আর্জেন্টিনাকে উড়িয়ে শেষ ষোলোতে ক্রোয়েশিয়া

ঘুরে দাঁড়াতে পারল না আর্জেন্টিনা। উল্টো বড় ব্যবধানে হেরে পড়ে গেল গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কায়। দুর্দান্ত জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই শেষ ষোলোতে উঠে গেছে ক্রোয়েশিয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2018, 07:04 PM
Updated : 22 June 2018, 11:57 AM

নিজনি নভগোরোদে বৃহস্পতিবার দুইবারের চ্যাম্পিয়নদের ৩-০ গোলে হারিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। তিনটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে।

আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক উইলি কাবাইয়েরোর মারাত্মক ভুলে বল পেয়ে ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে দেন আন্তে রেবিচ। ডি-বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শটে ব্যবধান বাড়ান লুকা মদ্রিচ। আর যোগ করা সময়ে বড় জয় নিশ্চিত করেন ইভান রাকিতিচ।

প্রথমার্ধে সুযোগ তৈরি করলেও গোল পায়নি আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়ার কেউই। ওই অর্ধে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে ভালো সুযোগটি পেয়েছিলেন এনসো পেরেস। ৩১তম মিনিটে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও জালে পাঠাতে পারেননি এই মিডফিল্ডার।

পরের মিনিটে ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন মারিও মানজুকিচ। খুব কাছে থেকেও অরক্ষিত অবস্থায় থাকা এই ফরোয়ার্ড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি হেড। 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে প্রতি আক্রমণ থেকে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ আসে রেবিচের সামনে। অনেক ওপর দিয়ে মেরে দলকে হতাশ করেন এই ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে কাবাইয়েরো করেন ওই মারাত্মক ভুল। গাব্রিয়েল মের্কাদোর ব্যাকপাস ধরে আবার বাড়াতে চেয়েছিলেন তাকে। কিন্তু বল উঠল উপরে একেবারে রেবিচের কাছে। নিখুঁত ভলিতে কাবাইরোর মাথার উপর দিয়ে বল জালে পাঠালেন এই ফরোয়ার্ড।

প্রথমার্ধেও এ রকম অহেতুক ঝুঁকি নিচ্ছিলেন কাবাইয়েরো। শেষ পর্যন্ত গোল খেয়ে দিতে হলো এর মাশুল।

৬৪তম মিনিটে গনসালো হিগুয়াইনের কাটব্যাকে মাক্সিমিলিয়ানো মেসার শট ফিরিয়ে ক্রোয়েশিয়ার ত্রাতা গোলরক্ষক দানিয়েল সুবাসিচ।

৮০তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে ক্রসবার ঘেঁষে বল জালে পাঠান ক্রোয়েশিয়া অধিনায়ক মদ্রিচ। এবার কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।

ছয় মিনিট পর রাকিতিচের ফ্রি-কিকে বল ক্রসবারে লেগে ফিরলে তখন ব্যবধান বাড়েনি। তবে যোগ করা সময়ে গোলের দেখা পান বার্সেলোনায় মেসির সতীর্থ এই মিডফিল্ডার।

প্রতি আক্রমণ থেকে রাকিতিচের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক। তবে বল পেয়ে যান মাতেও কোভাচিচ। তার কাছ থেকে রাকিতিচ আবার যখন বল পান সামনে কেবল মার্কোস আকুনা। গোলের অমন সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি রাকিতিচ।

রাকিতিচ-মদ্রিচদের আলো ছড়ানোর দিনে ম্লান মেসি-আগুয়েরোরা। শুরু থেকেই আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তাদের রক্ষণভাগ। এদিন ছিল তারা আরও এলোমেলো। ক্রোয়েশিয়ার শক্তিশালী মিডফিল্ড তার পুরো সুবিধা কাজে লাগিয়ে উড়িয়ে দিল হোর্হে সাম্পাওলির শিষ্যদের। 

আর্জেন্টিনা তো বটেই বিশ্বকাপে এই প্রথম দক্ষিণ আমেরিকার কোনো দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো জিতল ক্রোয়েশিয়া।

আইসল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বিশ্বকাপ শুরু করা আর্জেন্টিনা ১৯৭৪ আসরের পর প্রথমবারের মতো নিজেদের শুরুর দুই ম্যাচে কোনো জয় পেতে ব্যর্থ হল।

২০০২ সালে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর এই প্রথম গ্রুপ পর্বে কোনো ম্যাচে হারল দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ক্রোয়েশিয়ার কাছে এই হারের পর দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার চাবি আর নিজেদের কাছে রাখতে পারল না দলটি।

আগামী মঙ্গলবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলবে আর্জেন্টিনা। একই সময়ে আইসল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া।