সোচির ফিশৎ স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে কোয়ার্টার-ফাইনালে ৩১তম মিনিটে এগিয়ে যায় রাশিয়া। আন্দ্রেই ক্রামারিচের গোলে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ১-১ সমতায় শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে দোমাগোই ভিদার গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। এরপর মারিও ফের্নান্দেস রাশিয়াকে সমতায় ফেরালে ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-৩ গোলে হেরে নিজেদের মাঠের বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় স্বাগতিকদের।
বিশ্বকাপে খেলা দলগুলোর মধ্যে ফিফার র্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে নিচে ছিল রাশিয়া কিন্তু দারুণ চমক দেখিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে সমর্থকদের প্রত্যাশা বাড়িয়েছিল দলটি। শেষ ষোলোর ম্যাচে ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে হারিয়েছিল তারা।
রাশিয়ার খেলোয়াড়দের কাছে এমন পারফরম্যান্স সম্ভবত প্রত্যাশাও করেনি দলটির সমর্থকরা। কিন্তু চেরিশেভরা আলো ঝলমলে ফুটবলে খেলে রাতারাতি জাতীয় বীর বনে যান।
ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে যাওয়ায় হতাশ রাশিয়া কোচ স্তনিস্লাভ চেরচেসভ। তবে মাথা উঁচু করে বিদায় নেওয়ার গর্বও অনুভব করছেন তিনি।
“কিভাবে আমরা বিদায় নিচ্ছি সেটাই আমাদের মূল বিষয়…যখন আপনি গর্ব অনুভব করবেন, তখন বিদায় নেওয়াটা তুলনামূলকভাবে ভালো। আমাদের বিশ্বকাপ জয়ের কোনো সুযোগ নেই এবং অবশ্যই এজন্য আমরা হতাশ। কিন্তু আমরা আমাদের সামর্থ্য দেখিয়েছি।”
“দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম মিনিট থেকে আমি এই দলটাকে ঐক্যবদ্ধ করেছি। আমি জানতাম দলটা কোন দিকে এগুচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি আমরা সফল হয়েছি কিন্তু এখন সময় আরও এগিয়ে যাওয়ার।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের আগে ও পরে তাকে ফোন করেছিলেন বলেও জানান চেরচেসভ।
“ভ্লাদিমির পুতিন আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং এই মাত্র তিনি ফোন করেছিলেন; একটা খুব ভালো ম্যাচ খেলার জন্য অভিনন্দন জানালেন। আমরা তাকে বলেছি আমরা হতাশ। তিনি বললেন আমাদের মনোযোগ ধরে রাখা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ভিতালি মুতকো জানান, তার দেশ দেখিয়েছে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে পারে। তবে ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের ফলে হতাশ হওয়ার কথাও জানান রাশিয়ার সাবেক এই ক্রীড়ামন্ত্রী।
“আমি ফল নিয়ে খুবই হতাশ কিন্তু অন্যদিকে আমি ছেলেদের নিয়ে খুবই গর্বিত।”
“তারা লড়াই করেছিল; প্রতিপক্ষও বিশ্বের দুর্বলতম দল ছিল না। আমাদের পরিণত দেখাচ্ছিল। এবং পেনাল্টি...এটা ভাগ্যের প্রশ্ন…কপাল।”
৩১তম মিনিটে দেনিস চেরিশেভের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রাশিয়া। বিশ্বকাপে চতুর্থ গোল করা এই মিডফিল্ডার জানালেন তারা শতভাগ দিয়ে লড়েছিলেন।
“আমরা চেষ্টা করেছিলাম। আমি মনে করি পুরো দল শতভাগ দিয়েছিল কিন্তু হলো না। আমি মনে করি পেনাল্টি একটা লটারি। আমরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। চার গোল করা আনন্দের কিন্তু দল যদি সামনে যেতে না পারে তাহলে সেটা অর্থহীন।”
“গোল করেছি বলে আমি খুশি কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দলকে সাহায্য করা। আমরা আজ জিততে পারিনি এবং আমি হতাশ।”