ফিনিশিং নিয়ে দুর্ভাবনা বাংলাদেশের

গত সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের তিন গোলের মধ্যে দুটি ডিফেন্ডার তপু বর্মনের; একটি ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিলের। বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে লাওসের বিপক্ষে জয়টি এসেছে মিডফিল্ডার বিপলু আহমেদের গোলে। আরও পেছনের ম্যাচে তাকালে ফরোয়ার্ডদের গোল না পাওয়ার পরিসংখ্যান বাড়তেই থাকবে। কোচ জেমি ডের তাই ফরোয়ার্ডদের ‘ফিনিশিং’ নিয়ে দুর্ভাবনা দূর হচ্ছে না মোটেও।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরসিলেট থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2018, 01:21 PM
Updated : 2 Oct 2018, 01:39 PM

লাওসের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের সেমি-ফাইনালে ওঠার সমীকরণ সহজ করে দিয়েছে অনেকটা। আগামী বুধবার ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে মুখোমুখি হবে ফিলিপিন্স ও লাওস। ম্যাচ ড্র হলে বা লাওস হারলে সেরা চারে উঠবে স্বাগতিকরা এক ম্যাচ হাতে রেখেই। অবশ্য লাওস জিতলে বাংলাদেশকে পার হতে হবে শক্তিশালী ফিলিপিন্স বাধা।

কোচের চাওয়া সমীকরণটা মিলে যাক বুধবারই। একই চাওয়া ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন, সুফিল, রবিউল হাসানদেরও। কিন্তু এই সম্ভাব্য চাওয়ার পূরণের ভাবনায় ঢাকা পড়ছে না ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতা। সামনের কঠিন পথচলা মনে রেখে কোচও তাই আত্মতুষ্টিতে ভেসে যাচ্ছেন না। তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে জীবন-সুফিলদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত গোল না পাওয়ার বিষয়টি।

“ফিনিশিংয়ের সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। মনে হয় ছেলেদের রিফ্লেক্সে সমস্যা হচ্ছে। তবে এর মধ্যে ভালো দিক হচ্ছে ফরোয়ার্ডরা সুযোগ তৈরি করতে পারছে। ফিলিপিন্সের বিপক্ষে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে তাদের। কেননা, এক ম্যাচ জিতেছি বলে আমরা তো আর সেমি-ফাইনালে উঠে যাইনি। তাই নির্ভার হওয়ার সুযোগ নেই। ফিলিপিন্সের বিপক্ষে আমাদের ভালো কিছুর মানসিকতা নিয়ে খেলতে হবে।”

“আমরা তো চাইব সেমি-ফাইনালে যেতে। যদি সেটা বুধবারই নির্ধারণ হয়ে যায় তাহলে ভালো। লাওস ড্র কিংবা হারলেই বাংলাদেশ সেমিতে চলে যাবে। সাফে তো দুই ম্যাচে জিতেও সেমি-ফাইনালে যাওয়া হলো না। বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে সেটা যেন না হয়।”

সাফে বাংলাদেশের দুই জয়ে বড় ভূমিকা তপুর। ভুটানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে প্রথম গোলটি এই ডিফেন্ডার করেছিলেন পেনাল্টি থেকে। পাকিস্তানকে হারানো ম্যাচের একমাত্র গোলদাতাও ছিলেন তিনি। কিন্তু নেপালের বিপক্ষে দলকে কেউ এনে দিতে পারেননি কাঙ্ক্ষিত গোল। ২-০ ব্যবধানের হারে শেষ পর্যন্ত গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার হতাশা সঙ্গী হয়েছিল দলের।

ফিনিশিং নিয়ে কোচের দুর্ভাবনার প্রসঙ্গ তুলতেই জীবন অকপেটে মেনে নিলেন নিজেদের ব্যর্থতা। লাওস ম্যাচে একাধিক সুযোগ নষ্ট করা আবাহনী লিমিটেডের এই ফরোয়ার্ড প্রতিশ্রুতি দিলেন সামনের ম্যাচে দলকে কাঙ্ক্ষিত গোল এনে দেওয়ার।

“কেউ না কেউ গোল করছে এবং সেই গোলে যদি দল জিতে তাহলে সবারই ভালো লাগে। তবে এটাও ঠিক যে কোচ ফরোয়ার্ডদের নামান গোল পাওয়ার জন্য। যখন আমরা সেটা করতে পারি না, তখন আমাদেরও ভালো লাগে না; আক্ষেপ থেকে যায়। ফরোয়ার্ডদের গোল না পাওয়াটা যে কোনো দলের জন্যও ভালো বিষয় নয় এবং এটা নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি।”

“লাওসের বিপক্ষে আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে কাজে লাগাতে পারিনি। প্রথমার্ধে আমি যে সুযোগটা গোলরক্ষকের গ্লাভসে তুলে দিয়ে নষ্ট করলাম…যদি একটু সময় নিয়ে বা শটটা একটু অন্যভাবে নিতাম, তাহলে গোল হয়ে যেত। আসলে যে কোনো টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ কঠিন এবং চাপের। তাই একটু তাড়াহুড়ো করে ফেলছিলাম আমরা। তাছাড়া ওই দিন মাঠও ভারী ছিল। যাই হোক, আশা করি পরের ম্যাচগুলোয় আমরা ফরোয়ার্ডরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারব।”