রোনালদোর রেকর্ডের রাতে রিয়ালের জয়

ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর রেকর্ডের রাতে দারুণ এক জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ২ গোলে পিছিয়ে থাকা বরুসিয়া ডর্টমুন্ড পিয়েরে-এমেরিক আউবামেয়াংয়ের নৈপুণ্যে ফিরিয়েছিল সমতা। শেষ পর্যন্ত লুকাস ভাসকেসের গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে জিনেদিন জিদানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2017, 09:41 PM
Updated : 6 Dec 2017, 10:35 PM

গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছে রিয়াল। বোরহা মায়োরাল ও রোনালদোর গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় শিরোপাধারীরা। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে উঠা ম্যাচে দুই গোলই শোধ করেন আউবামেয়াং। আরেকটি হোঁচটের শঙ্কায় থাকায় রিয়ালকে দারুণ এক জয় এনে দেন ভাসকেস।   

লা লিগায় নিজেদের শেষ ম্যাচে ড্র করা রিয়াল উন্মুখ ছিল জয়ে ফিরতে। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে কষ্টের জয়ে সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে স্পেনের সফলতম দলটির।

দ্বিতীয় মিনিটে গোলে প্রথম শট নেন রোনালদো। গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় সেবার বেঁচে যায় বরুসিয়া। অষ্টম মিনিটে আর দলকে রক্ষা করতে পারেননি রোমান বার্কি। ইসকোর কাছ থেকে বল পেয়ে খুব কাছ থেকে জালে পাঠান মায়োরাল।

চার মিনিট পর সমর্থকদের আনন্দের আরও বড় উপলক্ষ এনে দেন রোনালদো। কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন তারকা ফরোয়ার্ড। এই গোলে ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে একই আসরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের ছয় ম্যাচে গোলের রেকর্ড গড়েন তিনি।

একই সঙ্গে লিওনেল মেসির রেকর্ডে ভাগ বসান রোনালদো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সর্বোচ্চ ৬০ গোলের রেকর্ড যৌথভাবে এখন সময়ের সেরা দুই ফুটবলারের।

আগেই ইউরোপের ক্লাব সেরার টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়া বরুসিয়া যেন জেগে উঠে এরপরই। একের পর এক আক্রমণ করে ব্যস্ত রাখে রিয়ালের রক্ষণকে।

২৬তম মিনিটে প্রথম সত্যিকারের সুযোগ পায় বরুসিয়া। রাফায়েল গারেইরোর বিপজ্জনক ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারেননি আউবামেয়াং। পরে ক্রিস্তিয়ান পুলিসিচের শট ঠেকিয়ে দেন কেইলর নাভাস।

পরের মিনিটে পুলিসিচের কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো শট নেন শিনজি কাগওয়া। এবার ব্লক করেন রিয়াল ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে।

৩৬তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন আউবামেয়াং। ডি বক্সে অরক্ষিত স্ট্রাইকার পেয়েছিলেন অনেক সময়। কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়ে হতাশ করেন দলকে।

একের পর এক সুযোগ নষ্ট করা আউবামেয়াং ৪৩তম মিনিটে মার্সেলের ক্রসে দারুণ হেডে ব্যবধান কমান। সঙ্গে লেগে থাকা সের্হিও রামোসকে ফাঁকি দিয়ে ঝাঁপানো হেডে দলকে ম্যাচে ফেরান তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বের্নাবেউকে স্তব্ধ করে দেন আউবামেয়াং। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বল জালে পাঠান তিনি। প্রথমবার কোনোমতে ফিরিয়েছিলেন নাভাস, দ্বিতীয়বার পারেননি। আউবামেয়াংয়ের চিপ তার মাথার ওপর দিয়ে ঠিকানায় পৌঁছায়।

চার মিনিট পর আবার এগিয়ে দিতে পারতেন রোনালদো। এবার একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি তার কোনাকুনি শট। একের পর এক আক্রমণে অতিথিদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলে ৮১তম মিনিটে আবার এগিয়ে যায় রিয়াল। থিও এর্নান্দেসের হেডে বল পেয়ে জালে পাঠান ভাসকেস।

৮৮তম মিনিটে সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন কাগওয়া। বিপজ্জনক জায়গা থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন এই ফরোয়ার্ড।

‘এইচ’ গ্রুপের রানার্সআপ হয়ে শেষ ষোলোয় ওঠা রিয়ালের পয়েন্ট ১৩। জার্মানির দল বরুসিয়ার পয়েন্ট মাত্র ২।

অন্য ম্যাচে আপোয়েল নিকোশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পার। আগেই গ্রুপ সেরা নিশ্চিত হওয়া দলটির পয়েন্ট ১৬।

‘জি’ গ্রুপ থেকে আগেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করা বেসিকতাস শেষ ম্যাচে লাইপজিগকে তাদেরই মাঠে ২-১ গোলে হারিয়েছে। চার জয় ও দুই ড্রয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া তুরস্কের ক্লাবটির পয়েন্ট ১৪।

এই গ্রুপের আরেক ম্যাচে গতবারের সেমি-ফাইনালিস্ট মোনাকোকে ৫-২ গোলে হারিয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে পর্তুগালের ক্লাব পোর্তো।

৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হওয়া জার্মান ক্লাব লাইপজিগ খেলবে ইউরোপা লিগে।