‘কৃষ্ণা থাকলে জিতত বাংলাদেশ’

পিছিয়ে থাকা অবস্থায় কৃষ্ণা রানী সরকার লালকার্ড পাওয়ায় পরও দুই গোল করে এগিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ দিকে দুই গোলে তা হয়নি। ম্যাচ শেষে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন দাবি করলেন, অধিনায়ক লালকার্ড না পেলে জিতত তার দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদক থাইল্যান্ডের চোনবুরি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2017, 03:33 PM
Updated : 17 Sept 2017, 03:43 PM

থাইল্যান্ডের চোনবুরির ইনিস্টিটিউট অব ফিজিক্যাল এডুকেশন ক্যাম্পাস স্টেডিয়ামে রোববার এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে লড়াই করে ৩-২ গোলে হারে বাংলাদেশ।

৩৩তম মিনিটে বলের নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে আঘাত করে লালকার্ড পান কৃষ্ণা। অধিনায়ককের অবশ্য সমালোচনা করেননি কোচ।

“যদি কৃষ্ণা থাকত, তাহলে আমি মনে করি, আজকের ম্যাচ আমরা জিততে পারতাম। ১০ জন নিয়ে শেষ পর্যন্ত খেলা কঠিন আর আমরা গোলগুলো খেয়েছি শেষ দিকে। ১১ জন থাকলে আমরা ম্যাচটা জিততে পারতাম।”

“(কৃষ্ণার লালকার্ড) আমরা সঠিকভাবে জানি না। ওখানে যে কি হয়েছিল, সেটা আমিও পরিষ্কার দেখতে পারেননি। দেখলাম কৃষ্ণা ড্রিবল করছে…তবে রেফারি কাছেই ছিলেন। তিনি সব দেখেছেন এবং লালকার্ড দিয়েছেন।”

অষ্টম মিনিটে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ৪৫তম মিনিটে শামসুন্নাহারের পেনাল্টি গোলে সমতায় ফেরে। গোছালো ফুটবল খেলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে মনিকা চাকমার গোলে এগিয়ে যায়। কিন্তু শেষ দিকে দুই গোলে স্বপ্ন ভাঙে। এ জন্য গোলরক্ষক মাহমুদা আক্তার আর  মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তারের দায় দেখছেন কোচ।

“অবশ্যই আমরা জয়ের স্বপ্ন দেখছিলাম। মেয়েরা যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের সবারই মনে হচ্ছিল ম্যাচটা আমাদের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু ছোটছোট ভুলগুলোই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।”

“গত ম্যাচে মাহমুদা অনেক ভালো গোলকিপিং করেছে। কিন্তু এ ম্যাচে তার ভুলটা মেনে নেওয়া যায় না। দ্বিতীয় গোলের সময় বলটা সানজিদা ক্লিয়ার করতে পারত কিন্তু সে দেরি করায় ওরা সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে।”

শেষ দিকে মেয়েদের মনোযোগ হারানোয় অভিজ্ঞতার ঘাটতি দেখছেন কোচ। তবে টানা তিন হার দিয়ে থাইল্যান্ড সফর শেষ করলেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শিষ্যদের খেলা নিয়ে খুশি তিনি।

“অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণে এগুলো হতে পারে। একজন খেলোয়াড় কম হওয়ায় শেষ দিকে হয়ত অনেক চাপ নিয়ে ফেলেছে মেয়েরা। অস্ট্রেলিয়া শক্তিশালী দল…তাদের বিপক্ষে খেলা অনেক চাপের। সে কারণেও মেয়েরা ক্লান্ত হতে পারে।”

“তবে গতকাল আমি বলেছিলাম, শেষ ম্যাচটি হবে শিহরণ জাগানো। মেয়েরা ভালো খেলেছে। নিজেদের শতভাগ দিয়েছে। আসলে খেলা সমানতালেই হচ্ছিল। কিন্তু কৃষ্ণা লালকার্ড পাওয়ায় পর আমাদের চাপ নিয়ে খেলতে হয়েছে। তবে আমি মনে করি, মেয়েরা ভালো করেছে।”

উন্নতির জন্য কৃষ্ণাদের আরও সুযোগ-সুবিধার দাবিও ম্যাচ শেষ প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে রাখেন রব্বানী।

“মেয়েরা জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে ফুটবল খেলেছে, সেটা অবশ্যই আমাদের জন্য আশা জাগানিয়া। এদের যদি পরিচর্যা করা হয়, সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তারা অনেক কিছু করতে পারবে।”

প্রথম জয় পাওয়া অস্ট্রেলিয়া কোচ রিয়ানে ডোয়ার বাংলাদেশের বিশেষ করে গোলরক্ষক মাহমুদার প্রশংসা করেন।

“ফল পেতে হলে আমাদের গোলের দরকার ছিল। পিছিয়ে থাকার সময় আমরা দুইটা বদলি নামিয়েছিলাম; তারা ধারাবাহিকভাবে চাপও দিচ্ছিল। কিন্তু তাদের গোলরক্ষক কিছু বিশ্বমানের সেভ করেছে।”

“বাংলাদেশের আগের দুই ম্যাচ আমরা দেখেছিলাম। জানতাম তারা কেমন খেলবে। শারীরিকভাবে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা অনেক উন্নতি করেছে। এই পর্যায়ের টুর্নামেন্টে তাদের আরও খেলতে হবে।”