বার্সেলোনায় পাঁচ বছর কাটানো সাবেক পর্তুগিজ তারকা ২০০০ সালে কাম্প নউ ছেড়ে যান। এর চার বছর পর কাতালান ক্লাবটির মূল দলে অভিষেক হয় মেসির। দ্রুত নতুন চ্যালেঞ্জের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে হয়ে ওঠেন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আর গত এক দশকে মেসিই দলটির প্রাণভোমরা। অনেকের মতে, সময়ের সেরা ফুটবলার।
বার্সেলোনার জার্সিতে রেকর্ড ৩২টি শিরোপা জিতেছেন মেসি। ব্যক্তিগত অর্জনের ঝুলিতে যোগ হয়েছে পাঁচটি ব্যালন ডি’অর। আরও অনেক অনেক সাফল্য। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবলে একেবারে শূন্য।
২০০৬ সালের জার্মানিতে বিশ্বকাপ অভিষেক হয় মেসির। সেবার কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আফ্রিকায় পরের আসরেও তাদের দৌড় ছিল ওই শেষ আট পর্যন্তই।
এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ওঠে তারা; কিন্তু প্রতিবারই চিলির কাছে টাইব্রেকারে হেরে বসে।
হতাশা আর অভিমানে ২০১৬ কোপা আমেরিকায় ব্যর্থতার পর আচমকা অবসরের ঘোষণা দিয়ে বসেন মেসি। পরে সবার অনুরোধে ফিরে আসেন।
রাশিয়া বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার পথটা সহজ ছিল না আর্জেন্টিনার। বরং ছিল অনেক কঠিন। তারকাসমৃদ্ধ আক্রমণভাগ নিয়েও পুরো বাছাইপর্বে গোলের জন্য কঠিন যুদ্ধ করতে হয় দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের; ১৮ ম্যাচে মাত্র ১৯ বার প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠাতে পারে তারা।
একসময় তো ছিটকে পড়ার শঙ্কাতেই পড়ে গিয়েছিল দলটি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় শেষ ম্যাচে একুয়েডরের বিপক্ষে সব ভার যেন নিজের কাঁধে তুলে নেন মেসি। করেন দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক। ৩-১ গোলের জয়ে বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা।
ক্লাব ফুটবলে খেলা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলার মধ্যে পার্থক্য আছে-জানেন ফিগো। তবে সবকিছুর পরেও এবার যে মেসি শিরোপা জিততে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে, তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই সাবেক পর্তুগাল অধিনায়কের।
“আমি মনে করি, বিশ্বকাপে দারুণ একটা ফল পাওয়ার লক্ষ্যে পারফর্ম করার এটা তার অন্যতম শেষ সুযোগ। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার লক্ষ্য পূরণে সে হয়তো এবার আরও ভালোভাবে ও সেরা উপায়ে চেষ্টা করবে।”
বরাবরের মতো ২০১৭-১৮ মৌসুমটাও দারুণ কেটেছে মেসির। দলকে লা লিগা শিরোপা জেতাতে ৩৬ ম্যাচ খেলে করেন ৩৪ গোল। কোপা দেল রে শিরোপাও ঘরে তোলে তারা। ফিগোর বিশ্বাস, আসছে বিশ্বকাপের জন্য নিশ্চয় বিশেষ কিছু জমিয়ে রেখেছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।
“আশা করি, দুর্দান্ত খেলতে ও সমর্থকদের সেরাটা দিতে শারীরিকভাবে সেরা অবস্থায় থেকে সে প্রতিযোগিতায় পা রাখবে।”
আগামী ১৬ জুন আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হবে আর্জেন্টিনার। ‘ডি’ গ্রুপে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া ও নাইজেরিয়া।