রোনালদো-বেনজেমার জোড়া গোলে রিয়ালের বিশাল জয়

সমালোচকদের জবাব দিতে সেরা অস্ত্রটাই বেছে নিলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও করিম বেনজেমা। দুবার করে বল জালে পাঠালেন, সঙ্গে সতীর্থের গোলেও রাখলেন অবদান। আক্রমণভাগের এমন ছন্দে রিয়াল মাদ্রিদও পেল বিশাল জয়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2017, 09:37 PM
Updated : 22 Nov 2017, 07:36 AM

মঙ্গলবার রাতে আপোয়েল নিকোশিয়াকে তাদেরই মাঠে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে উঠেছে জিনেদিন জিদানের দল। তাদের অন্য দুটি গোল লুকা মদ্রিচ ও নাচো ফের্নান্দেসের।

তবে ‘এইচ’ গ্রুপে রানার্সআপ হওয়ায় রিয়াল মাদ্রিদকে শেষ ষোলোয় খেলতে হবে কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। গ্রুপের অন্য ম্যাচে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত করেছে টটেনহ্যাম।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এর আগের চার ম্যাচের মাত্র একটিতে জেতা রিয়ালকে আপোয়েলের বিপক্ষেও শুরুতে ঠিক ছন্দে দেখা যায়নি। বারবার আক্রমণে উঠলেও তার অধিকাংশই ছিল এলোমেলো। কিন্তু প্রতিপক্ষের দুর্বল রক্ষণের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিরতির আগেই জয়-পরাজয়ের হিসেবটা চুকিয়ে ফেলে তারা।

গোলবন্যার শুরুটা হতে পারতো তৃতীয় মিনিটেই; কিন্তু বেনজেমার ক্রস বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট মেরে বসেন রোনালদো।

প্রথম গোলের দেখা মেলে ২৩তম মিনিটে। আপোয়েলের এক ডিফেন্ডারের ব্যর্থতায় ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো ভলিতে জালে পাঠান ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ।

কিছুটা সময় কাটার পর দুই মিনিটের ব্যবধানে আরও দুটি গোল করে রিয়াল। টনি ক্রুসের লম্বা পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন বেনজেমা। আর কর্নার থেকে উড়ে আসা বল রাফায়েল ভারানের হেডের পর গোলমুখ থেকে টোকায় দলের তৃতীয় গোলটি করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার নাচো।

বিরতির ঠিক আগে যোগ করা সময়ে রোনালদোর পাস পেয়ে স্বাগতিকদের ম্যাচে ফেরার আশা শেষ করে দেন বেনজেমা। একজনকে কাটিয়ে শট নেওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে ডানে ছোট পাস দেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। আর তা থেকে অনায়াসে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ফরাসি স্ট্রাইকার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটা তার ৫৩তম গোল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল করেন রোনালদো।

৪৯তম মিনিটে মার্সেলোর ক্রসে হেডে করেন প্রথমটি। আর দ্বিতীয়টি আসে প্রতিপক্ষের ভুলে। এক ডিফেন্ডার বল হারানোর পর ছুটে এসে শট নেন গোলরক্ষক, বল বেনজেমার পায়ে লেগে চলে যায় বাঁয়ে। ওখান থেকে দারুণ কোনাকুনি শটে আসরে নিজের অষ্টম গোলটি করেন পর্তুগিজ অধিনায়ক।

ইউরোপ সেরার মঞ্চে এই নিয়ে রোনালদোর গোল হলো ১১৩টি।

প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে সাইপ্রাসের দলটিকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল রিয়াল।

‘এইচ’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে তাদেরই মাঠে ২-১ গোলে হারায় আগেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করা টটেনহ্যাম হটস্পার।

এই জয়ে পাঁচ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষস্থানও নিশ্চিত হয় টটেনহ্যামের। ৩ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল।

ডর্টমুন্ড ও আপোয়েলের পয়েন্ট সমান ২ করে।

‘জি’ গ্রুপে পোর্তোর সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে শীর্ষে থেকে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে বেসিকতাস। পাঁচ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তুরস্কের দলটি।

৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে পর্তুগালের ক্লাব পোর্তো।

আরেক ম্যাচে মোনাকোকে তাদেরই মাঠে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে পরের রাউন্ডে ওঠার লড়াইয়ে আছে লাইপজিগ। জার্মান ক্লাবটির পয়েন্টও ৭।

২ পয়েন্ট নিয়ে ছিটকে গেছে গতবার সেমি-ফাইনালে ওঠা ফ্রান্সের ক্লাব মোনাকো।

‘এফ’ গ্রুপে ম্যাচের শেষ দিকে রাহিম স্টার্লিংয়ের একমাত্র গোলে ফেইনুর্দকে হারিয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল ম্যানচেস্টার সিটি। টানা ৫ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছে আগেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করা পেপ গুয়ার্দিওলার শিষ্যরা।

গ্রুপের অন্য ম্যাচে শাখতার দোনেৎস্ককে ৩-০ গোলে উড়িয়ে শেষ ষোলোয় ওঠার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে নাপোলি।

৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইউক্রেনের দল শাখতার। ৩ পয়েন্ট কম নিয়ে তৃতীয় স্থানে নাপোলি।

‘ই’ গ্রুপে সেভিয়ার মাঠে ৩-৩ গোলের নাটকীয় ড্রয়ে নকআউট পর্বে ওঠার অপেক্ষা বেড়েছে লিভারপুলের।

৫ ম্যাচে দুই জয় ও তিন ড্রয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তারা। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সেভিয়া।

আরেক ম্যাচে ঘরের মাঠে মারিবোরের সঙ্গে ১-১ ড্র করে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে স্পার্তাক মস্কো।