নেইমার-কাভানি-এমবাপের গোলে পিএসজির দুর্দান্ত জয়

বরাবরের মতোই দুর্দান্ত খেললেন আক্রমণভাগের তিন তারকা নেইমার, কিলিয়ান এমবাপে আর এদিনসন কাভানি। আন্ডারলেখটকে তাই তাদের মাঠেই উড়িয়ে দিল পিএসজি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2017, 08:38 PM
Updated : 18 Oct 2017, 10:13 PM

অসংখ্য সুযোগ তৈরি করা তিন ফরোয়ার্ডের একটি করে গোল আর বদলি হিসেবে নামা আনহেল দি মারিয়ার লক্ষ্যভেদে বেলজিয়ামের দলটিকে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘বি’ গ্রুপে শতভাগ সাফল্যের ধারা ধরে রাখল উনাই এমেরির দল। গোলের আরও সুযোগ নষ্ট না করলে বুধবার রাতে আরও বড় জয় পেত ফরাসি দলটি।

ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় পিএসজি। ইতালিয়ান মিডফিল্ডার মার্কো ভেরাত্তির বাড়ানো বল ডি-বক্সে ডান দিকে ধরেন এমবাপে। ফরাসি এই ফরোয়ার্ড নেইমারদের ক্রস না বাড়িয়ে দুরূহ কোণ থেকেই গোলরক্ষকের পায়ের নিচ দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে।

২৪তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সহজ সুযোগ নষ্ট হয় পিএসজির। প্রতিপক্ষের ব্যাকপাস যখন এমবাপে ধরে ফেলেন, সামনে শুধু গোলরক্ষক মাটস সেলস। কাটানোর মুহূর্তে বল এমবাপের পা থেকে সরিয়ে দেন তিনি। ফিরতি বলে নেইমারের গড়ানো শট একটুর জন্য বাঁ পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

আক্রমণভাগের তিন তারকার ছোঁয়ায় ৪৪তম মিনিটে অবশেষে ব্যবধান বাড়ে। নেইমারের জোরালো উঁচু শট কোনোমতে ফিরিয়েছিলেন গোলরক্ষক সেলস। বল ডানে এমবাপের কাছে যেতেই হেডে পাঠান ছোটো ডি-বক্সে থাকা কাভানিকে। উরুগুয়ের স্ট্রাইকারও প্রথম সুযোগেই হেডে ফাঁকা জালে বল পাঠিয়ে দেন।

প্রথমার্ধে দুটো আধাআধি সুযোগ এসেছিল স্বাগতিকদের সামনে। তবে গোলরক্ষক আলফুঁস আরিওলার দৃঢ়তায় কোনো বিপদ হয়নি পিএসজির।

দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে নেইমার-এমবাপে-কাভানি ত্রয়ীতে আবার গোলের সুযোগ আসে। নেইমারের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে এমবাপে বল বাড়িয়েছিলেন ডানে থাকা কাভানিকে। বুক দিয়ে বল নামিয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই স্ট্রাইকারের নেওয়া জোরালো শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও বাধা পায় ক্রসবারে।

৫৩তম মিনিটে ডান দিক থেকে জাতীয় দল সতীর্থ দানি আলভেসের মাপা ক্রসে নেইমারের হেড একটুর জন্য যায় বাঁ পোস্টের বাইরের দিয়ে।

ছয় মিনিট পর সুযোগ নষ্ট করেন কাভানি-এমবাপে। প্রথমে কাভানি ঠিকমতো শট নিতে না পারায় ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। বল পেয়ে এমবাপে কাছ থেকেও শট নিলেন ক্রসবারের উপর দিয়ে।

৬৬তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যান শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলা নেইমার। ফ্রি-কিকে ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড বুদ্ধিদীপ্ত গড়ানো শট নেন। রক্ষণ দেয়াল তৈরি করা খেলোয়াড়রা বরাবরের মতো লাফিয়ে ওঠায় বল পায়ের নিচ দিয়ে চলে যায় জালে।

৭৯তম মিনিটে হেনরি ওনিয়েকুরুর শট ক্রসবার না ফেরালে ব্যবধান কমাতে পারতো আন্ডারলেখট। তিন মিনিট পর গতিতে এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে কাছ থেকে এমবাপের নেওয়া নিচু শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট আগে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে পাঠিয়ে বড় জয় নিশ্চিত করেন কাভানির বদলি হিসেবে নামা দি মারিয়া।

আগের দুই ম্যাচে সেল্টিককে ৫-০ ও বায়ার্ন মিউনিখকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া পিএসজি তিন ম্যাচে পুরো ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল। আগের দুই ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখ ও সেল্টিক – দুই দলের কাছেই ৩-০ গোলে হারা আন্ডারলেখট রইল তলানিতেই।

‘বি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে নিজেদের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় সেল্টিককে ৩-০ গোলে হারানো বায়ার্ন মিউনিখ ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। তিন ম্যাচে স্কটিশ দল সেল্টিকের পয়েন্ট ৩।

বুধবার রাতে কাম্প নউয়ে ‘ডি’ গ্রুপে গ্রিক ক্লাব অলিম্পিয়াকোসকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। প্রথমার্ধে আত্মঘাতী গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল করার পাশাপাশি লুকাস দিনিয়ের গোলে অবদান রাখেন লিওনেল মেসি।

গ্রুপের অন্য ম্যাচে স্পোর্তিং লিসবনকে ২-১ গোলে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইতালির চ্যাম্পিয়ন ইউভেন্তুস। ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্পোর্তিং। অলিম্পিয়াকোসের পয়েন্ট শূন্য।

‘এ’ গ্রুপে পর্তুগালের আরেক দল বেনফিকাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে জোসে মরিনিয়োর দল। ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় সিএসকে মস্কোর মাঠ থেকে ২-০ গোলের জয় নিয়ে ফেরা বাসেল।

‘সি’ গ্রুপের দুটি ম্যাচই ড্র হয়েছে। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে রোমাঞ্চকর ম্যাচে রোমার সঙ্গে ৩-৩ ড্র করা চেলসি ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে ইতালির রোমা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।

কারাবাখের মাঠে গোলশূন্য ড্র করা আতলেতিকো মাদ্রিদ ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে।