ইরানের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে পদকের খরা দূর হওয়ার দারুণ সম্ভাবনা জেগেছিল। তবে শুরুটা ভালো হলেও শেষ পর্যন্ত মেয়েদের কম্পাউন্ডের দলগত ইভেন্টের ব্রোঞ্জ পদক নির্ধারণী লড়াইয়ে পেরে ওঠেনি বাংলাদেশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2017, 09:33 AM
Updated : 30 Nov 2017, 01:05 PM

ইরানের কাছে ২২৯-২১৭ ব্যবধানে হেরেছে রোকসানা-সুস্মিতা-বন্যারা।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার বন্যাদের দিনের শুরুটা ছিল দারুণ। কোয়ার্টার-ফাইনালে চাইনিজ তাইপেকে ২২৪-২২২ পয়েন্টে হারায় মেয়েরা। এই জয়ে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোনো ইভেন্টে প্রথমবারের মতো সেমি-ফাইনালে ওঠার কীর্তি গড়ে বাংলাদেশ।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে শক্তিশালী ভারতের সঙ্গে পেরে ওঠেনি বাংলাদেশ। ২২৮-২১৩ ব্যবধানে হেরে যায় দল। পরে ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে প্রথম পর্বে ইরানকে ৫৮-৫৭ স্কোরে পেছনে ফেলে শুরু বন্যাদের। এরপর ছন্দ হারানো সুস্মিতা-রোকসানারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি; হেরে যান ৫৮-৫১, ৫৮-৫৫, ৫৬-৫৩ পয়েন্টে।

প্রথমবারের মতো পদকের লড়াইয়ে ওঠার তৃপ্তি থাকার কথা জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বন্যা জানালেন অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণে পেরে ওঠেননি তারা।

“অবশ্যই আমরা নার্ভাস ছিলাম। চাপ অনুভব করছিলাম। কেননা, আমরা খুব বেশি আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নেই না। এ কারণে আমাদের টেম্পারমেন্ট শক্তিশালী দলগুলোর খেলোয়াড়দের মতো নয়। আমরা যত বেশি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেব, আমরা তত বেশি চাপ সামলে নিতে পারব এবং ওদের বিপক্ষে খেলতে গেলে তখন নার্ভাস হব না।”

শিষ্যরা প্রতিযোগিতার শেষ দিন পর্যন্ত টিকে থাকাতেই দারুণ খুশি কোচ নিশীথ দাস। তবে তিনিও বন্যা-রোমান-মামুনদের আরও বেশি আন্তর্জাতিক ইভেন্টে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার দাবিটা জানিয়ে রাখলেন।

“এ প্রতিযোগিতায় পাঁচ দিন আমরা টিকে ছিলাম। যেন একটা ক্রিকেটের টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেললাম। তবে (ব্রোঞ্জ নির্ধারণী ম্যাচে) এত বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ার কারণ টেম্পারামেন্ট; এটা যখন কমে যায়, তখন আর হয় না। এ কারণে আমি বারবার বলছি, খেলোয়াড়দের যত বেশি আন্তর্জাতিক ইভেন্টে খেলার ‍সুযোগ দেওয়া হবে, তারা তত বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে।”

“আমাদের মান এ রকম-বিষয়টা ঠিক তা মনে করি না আমি। কেননা, এই টুর্নামেন্টে আমাদের লক্ষ্য ছিল কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলা, সেটা আমরা পূরণ করেছি। বিষয় হলো, যখন আমরা একটা লক্ষ্য টপকে যাই, তখন আরেকটা টপকে যাওয়ার লক্ষ্য তৈরি হয়। এটার জন্য টেম্পারামেন্ট দরকার। যদি মাসে অন্তত একটা-দুটো বড় টুর্নামেন্টে বিশ্বের বড় বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমাদের আর্চারদের দেখা হয়, তখন তারা টেম্পারামেন্ট ধরে রাখতে পারবে। আট-দশ মাস পর পর দেখা হলে সেটা ধরে রাখা কঠিন।” 

ছেলেদের রিকার্ভ ও কম্পাউন্ডের দলগত দুই ইভেন্টের কোয়ার্টার-ফাইনালে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। রিকার্ভে রোমান সানা-তামিমুল ইসলাম-হাকিম আহমেদ রুবেলে গড়া দল ৬-০ সেটে হেরেছে। কম্পাউন্ডে আবুল কাশেম মামুন-নাজমুল হুদা-মিলন মোল্লাকে নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দলের হার ২৩২-২২২ ব্যবধানে।

বৃহস্পতিবার রিকার্ভের ছেলে ও মেয়ে দলগত দুই বিভাগের সোনা জিতেছে দক্ষিণ কোরিয়া; ভারতকে ৫-১ সেটে হারিয়েছে ছেলেরা এবং চাইনিজ তাইপেকে ৬-২ সেটে হারিয়েছে মেয়েরা। ভারতকে ২৩৪-২৩২ ব্যবধানে হারিয়ে ছেলেদের কম্পাউন্ডের দলগত স্বর্ণও জিতেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

মেয়েদের কম্পাউন্ড দলগত ইভেন্টে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২৩০-২২৭ স্কোরে হারিয়ে প্রতিযোগিতায় নিজেদের দ্বিতীয় স্বর্ণ জিতেছে ভারত।

৮টি স্বর্ণ, ৪টি রৌপ্য ও ২টি ব্রোঞ্জসহ ১৪টি পদক নিয়ে গতবারের মতো এবারও শীর্ষে থেকে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ২টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য ও একটি ব্রোঞ্জসহ এবারও দ্বিতীয় ভারত।

দেশ

স্বর্ণ

রৌপ্য

ব্রোঞ্জ

মোট পাদক

দক্ষিণ কোরিয়া

১৪

ভারত

জাপান

-

-

চাইনিজ তাইপে

-

চীন

-

-

ভিয়েতনাম

-

-

ইরান

-

-

মালয়েশিয়া

-

-

কাজাখস্তান

-

-