রোমার স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালে লিভারপুল

ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাস নতুন করে লিখতে প্রাণপণে লড়লো রোমা। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ছিনিয়ে নিল দারুণ এক জয়; কিন্তু দুই লেগের হিসেবে উদ্দীপ্ত লিভারপুলের সঙ্গে পেরে উঠলো না। ১১ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পা রাখলো পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। 

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2018, 08:41 PM
Updated : 2 May 2018, 09:07 PM

বুধবার রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে সেমি-ফাইনালের ফিরতি পর্বে ৪-২ গোলে জিতে রোমা। কিন্তু গত সপ্তাহে নিজেদের মাঠে ৫-২ গোলে জেতা লিভারপুল দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ ব্যবধানে এগিয়ে ফাইনালে ওঠে।

অ্যানফিল্ডে বড় ব্যবধানে হারের পর ঘুরে দাঁড়াতে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হতো রোমাকে। কোয়ার্টার-ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে তেমনই অসাধারণ এক গল্প লেখায় আত্মবিশ্বাসের কমতি ছিল না।

বড় হুমকি খেলোয়াড় ও সাংবাদিকদের ভোটে মৌসুমে ইংল্যান্ডের বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতা সালাহকে পুরো ম্যাচে বোতলবন্দি রাখতে দারুণ কার্যকর ছিল স্বাগতিকরা। প্রথম ছয় মিনিটে ভালো দুটি আক্রমণ করে আশাও জাগিয়েছিল; কিন্তু অনেক সুযোগ নষ্টের ভিড়ে স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায়।

প্রতিপক্ষের রক্ষণে একচেটিয়া চাপ ধরে শুরু করা রোমার নবম মিনিটের ভুলের সুযোগে এগিয়ে যায় লিভারপুল। মাঝমাঠে নাইনগোলানের ভুল পাস পেয়ে সামনে এগিয়ে বাঁয়ে বল বাড়ান রবের্তো ফিরমিনো। আর ডি-বক্সে ঢুকে নিখুঁত কোনাকুনি শটে গোলটি করেন প্রথম পর্বে বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করা সাদিও মানে।

আরও কোণঠাসা হয়ে পড়া রোমা ১৫তম মিনিটে সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় গোলের দেখা পায়। এল শারাউইয়ের ক্রস ঠেকাতে শট নেন ডিফেন্ডার লোভরেন। তবে বল মিডফিল্ডার জেমস মিলনারের মুখে লেগে ভিতরে ঢুকে যায়।

২৫তম মিনিটে ফের এগিয়ে যায় লিভারপুল। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হয় রোমা। উল্টো এদিন জেকোর হেডে গোলমুখে বল পেয়ে যান জর্জিনিয়ো ভিনালডাম। ডাচ মিডফিল্ডারের অনায়াস লক্ষ্যভেদে দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৭-৩। শেষ হয়ে যায় রোমার অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা।

রোমার ফিকে হয়ে যাওয়া স্বপ্নে কিছুটা আশা জাগিয়েছিলেন এদিন জেকো। দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে এল শারাউইয়ের শট জার্মান গোলরক্ষক লোরিস কারিয়ুস ঠেকানোর পর ফিরতি বল ধরে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠান বসনিয়ার ফরোয়ার্ড।

কিছুক্ষণ পর দুই মিনিটের ব্যবধানে দলটি আরও দুটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে। ৬৬তম মিনিটে অফসাইডের ফাদ ভেঙে ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে জেকো লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিলে হতাশা বাড়ে স্বাগতিক শিবিরে। ৮০তম মিনিটে তার আরেকটি প্রচেষ্টা রুখে দেন কারিয়ুস।

৮৬তম মিনিটে বেলজিয়ামের মিডফিল্ডার নাইনগোলানের দূরপাল্লার শটে বল পোস্টে লেগে ভিতরে ঢুকলে নাটকীয়তার সম্ভাবনা জাগে।

ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে টানতে বাকি সময়ে আরও দুই গোলের প্রয়োজন ছিল রোমার। কিন্তু দেখা মেলে একটির; যোগ করা সময়ের একবারে শেষ মুহূর্তে নাইনগোলানের সফল স্পট কিক সেক্ষেত্রে আফসোসই বাড়িয়েছে শুধু। স্বপ্ন ছোঁয়ার খুব কাছে গিয়েও শেষ হতাশায়।

আগামী ২৬ মে ইউক্রেনের কিয়েভে শিরোপা লড়াইয়ে রেকর্ড ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ডের ক্লাব লিভারপুল।