জাপানের বিপক্ষে নিজেদের খেলাটা খেলতে চায় বাংলাদেশ

উত্তর কোরিয়া ম্যাচে তালগোল পাকিয়ে বিশাল ব্যবধানে হারের পর সামনে আরেক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ জাপান। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় ম্যাচে এবার শুরুতেই ভেঙে পড়তে চায়না বাংলাদেশ মেয়েরা। শিষ্যরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলেই সন্তুষ্ট কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরথাইল্যান্ডের চোনবুরি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2017, 11:56 AM
Updated : 13 Sept 2017, 11:56 AM

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটি মেয়েরা খেলবে চোনবুরির ইনিস্টিটিউট অব ফিজিক্যাল এডুকেশন ক্যাম্পাস স্টেডিয়ামে। বুধবার সেখানেই প্রস্তুতি সেরেছে দল।

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান রানার্সআপ জাপান ২০১৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে সেরা ও ২০১৬ সালে রানার্সআপ হয়। থাইল্যান্ডের এই টুর্নামেন্ট তারা যাত্রা শুরু করেছে গ্রুপের আরেক শক্তিশালী দল অস্ট্রেলিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে। অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে উত্তর কোরিয়ার কাছে উড়ে গেছে ৯-০ ব্যবধানে। কোচের আশা, প্রথম ম্যাচে ভয় কাটিয়ে ‍কৃষ্ণা-মৌসুমীরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা মেলে ধরবে।

“গত ম্যাচেও আমরা চেয়েছিলাম মেয়েরা স্বাভাবিক খেলাটা খেলবে, কিন্তু পারেনি। বাস্তবতা হচ্ছে আমরা কাদের বিপক্ষে খেলছি। আমরা সবাই শঙ্কিতও ছিলাম যে, উত্তর কোরিয়ার যে শক্তি, তাতে আমাদের মেয়েরা নিজেদের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে পারবে কিনা। দেখলাম যে তারা পারেনি। কারণ আমরা কখনই এরকম দলের বিপক্ষে খেলিনি। প্রথম ম্যাচে তারা আবেগ ধরে রাখতে পারেনি। এ কারণে তারা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেনি।”

“আমাদের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় কৃষ্ণা, স্বপ্না, নার্গিস স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি। আমরা চাইছি, তারা যেন তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারে। জাপান বিশ্বসেরা, কিন্তু মেয়েদের বলেছি, তোমরা তোমাদের খেলাটা খেলো। মাঝে দুই দিন সময় পেয়েছি। এই দুই দিন মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছি তারা যেন তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারে এবং এটাই আমাদের লক্ষ্য।”

কোচ রব্বানীর আশার জায়গা দুই দফা জাপান সফরে খেলা ১০টি প্রস্তুতি ম্যাচ। সাকাই গ্রিন ফুটবল ফেস্টিভালে সাত ম্যাচে ৫ জয় এবং একটি করে হার ও ড্র। পরের সফরে তিন ম্যাচে এক জয়, দুই হার। তবে ওই প্রস্তুতি ম্যাচের ফলের চেয়েও জাপানের খেলার ধরণ সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা হয়েছে। ওই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর অপেক্ষায় কোচ।

“সাকাই একাডেমির সঙ্গে আমরা যে দুইটা ম্যাচ খেলেছি, দেখেছি তারা দ্রুত গতির ফুটবল খেলে। ছোট ছোট পাসে খেলে এবং তাদের রানিংও খুব ভালো। কিন্তু আমরা এবার যাদের মুখোমুখি হব তারা জাতীয় দল। তবে এ ম্যাচে আমাদের আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। কেননা, জাপানের অনূর্ধ্ব-১০, ১২, ১৪, ১৬, এরকম বয়সভিত্তিক অনেক দল আছে এবং তাদের সবার খেলার ধরণ একই।”

মাঝের দুই দিনে মেয়েদের ক্লাস নেওয়া হয়েছে। অন্য প্রস্তুতিও ছিল। রব্বানী জানালেন, কৃষ্ণাদের মানসিক উন্নতি নিয়ে কাজ করার কথা।

“টিউটোরিয়াল ক্লাস হয়েছে, থিওরিটিক্যাল ক্লাস হয়েছে। সেখানে আমরা কিছু ফান মজার বিষয় ছিল, যাতে মেয়েরা উজ্জীবিত হতে পারে। মেয়েরা যেহেতু প্রথম ম্যাচের হারের পর মানসিকভাবে হতাশ, সেখান থেকে তারা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে, এ সমস্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করেছি।”

সেরা একাদশে গোলরক্ষকের জায়গায় পরিবর্তন আসতে পারে। রুকসানার জায়গায় শুরু থেকে খেলতে পারেন দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য গোলরক্ষক মাহমুদা খাতুন। শেষ মুহূর্তে দল গোছানোর সঙ্গে কোচ গুরুত্ব দিচ্ছেন ম্যাচে মনোযোগ ধরে রাখা নিয়েও।

“খেলায় যেকোনো কিছুই হতে হবে। কিন্তু আগেও বলেছি-আমাদের প্রথম লক্ষ্য স্বাভাবিক খেলাটা খেলার। যার যার ব্যক্তিগত খেলা, সেটা খেলতে হবে। শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলা-তাই মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। কেননা, প্রথম ম্যাচে মনোযোগ ধরে রাখতে না পারায় আমরা অনেক গোল খেয়েছি।”