চলতি লিগে এটাই সবচেয়ে বেশি গোলের ম্যাচ। শেখ জামালের জয়ে হ্যাটট্রিক করেন রাফায়েল ওডোইন, জোড়া গোল সলোমন কিংয়ের, অন্য গোলটি নুরুল আবসারের। আরামবাগের চার গোলদাতা রবিউল হাসান, শাহরিয়ার বাপ্পী, সুমন আলি ও এলামলি বুকোলা।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সোমবার ম্যাচের অষ্টম মিনিটে গোল বন্যার শুরু। বাঁ দিক দিয়ে রাফায়েলের প্রথম প্রচেষ্টা গোলরক্ষক পাঞ্চ করার পর ফিরতি শটে লক্ষ্যভেদ করেন শেখ জামালের নাইজেরিয়ার এই ফরোয়ার্ড।
ষোড়শ মিনিটে সমতায় ফেরে আরামবাগ। রাজন মিয়ার কর্নারে রবিউলের ফ্লিক প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের পা ছুঁয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়।
২২তম মিনিটে সুমনের সঙ্গে একবার বল দেওয়া নেওয়া করে ডি বক্সের বাইরে থেকে বাপ্পীর নেওয়া শট কর্দমাক্ত মাঠে গড়িয়ে গড়িয়ে জালে জড়ায়। শেখ জামাল গোলরক্ষক সামিয়ুল ইসলাম দেরিতে ঝাঁপিয়ে পড়ায় বলের নাগাল পাননি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে তিন গোলে ম্যাচ আরও জমে ওঠে। ৪০তম মিনিটে সলোমনের শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক। কর্নার থেকেই সমতায় ফেরে শেখ জামাল। সতীর্থের কর্নারে সলোমন হেড করার পর দূরের পোস্টে থাকা রাফায়েল সুযোগটা কাজে লাগান।
তিন মিনিট পর পাল্টা আক্রমণ থেকে ফের এগিয়ে যায় আরামবাগ। সুমনের প্রথম প্রচেষ্টা গোলরক্ষক ফেরানোর পর ফিরতি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ডই।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে রাফায়েল হ্যাটট্রিক পূরণ করলে সমতায় ফেরে শেখ জামাল।
চলতি লিগে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করা এই নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ১১ গোল নিয়ে আছেন গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে। প্রথম হ্যাটট্রিকটি তিনি করেছিলেন ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ৫-০ গোলে জেতা ম্যাচে।
রাফায়েলের তৃতীয় গোল নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নাইজেরিয়ার এই ফরোয়ার্ডের হ্যান্ডবল হয়েছে দাবি করে আরামবাগের খেলোয়াড়রা লাইন্সম্যানকে ঘিরে ধরেন। বিরতির বাঁশি বাজার পর উত্তেজনা আরও বাড়ে। মাঠে ঢুকে পড়ে আরামবাগের কর্মকর্তা; সমর্থকরাও। পরে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।
বিরতির সময় শেষ হলেও ম্যাচ চালাতে অস্বীকৃতি জানান রেফারি সুজিত ব্যানার্জি। ম্যাচ কমিশনার রাকিবুল আলমের অনুরোধে মিনিট দশেক পর মাঠে নামেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এগিয়ে যায় শেখ জামাল। বাঁ দিক থেকে আনিসুর আলমের বাড়ানো ক্রস ডি-বক্সের ভেতরে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সলোমনের নেওয়া জোরালো শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেননি।
৫৬তম মিনিটে মোহাম্মদ আলি হোসেনের তৈরি করে দেওয়া সুযোগ নুরুল কাজে লাগালে স্কোরলাইন ৫-৩ করে নেয় শেখ জামাল। ৮৯তম মিনিটে আগুয়ান গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে সলোমনের লব জালে জড়ালে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় দলটি।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে স্পট কিক থেকে আরামবাগের এলামলি বুকোলার গোলে আরামবাগের হারের ব্যবধান কমে।
প্রথম পর্বে আরামবাগকে ৩-১ গোলে হারানো শেখ জামাল ১৬ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে মারুফুল হকের আরামবাগ আছে অষ্টম স্থানে।
সোমবার প্রথম ম্যাচে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর একমাত্র গোলে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটিকে হারানো চট্টগ্রাম আবাহনী ১৬ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে।
৩৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে আবাহনী লিমিটেড।