শারীরিকভাবে শক্তিশালী পাকিস্তানকে সমীহ করে ছক কষছে বাংলাদেশ

শারীরিক গড়নের দিক থেকে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা শক্তিশালী মেনে নিচ্ছেন জেমি ডে। তবে শারীরিক গড়ন যে সবসময় ফুটবল ম্যাচের ফল নির্ণায়ক নয়, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ। প্রত্যয়ী কণ্ঠে জানিয়েছেন, ভুটানকে হারিয়ে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে পাওয়া শুরুর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2018, 02:05 PM
Updated : 5 Sept 2018, 02:32 PM

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। জয় দিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করায় দুই দলই আত্মবিশ্বাসে ফুটছে।

উদ্বোধনী ম্যাচে নেপালকে ২-১ গোলে হারায় পাকিস্তান। ভুটানের বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতে বাংলাদেশ।

ফিফার পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৬ বারের দেখায় দুই দলই সমবস্থানে। ছয়টি করে জয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের; বাকি চারটি ড্র। সাফের পরিসংখ্যানেও কেউ কারো চেয়ে এগিয়ে নয়। সমান দুটি করে জয় দুদলের, বাকি দুটি ড্র। অবশ্য সাফের শেষ দেখায় ২০১৩ সালে ২-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ।

নেপালের বিপক্ষে বল পজেশনে পিছিয়ে থাকলেও প্রতিআক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলে ম্যাচ বের করে নেয় পাকিস্তান। লম্বা গড়নের ডিফেন্ডারদের দিয়ে প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ডদের ডি-বক্সে সেভাবে ঢুকতেই দেয়নি তারা। জেমি ডে তাই প্রতিপক্ষের শারীরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকাটা মেনে নিলেন বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে।

"ভালো একটা দলের বিপক্ষে এটি খুব কঠিন ম্যাচ হতে যাচ্ছে। ইউরোপে খেলা কিছু ভালো ফুটবলার তাদের দলে আছে। শারীরিকভাবে তারা শক্তিশালী বলেও আমি জানি। প্রথম ম্যাচ জেতায় তারাও আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামবে। তাই ম্যাচ থেকে আমাদের কিছু পয়েন্ট পেতে হলে আমাদেরকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবল খেলতে হবে।"

"শারীরিকভাবে পাকিস্তান আমাদের চেয়ে শক্তিশালী কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তারা আমাদের চেয়ে ভালো দল। আমরা আত্মবিশ্বাসী; ছেলেরা আগামীকালের ম্যাচের জন্য মুখিয়ে আছে। ম্যাচ থেকে কিছু পেতে হলে আমাদের ভালো মানের ফুটবল খেলার দরকার হবে।"

ভুটানকে হারানো ম্যাচে কারো মারাত্মক চোট না পাওয়াটা ডের জন্য স্বস্তির। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচের একাদশ নামানোর বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত করেননি তিনি। পরিস্থিতি অনুযায়ী কৌশল সাজাবেন বলে জানালেন কোচ।

"সেরা একাদশে কোনো বদল আসবে কিনা সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। যদি আপনারা দলটাকে দেখেন, তাহলে দেখে থাকবেন গতকাল ছেলেরা কিছু হালকা চোট পেয়েছে। সেটা গুরুতর না হওয়ায় আমরা সকালে সেরা একাদশ সাজাব।"

"এটা ভিন্ন একটা ম্যাচ। নতুন ম্যাচ ঠিক করে দেয় আমরা কিভাবে খেলব। আগামীকাল ভিন্ন কৌশলে, ভিন্ন খেলোয়াড়ও খেলানো হতে পারে। তবে দলে পাঁচ-ছয় জন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, যারা জানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিভাবে খেলতে হয়। আমরা জানি, কিভাবে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয় এবং আমাদের দলেও শারীরিকভাবে শক্তিশালী খেলোয়াড় আছে।"

পাকিস্তানকে হারাতে পারলে সেমি-ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আর বৃহস্পতিবার নেপাল-ভুটানের মধ্যে অন্য ম্যাচটি ড্র হলে এবং বাংলাদেশ জিতলে সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে স্বাগতিকদের। ডের পরিকল্পনা পাকিস্তানকে হারিয়ে সমীকরণটা আরও সহজ করে নেওয়ার।

"যদি আমরা আগামীকাল জিতি তাহলে সবার আগে সেমি-ফাইনালে উঠব। তাই আমরা আগামীকাল জিততে চাই। আমাদের জিততে হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচক্ষণ হতে হবে। আমরা হারের জন্য নয়, জয়ের জন্য নামব।"

পাকিস্তান কোচ জোসে আন্তোনিও নোগেইরা নিজেদের মাঠে, চেনা দর্শকের সামনে খেলতে নামা বাংলাদেশকে সমীহ করছেন। তবে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তিন বছর পর ফুটবলে ফেরা পাকিস্তানের জন্য জয়ের প্রয়োজনীয়তাটুকু ঠিকই মনে করিয়ে দিয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান।

"স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলা অবশ্যই কঠিন। ওরা এশিয়ান গেমসে ভালো খেলেছে। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটা আমাদের জন্য শুধু সাফের দ্বিতীয় ম্যাচ নয়, এটা পাকিস্তানের ফুটবলের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।”