রোনালদোর জোড়া গোলে সেমির পথে রিয়াল

বৃষ্টি ভেজা রাতে দ্যুতি ছড়ালেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। তার জাদুকরী ফিনিশিংয়ে ইউভেন্তুসকে তাদেরই মাঠে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2018, 08:36 PM
Updated : 4 April 2018, 04:11 PM

কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলে জিতেছে জিনেদিন জিদানের দল। স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে জোড়া গোল করেন রোনালদো। অবদান রাখেন মার্সেলোর গোলে। 

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের শেষ সাত কোয়ার্টার-ফাইনালে জেতা রিয়াল আগামী বুধবার দ্বিতীয় লেগে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে ইউভেন্তুসের মুখোমুখি হবে।

ইউভেন্তুস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে শুরুতেই এগিয়ে যায় রিয়াল। স্বাগতিকদের বাজে ডিফেন্ডিংয়ের সুবিধা কাজে লাগান অরক্ষিত রোনালদো। ইসকোর পাস থেকে প্রথম স্পর্শে বল জালে পাঠান পর্তুগিজ অধিনায়ক।

প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ১০ ম্যাচে গোল করার কৃতিত্ব দেখান এই তারকা ফরোয়ার্ড। তার কাছাকাছি থাকা মাত্তেও দে শিলিও ব্যস্ত ছিলেন করিম বেনজেমাকে অকার্যকর রাখতে। তা করতে গিয়ে ইতালিয়ান ডিফেন্ডার নিজেই ফাঁদে পড়ে যান।

ষষ্ঠ মিনিটে গোল শোধ করার সুযোগ আসে পাওলো দিবালার সামনে। তবে চমৎকার এক স্লাইডে বিপদমুক্ত করেন সের্হিও রামোস। 

দ্বাদশ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ হাতছাড়া করেন রাফায়েল ভারানে। অরক্ষিত ফরাসি ডিফেন্ডার হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।

২৩তম মিনিটে দিবালার দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে খুব কাছ থেকে নেওয়া গনসালো হিগুয়াইনের হেড ফিরিয়ে দেন কেইলর নাভাস। ৩৫তম মিনিটে দে শিলিওর নিচু ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারেননি দিবালা। বলের দিক একটু পরিবর্তন করে দিতে পারলেই কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যেতে পারত ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা।

পরের মিনিটে রিয়াল মিডফিল্ডার টনি ক্রুসের বুলেট গতির শট ব্যর্থ হয়ে যায় ক্রসবারে লেগে। ৩৯তম মিনিটে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ইউভেন্তুসের অরক্ষিত ডিফেন্ডার জর্জো কিয়েল্লিনি। ৪৫তম মিনিটে ডাইভ দেওয়ার দায়ে হলুদ কার্ড দেখেন দিবালা।

৫০তম মিনিটে একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি রোনালদোর শট। চার মিনিট পর দিবালাকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন রামোস। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে দ্বিতীয় লেগে খেলা হবে না এই ডিফেন্ডারের। 

খেলার ধারার বিপরীতে ৬৩তম মিনিটে অসাধারণ এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রোনালদো। বুফ্ফনকে বল বাড়াতে গিয়ে তালগোল পাকান কিয়েল্লিনি। দুরূহ কোণ থেকে শট নেননি রোনালদো। তার বাড়ানো বলে লুকাস ভাসকেসের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান বুফ্ফন।

তখনও বিপদ কাটেনি ইউভেন্তুসের। দানি কারভাহালের ক্রসে দারুণ এক বাইসাইকেল কিকে বল জালে পাঠান রোনালদো। অবিশ্বাস্য গোল দেখে মাথায় হাত দিতে দেখা যায় জিদানকে। হতাশায় যেন নুয়ে পড়েন বুফ্ফন।

সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের হয়ে চলতি মৌসুমে রোনালদোর এটা ৩৯তম গোল। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।   

ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতার শেষ আটের লড়াইয়ে এটা রোনালদোর ২২তম গোল! টুর্নামেন্টে সব মিলিয়ে তার গোল হল ১১৯টি।

দুই মিনিট পর বিপদ আরও বাড়ে ইউভেন্তুসের। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন দিবালা। দিশা হারিয়ে ফেলা স্বাগতিকদের জালে ৭২তম মিনিটে বল পাঠান মার্সেলো। তার গোলে দারুণ অবদান আছে রোনালদোর।

৮৭তম মিনিটে মাতেও কোভাচিচের শট ঠেকানোর কোনো সুযোগই ছিল না বুফ্ফনের। তবে বদলি নামা খেলোয়াড়ের শট ক্রসবারে লেগে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যবধান বাড়েনি। তিন মিনিট পর রোনালদোর শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ইউভেন্তুস গোলরক্ষক।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে বুফ্ফনকে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি রোনালদো। বল অনেক ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান তিনি।

পরের দুই মিনিটে দুটি সুযোগ হাতছাড়া করে ইউভেন্তুস। হিগুয়াইনের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান নাভাস। পরের মিনিটে তাকে একা পেলেও বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি হুয়ান কুয়াদ্রাদো।

গত মৌসুমের ফাইনালে দুই দলের লড়াইয়ে ৪-১ গোলে জিতেছিল রিয়াল। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে তার প্রতিশোধ নেওয়া হল না ইউভেন্তুসের। সেমি-ফাইনালে খেলতে আগামী বুধবার তাদের সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন লড়াই।