ঘাবড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা

উত্তর কোরিয়া ম্যাচের আগের দিন চোনবুরির সৈকতে যখন কৃষ্ণা-স্বপ্নারা হালকা অনুশীলনে ব্যস্ত, তখন দলের স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলিও ছিলেন। আলাপচারিতার এক ফাঁকে জানান, এরা খুবই সাহসী মেয়ে। ৯-০ গোলে হারা ম্যাচে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। শুরু থেকে সাহসটা উধাও।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরথাইল্যান্ডের চোনবুরি থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Sept 2017, 04:59 AM
Updated : 12 Sept 2017, 06:57 AM

লড়াইয়ের প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির মিল না থাকায় সংবাদ সম্মেলনে কোচ গোলাম রব্বানী প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হন। বড় ব্যবধানের হারের চেয়ে সেখানে খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষা নিয়েও ছিল নানা অভিযোগ। তবে সব অভিযোগের উত্তর যেন দলের নির্ভরযোগ্য ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্নাই দিয়ে দিলেন। জানালেন, শক্তিশালী প্রতিপক্ষকের মুখোমুখি হয়ে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তারা।

“ভয় তো কাজ করেছেই। প্রথমার্ধের পর কোচের নির্দেশনা ছিল ধরে খেলার। কিন্তু আমরা সেটাও করতে পারিনি।”

প্রতিযোগিতার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়াকে সমীহ করা স্বাভাবিক। কিন্তু ভয়কে জয় করে লড়াকু খেলার প্রত্যয় ঘুরেফিরে শোনা গেছে মেয়েদের মুখে। কিন্তু ম্যাচে তার উল্টোটা। ফরোয়ার্ডরা উত্তর কোরিয়ার গোলমুখে কোনো আক্রমণ শানাতে পারেননি।

মাঝমাঠও ছিল ছন্নছাড়া। রক্ষণভাগও ছিল না জমাট। ডিফেন্ডার শামসুন্নাহারের দাবিতেও ভয়ের বিষয়টি বেশ স্পষ্ট।

“আমরা কাদের সঙ্গে খেলেছি, সেটা বুঝতে হবে। প্রথমার্ধে চার গোল খাওয়ার পরও কোচ বলেছেন- ব্যাপার না। তোমারা স্বাভাবিক খেলাটা খেলার চেষ্টা করো। আমরা সেই চেষ্টাই করেছি।”

আঞ্চলিক বাছাইয়ে সেরা হয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্বে উঠে আসা মেয়েরা উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ‘স্বাভাবিক খেলাটা’ খেলতে পারেনি। শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণে ছিল পিছিয়ে। শারীরিক সামর্থ্যে এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইটা তাই জমেনি। ডাগআউট থেকে কোচ রব্বানী আর বেঞ্চে বসে স্মলি নির্দেশনা দিয়েছেন অনেক, কিন্তু কাজ হয়নি।

“প্রথমার্ধে চার গোল খেলেও স্যার এসে সান্ত্বনা দিয়েছেন। বলেছেন, তোমারা তোমাদের মতো করে খেলে যাও।”

মারিয়া মাণ্ডা অবশ্য ঘাবড়ে যাওয়ার কথা বলছেন না। তবে জানালেন শক্তিশালী উত্তর কোরিয়ার সব দিক থেকে এগিয়ে থাকাটা।

“আমরা ভয় পাইনি। আমরা তো আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু শারীরিক শক্তিতে ওরা এগিয়ে। রানিংও ভালো। এ কারণে আমরা ওদের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারিনি। দেখা যাক, এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা পরের ম্যাচে ভালো করতে পারি কিনা।”

আগামী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ জাপান, যারা অস্ট্রেলিয়াকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে। উত্তর কোরিয়া ম্যাচের ‘শিক্ষা’ কাজে লাগাতে না পারলে, ভয়টা দূর করতে না পারলে থাকবে আরেকটি বড় হারের শঙ্কা।