আর্চারিতে সাফল্যের আনন্দ

দক্ষিণ এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা খেলোয়াড়দের পাঠায়নি ভারত। এরপরও ভারতকে পেছনে ফেলে ছয়টি সোনা জেতার সাফল্যকে মোটেও ছোটো করে দেখছেন না বাংলাদেশের কোচ ও খেলোয়াড়রা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2018, 11:31 AM
Updated : 27 March 2018, 11:56 AM

১০ ইভেন্টের মধ্যে ৬টি সোনা, ৫টি রূপা ও ১টি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে ১২টি পদক জিতে দক্ষিণ এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) হওয়া এ প্রতিযোগিতায় ভারত জিতেছে ৪টি সোনা, ৫টি রূপা ও ৩টি ব্রোঞ্জ।

রিকার্ভ পুরুষ এককের ফাইনালের স্বদেশি রোমান সানাকে ৬-২ সেটে হারিয়ে স্বর্ণ জেতেন ইব্রাহিম শেখ রিজওয়ান। চলতি প্রতিযোগিতা তো বটেই দক্ষিণ এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে ইব্রাহিমের হাত ধরে প্রথম সোনা জিতল বাংলাদেশ।

কম্পাউন্ড মেয়েদের এককের ফাইনালেও দুই প্রতিযোগী ছিল বাংলাদেশের। সুস্মিতা বণিককে ১৪০-১৩৩ স্কোরে হারিয়ে সেরা হয়েছেন রোকসানা আখতার।

রিকার্ভ পুরুষ দলীয়, রিকার্ভ মিশ্র, কম্পাউন্ডের পুরুষ দলীয় এবং কম্পাউন্ডের মিশ্র বিভাগে ভারতের প্রতিযোগীদের হারিয়ে সোনা জেতে বাংলাদেশ।

রিকার্ভের মেয়েদের একক ও মেয়েদের দলীয় এবং কম্পাউন্ডে মেয়েদের দলীয় ইভেন্টের ফাইনালে ভারতের প্রতিযোগীদের কাছে হারে বাংলাদেশের আর্চাররা।

কম্পাউন্ডের পুরুষ এককের ফাইনালে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ।

জাতীয় দলের সাবেক কোচ এবং বর্তমানে বিকেএসপির কোচ নিশিথ কুমার দাসের মতে ভারত তাদের তৃতীয় বা চতুর্থ দল পাঠিয়েছে। তবে ভারতের ‘নতুনদের’ বিপক্ষে পাওয়া সাফল্যেকে কম মনে করছেন না কম্পাউন্ডের পুরুষ দলীয় বিভাগে সোনা জেতা অসীম।

“এটা ঠিক যে, ভারতের এই আর্চাররা নতুন কিন্তু দেখুন, ওরা আর্চারিতে অনেক এগিয়েছে। নতুন হলেও এদের মান অনেক ভালো। আমরা এখানে যে স্কোর করেছি, সেটাও বিশ্বমানের। যদি ওদের মূল দলের খেলোয়াড় আসত, তাহলেও তাদের সঙ্গে আমাদের লড়াই হত।”

শিষ্যদের সাফল্য দারুণ খুশি আর্চারির কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ। জার্মানির এই কোচের দাবি, বাংলাদেশ দলেও অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছেন।

“ভারত তরুণ দল নিয়ে এসেছে; আমাদের দলেও তরুণ আছে এবং তারা দেশের ভবিষ্যৎ। আমাদের পুরুষ দলেও এক জনের বয়স ১৬ বছরের নিচে। যাই হোক, দলের অর্জনে আমি খুশি।”

রোমানের ব্যর্থতায় হতাশ হলেও ১৭ বছর বয়সী তরুণ ইব্রাহিমের সাফল্যে খুশি ফ্রেডরিখ, “রোমান বাছাইয়ে বড় স্কোর করেছিল, সেটা বিশ্বমানের কিন্তু ফাইনালে এসে হেরেছে। এটা রোমানের জন্য খারাপ; আমিও হতাশ কিন্তু ইব্রাহিমের স্বর্ণ জেতাটা আবার বাংলাদেশের আর্চারির জন্য ভালো সংকেত-যে, তরুণ এবং ভালো আর্চার উঠে আসছে।”

ভারত দলে থাকা হিমানি মালিক, আকাশ মালিক ও মায়ান রাওয়াত-এই তিন আর্চারেরই কেবল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বাকিরা উঠে এসেছে গত মাসে হওয়া ‘খেল ইন্ডিয়া খেল’ প্রতিযোগিতা থেকে। তৃণমূল পর্যায়ের খেলোয়াড় তুলে আনার এই প্রতিযোগিতা থেকে উঠে আসা আর্চারদের সাফল্যে দারুণ খুশি দলটির কোচ কপিল কৌশিক।

“তিন জন ছাড়া এই দলের সবাই একেবারেই ‘ফ্রেশ’। খেল ইন্ডিয়া খেল-প্রতিযোগিতা থেকে তারা উঠে এসেছে। অভিজ্ঞতা নেই। তাদের বয়সও কম-১৭ বছরের নিচে। এই প্রথম তারা কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলছে। এমনকি এই প্রতিযোগিতার আগে তারা নিজেরা একসঙ্গে অনুশীলনও করেনি। তাই তাদের এই সাফল্যও আমাদের কাছে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কিছু।”