ক্রোয়েশিয়াকে উড়িয়ে দিল স্পেন

ইভান রাকিতিচের শততম ম্যাচ যত দ্রুত সম্ভব ভুলে যেতে চাইবে ক্রোয়েশিয়া। তারকা মিডফিল্ডারের মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে যে উড়ে গেছে বিশ্বকাপের রানার্সআপ দলটি। দেশের মাটিতে উয়েফা নেশন্স লিগের ম্যাচে ক্রোয়াটদের জালে গোল উৎসব করেছে স্পেন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2018, 08:40 PM
Updated : 11 Sept 2018, 10:07 PM

মঙ্গলবার রাতে ‘এ’ লিগের গ্রুপ ৪-এর ম্যাচে ৬-০ গোলে জিতেছে লুইস এনরিকের দল। নতুন কোচের অধীনে এটি স্পেনের টানা দ্বিতীয় জয়।

নিজেদের ইতিহাসে এটাই ক্রোয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় পরাজয়। এর আগে কখনও চার গোলের চেয়ে বড় ব্যবধানে হারেনি তারা। এর আগে কখনও পাঁচবারের বেশি নিজেদের জাল থেকে বল কুড়িয়ে আনতে হয়নি ক্রোয়াটদের। 

সাউল নিগেসের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর স্পেন ব্যবধান বাড়ায় মার্কো আসেনসিওর বুলেট গতির শটে। দ্বিতীয়ার্ধে লক্ষ্যভেদ করেন রদ্রিগো, সের্হিও রামোস ও ইসকো। মাঝে আত্মঘাতী গোল করে বসেন ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষক লোভরে কালিনিচ।

এলচের মাঠে ত্রয়োদশ মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। শিমে ভারসালকোর ক্রসে ৮ গজ দূর থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি স্ট্রাইকার ইভান সান্তিনি।

ষোড়শ মিনিটে নিজেদের প্রথম সুযোগ পায় স্পেন। ইসকোর দারুণ ক্রসে রদ্রিগোর ফ্লিকে তেমন কোনো জোর না থাকায় ফেরাতে সমস্যা হয়নি গোলরক্ষক কালিনিচের।

অষ্টাদশ মিনিটে দারুণ ব্লক করে স্পেনকে বাঁচান দানি কারভাহাল। মদ্রিচ থেকে ভারসালকো হয়ে বল পান ইভান পেরিসিচ। তার শট ছুটে এসে দারুণ ব্লকে ব্যর্থ করে দেন কারভাহাল।

২৪তম মিনিটে করভাহালের দারুণ ক্রসে সাউলের হেড ঠিকানা খুঁজে পেলে এগিয়ে যায় স্পেন। চার দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার দেশের হয়ে গোল পেলেন সাউল। 

৩৩তম মিনিটে দারুণ এক গোলে ব্যবধান বাড়ান আসেনসিও। ২৫ গজ দূর থেকে রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডারের বুলেট গতির শট ফেরানোর কোনো সুযোগই ছিল না ক্রোয়াট গোলরক্ষকের। দেশের হয়ে এটাই আসেনসিওর প্রথম গোল।

দুই মিনিট পর আবার আসেনসিও জাদু। গোলটি রিয়াল মিডফিল্ডারের নামে লেখা থাকবে না, তবে পুরো কৃতিত্ব তারই। বাঁ দিক থেকে আসেনসিওর বাঁকানো শট ক্রসবারের নিচে লেগে ঝাঁপিয়ে পড়া কালিনিচের পিঠ ছুঁয়ে জালে জড়ায়। আত্মঘাতী গোলে স্কোর লাইন হয়ে পড়ে ৩-০।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান বাড়ায় স্পেন। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের চতুর্থ গোলে বড় অবদান আছে সাউল ও আসেনসিওর। দারুণ ফিনিশিংয়ে এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠান রদ্রিগো।

দেশের হয়ে এটি ভালেন্সিয়া ফরোয়ার্ডের চতুর্থ গোল। তার চারটি গোলই এসেছে শুরুর একাদশে থাকা ছয় ম্যাচে।

৫৭তম মিনিটে জালের দেখা পেয়ে যান স্পেন অধিনায়ক রামোস। আসেনসিওর কর্নার থেকে অরক্ষিত ডিফেন্ডারের দারুণ হেড ঝাঁপিয়েও ঠেকাতে পারেননি কালিনিচ। 

৭০তম মিনিটে স্কোর লাইন ৬-০ করে ফেলেন ইসকো। তার গোলে বড় অবদান আছে আসেনসিওর। ক্লাব সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন রিয়াল মিডফিল্ডার।

রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেরা দল ক্রোয়েশিয়াকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি স্পেনের বিপক্ষে। নিজেদের ছায়া হয়ে ছিলেন যেন লুকা মদ্রিচ, রাকিতিচরা। ক্রোয়াটদের শক্তিশালী রক্ষণ এদিন ছিল দিশেহারা।

বিশ্বকাপের আগে হঠাৎ কোচ হুলেন লোপেতেগিকে হারানো নিশ্চিতভাবেই স্পেনের জন্য বড় একটা আঘাত হয়ে এসেছিল। ফের্নান্দো ইয়েররোর অধীনে তা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। ছিটকে যায় শেষ ষোলো থেকে। তবে এনরিকের অধীনে স্পেন ফিরেছে চেনা ছন্দে।     

টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে স্পেন। ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ার পয়েন্ট শূন্য।