আকিনফিভ বীরত্বে শেষ আটে রাশিয়া

ম্যাচ জুড়ে অনেকবারই দলকে বাঁচিয়েছেন ইগর আকিনফিভ। রাশিয়ার গোলরক্ষক টাইব্রেকারেও ফিরিয়ে দিলেন দুটি শট। ২০১০ আসরের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে বিদায় করে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে স্বাগতিকরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2018, 01:50 PM
Updated : 1 July 2018, 05:42 PM

মস্কোতে পেনাল্টি শুটআউটে আকিনফিভের নৈপুণ্যে ৪-৩ গোলে জিতে উচ্ছ্বাসে ভাসে রাশিয়া। 

আত্মঘাতী গোলে ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। তবে বিরতির আগে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরায় স্বাগতিকরা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে সমতা থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে গোল হয়নি আকিনফিভের দৃঢ়তায়।

পুরোপুরি রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলা রাশিয়া পেনাল্টি ছাড়া ম্যাচে লক্ষ্যে রাখতে পারেনি একটি শটও। গোলের জন্য স্পেন শট নেয় ২৫টি। এর  মধ্যে লক্ষ্যে থাকা নয়টি প্রচেষ্টাই ঠেকিয়ে দেন আকিনফিভ। 

রাশিয়া যা চেয়েছিল সেটাই হয়, ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। কোকের নেওয়া তৃতীয় শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন আকিনফিভ। ইয়াগো আসপাসের পঞ্চম শট বাঁ পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন তিনি।

স্বাগতিকদের হয়ে গোল করেন ফিওদর স্মলভ, সের্গেই ইগনাশেভিচ, আলেকসান্দার গোলোভিন ও দেনিস চেরিশেভ। স্বাগতিকদের পঞ্চম শটের প্রয়োজন পড়েনি। স্পেনের হয়ে জালের দেখা পান আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জেরার্দ পিকে ও সের্হিও রামোস।

আগের ২৩ ম্যাচে অপরাজিত স্পেন যোগ হল বাদ পড়া বড় দলগুলোর মিছিলে। এরই মধ্যে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, রানার্সআপ আর্জেন্টিনা ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৭০ নম্বরে থাকা রাশিয়া টুর্নামেন্টের আগে টানা সাত ম্যাচ ছিল জয়শূন্য। এখন ফাইনাল থেকে মাত্র দুটি জয় দূরে স্বাগতিকরা।

মস্কোর লুজনিকি স্টেডিয়ামে রোববার রাশিয়া খেলে পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে। তাদের সেই রক্ষণ ভাঙার জন্য যে সৃজনশীলতা দরকার ছিল তা প্রথমার্ধে অনুপস্থিত ছিল ইসকো-দাভিদ সিলভা-দিয়েগো কস্তাদের খেলায়।

গোলের জন্য কোনো শট নেওয়ার আগেই এগিয়ে যায় স্পেন। দ্বাদশ মিনিটে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন ইগনাশেভিচ। 

ডান দিক থেকে মার্কো আসেনসিওর ফ্রি-কিক যেন রামোসকে খুঁজে না পায় সেই চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন ইগনাশেভিচ। রামোসকে নিয়ে মাটিতে পড়ার সময় অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার পায়ে লেগে জালে জড়ায় বল। কিছুই করার ছিল না রাশিয়ার গোলরক্ষক আকিনফিভের।

এবারের আসরে এটি দশম আত্মঘাতী গোল।

পায়ে অনেক বেশি সময় বল রাখলেও খুব ভালো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি স্পেন। উল্টো পিকের ভুলে ৪১তম মিনিটে সমতা ফেরায় রাশিয়া। আলেক্সান্দার সামেদভের কর্নারে হেড করতে লাফিয়ে উঠা পিকের উঁচিয়ে থাকা হাতে পেছন থেকে আর্তেম জুবার হেড লাগলে পেনাল্টির নির্দেশ দিয়েছিলেন রেফারি।

ঠাণ্ডা মাথায় ডান দিক দিয়ে বল জালে পাঠান জুবা। গোলরক্ষক দাভিদ দে হেয়া ঝাঁপিয়েছিলেন উল্টো দিকে।

৬৭তম মিনিটে সিলভার জায়গায় ইনিয়েস্তা মাঠে নামার পর বাড়ে আক্রমণের ধার। ৮৪তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডারের ভলি শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

ম্যাচে এক হাজারের বেশি পাস দেয় স্পেন। তার ৯০ শতাংশ পৌঁছায় লক্ষ্যে। কিন্তু গোলের খুব ভালো সুযোগ তৈরির মতো পাস দিতে পারেননি ফের্নান্দো ইয়েররোর শিষ্যরা।

অতিরিক্ত সময়েও জালের দেখা পায়নি কোনো দল। এবারের আসরে প্রথমবারের মতো ম্যাচ যায় টাইব্রেকারে। সেখানে অধিনায়ক আকিনফিভের বীরত্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ আটে পৌঁছায় রাশিয়া।

পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপে স্বাগতিকদের হারাতে ব্যর্থ হল স্পেন। গত আসরের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া দলটি এবার ফিরল শেষ ষোলো থেকে।