তৃণমূলে উন্নতির তাগিদ এএফসি সভাপতির

তিন দিনের সফরে এসে বাংলাদেশের ক্লাব ও তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলের উন্নতির চেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছেন এএফসি সভাপতি শখ সালমান বিন ইব্রাহিম আল খলিফা। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বাংলাদেশের ফুটবলের প্রয়োজনে পাশে থাকার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Oct 2017, 02:49 PM
Updated : 30 Oct 2017, 03:27 PM

গত রোববার বাংলাদেশে আসা সালমান সোমবার বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সঙ্গে এএফসি, ফিফার বিভিন্ন প্রকল্প, বাংলাদেশের ফুটবলসহ আরও অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

গত বছর অক্টোবরে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভুটানে বিপর্যয়কর ফলের পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো ম্যাচ খেলছে না বাংলাদেশ। ১৯৯৬ সালের স্মৃতিচারণ করে বাংলাদেশ নিয়ে আশাবাদ জানানো সালমান পরামর্শ দিয়েছেন ক্লাব ও তৃণমূল ফুটবলের উন্নতির দিকে।

“ক্লাব পর্যায়ের দলগুলোর উন্নতি ছাড়া আপনি শক্তিশালী জাতীয় দল গঠন করতে পারবেন না। আমরা আশা করতে পারি না, একটা ফুটবল ফেডারেশনের দায়িত্ব এ খাতের উন্নতি করা। এটা ক্লাবের ‍ওপর নির্ভর করে। এটা কেবল ক্লাবের সিনিয়র টিম নিয়ে নয়। এটা নির্ভর করে আপনার ভিত্তি এবং ক্লাবের অবকাঠামো এবং আপনি কিভাবে তৃণমূল পর্যায়ের ফুটবলের উন্নতি করতে চান, তার ওপর। কেননা, দিনশেষে এখান থেকে উঠে আসা খেলোয়াড়রাই আপনার দলের ভবিষ্যত।”

“১৯৯৬ সালে আমি যখন বাহরাইনের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ছিলাম; অটো ফিস্টার ছিলেন বাংলাদেশের কোচ এবং তখন বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততে আমাদের কষ্ট করতে হয়েছিল। আমি নিশ্চিত, সেটার পুনরাবৃত্তি আগামী হতে পারে; কেননা বাংলাদেশের মেধা আছে।”

বাছাই পর্ব পেরিয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্বে খেলে এসেছে কৃষ্ণা-সানজিদারা। বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলের উন্নতি দারুণ খুশি সালমান। আরও সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন ফিফার ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যানের পদে থাকা বাহরাইনের এই ক্রীড়া সংগঠক।

“এশিয়ার কয়েকটি মহিলা ফুটবল দল ফিফার র‌্যাঙ্কিংয়ে উপরের দিকে আছে এবং বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলও উন্নতি করছে। তাদের অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা দল বাছাই পেরিয়ে মূলপর্বে গেছে এবং বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলে আরও ভালো করতে পারে। এটা ১৭ কোটি মানুষের দেশ, এগিয়ে যাওয়টাই একমাত্র পথ।”

“টার্ফ, টেকনিক্যাল সাপোর্ট, কোচ-অফিসিয়ালদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো যেসব কার্যক্রম আমরা শুরু করেছিলাম, আমরা সবাই সেগুলোর উন্নতি দেখছি। নতুন প্রকল্প আসছে, যেখানে অবকাঠামোগত সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি থাকবে, যেটা থেকে বাংলাদেশ লাভবান হবে। আমরা এখানেই থেমে থাকতে চাই না, আরও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”

এই মধ্যে বাংলাদেশকে তিনটি টার্ফ বরাদ্দ দিয়েছে ফিফা। বিভিন্ন প্রকল্প থেকে আরও বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন সালমান। তবে জাতীয় দলের উন্নতির জন্য ঘুরেফিরে সেই ক্লাব ও তৃণমূল ফুটবলের দিকে দৃষ্টির দেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন।

“তিনটি টার্ফ খুব দ্রুতই চলে আসবে এবং আমি আশা করি, তারা আরও বেশি চাইবে। কেননা, বাংলাদেশের মতো দেশ…যেখানে প্রচুর বৃষ্টি হয়, এই ধরনের টার্ফ সারাবছর ব্যাপী ফুটবল চালিয়ে নিতে সাহায্য করবে। যদি তাদের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো অনুরোধ থাকে, তাহলে আমি তা পূরণের চেষ্টা করব।”

“সব দেশেরই উত্থান-পতন আছে। কখনও ফুটবলে আপনি প্রতিভাবান প্রজন্ম পাবেন, কখনও পাবেন না। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আপনি কিভাবে দুঃসময়ের বলয় থেকে নিজেকে তুলে আনবেন এবং পুনরায় নিজেকে তৈরি করবেন।”

“ফুটবল ফেডারেশন এবং ক্লাবগুলোর কিছু দায়িত্ব আছে কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার। আপনি কখনও আশা করতে পারেন না, ফুটবল ফেডারেশন একাডেমি চালাবে। এটা ক্লাবের পক্ষ থেকে আসতে হবে। ক্লাবগুলোই তাদের নিজেদের মতো করে বয়সভিত্তিক লিগ চালু করতে পারে। মূল দলের চেয়ে ক্লাবগুলোর তৃণমূল পর্যায়ে দৃষ্টি দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।”