‘অল-আউট’ খেলার ঘোষণা বাংলাদেশ-ভারতের

সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরের শিরোপা জিততে মরিয়া দুই দলই। ম্যাচের আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনে ভারত কোচ ময়মল রকির ঘোষণা ‘অল-আউট’ ফুটবল খেলবে তার দল। একই সুর বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের কণ্ঠে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2017, 11:14 AM
Updated : 23 Dec 2017, 01:28 PM

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে রোববার বেলা দুইটায় শিরোপা লড়াইয়ে নামবে দুই দল। লিগের শেষ ম্যাচে ভারতকে ৩-০ গোলে হারানোর বাড়তি আত্মবিশ্বাস আছে বাংলাদেশের। তবে দুই দলের কোচই বলেছেন, আগের ম্যাচের ফল মনে রাখছেন না কেউ। নতুন ম্যাচ, নতুন লক্ষ্য নিয়ে নামবেন তারা।

লিগের তিন ম্যাচের সবগুলো বাংলাদেশ জিতেছে ১২ গোল করে; গোল হজম করেনি একটিও। দুই ম্যাচ জেতা ভারত গোল করেছে ১৩টি, খেয়েছে ৩টি। কোনো গোল হজম না করায় রক্ষণভাগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাংলাদেশ কোচ জানান, শিরোপা হাসি হাসতে আগের তিন ম্যাচের মতো আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে তার দল।

“আমাদের লক্ষ্য ছিল-আমরা প্রত্যেকটা ম্যাচ জয়ের জন্য নামব। নিজেদের খেলায় থাকব। আমি মনে করি, আমাদের মেয়েরা এ পর্যন্ত সে কাজটি শুরু থেকে করতে পেরেছে। তারা প্রত্যেকটা ম্যাচই শুরু থেকে শেষ মিনিট পর্যন্ত নিজেদের খেলায় থাকতে পেরেছে। নিজেদের খেলাটা খেলতে পেরেছে।”

“লিগ ম্যাচের পর গোলকিপার ও ডিফেন্ডারদের নিয়ে আমরা বসেছি। তাদের ধন্যবাদ দিয়েছি। একটা টুর্নামেন্টে আমরা তিনটা ম্যাচ খেলেছি এবং কোনো গোল খাইনি, এটা অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো দিক। আমরা সেটা অব্যহত রাখার চেষ্টা করব। আমাদের লক্ষ্য থাকবে ডিফেন্ডার এবং গোলকিপার কোনো গোল খাবে না এবং ফরোয়ার্ডরা যে সুযোগ পাবে, সেটা কাজে লাগাবে।”

চোট কাটিয়ে ফিরেছেন ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন। আরেক ফরোয়ার্ড সাজেদা খাতুন হাঁটুর চোট কাটিয়ে উঠতে না পারায় তাকে ফাইনালে পাচ্ছেন না কোচ। রব্বানী অবশ্য জানালেন বেঞ্চের খেলোয়াড় দিয়ে সাজেদার অভাব পূরণে আত্মবিশ্বাসী তিনি। লিগে ভারতের বিপক্ষে জয়টি বাড়তি আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে দলকে। তবে কোচ জানালেন, ফাইনাল সামনে রেখে মাটিতে পা রাখছেন তার শিষ্যরা।

“তিনটা ম্যাচ তারা ভালো খেলেই জয় লাভ করেছে। তবে ফাইনাল অন্যরকম একটা ম্যাচ। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ এশিয়া সবসময়ের ফেভারিট। তাদের হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। লিগের ম্যাচ শেষ করে মেয়েদের সঙ্গে বসেছি। সব বিভাগে নিয়ে আলোচনা করেছি। তারা যেন অতিউৎসাহী না হয়, সেটা বলেছি। আপনারাও দেখেছেন, মাঠে তারা প্রাণবন্ত ছিল কিন্তু অতি আত্মবিশ্বাসী ছিল না। আশা করি, ফাইনালেও মেয়েরা সেরাটা দিয়ে দেশবাসীকে খুশি করবে।”

“আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছি। মার্জিয়া কর্নার কিক করেছে। গত খেলায় মনিকা সেট-পিসগুলো নিয়েছে। শামসুন্নাহার পেনাল্টি করে। আমাদের সব কিছুই পরিকল্পনামাফিক করা আছে। বেঞ্চেও ভালো খেলোয়াড় আছে আমাদের। ম্যাচের প্রতিটা মুহূর্তে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে যায়। ওদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদেরটাও বদল হবে। সবসময়ের জন্য সে পরিকল্পনা করা আছে।”

নিজেদের মাঠে, চেনা দর্শকের সামনে খেলতে নামা বাংলাদেশকে সমীহ করছেন রকি। তবে ভারত কোচেরও চাওয়া লিগ ম্যাচের হার ভুলে ফাইনালে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে তার শিষ্যরা।

“ফাইনালের অংশ হতে পেরে খুশি। ফাইনালের জন্য মুখিয়ে আছি এবং ভালো একটা ম্যাচ খেলতে চাই আমরা। আশা করি, দর্শক, গণমাধ্যম সবাই ম্যাচটা উপভোগ করবে। গ্রুপের (লিগের) ফল আমাদেরকে নিরুৎসাহিত করছে না বরং এটা আমাদের ফাইনালে আরও ভালো খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করবে।”

“মেয়েদের ওপর চাপ বলে কিছু নেই। আগের ম্যাচেও মেয়েদের বলেছিলাম, মাঠে যাও এবং অল-আউট খেলো-ম্যাচটা উপভোগ কর। এ ম্যাচেও মেয়েরা একই মন্ত্র নিয়ে যাবে।”