়ে তার সতীর্থ, “আমি সোলেরাকে এগিয়ে রাখব। সে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়; গোল বানিয়ে দিতে পারে। এই জন্যই আমি তাকে এগিয়ে রাখব। চিজোবাও ভাল খেলোয়াড়।”