সোমবার বাংলাদেশ সময় বেলা ৪টায় থাইল্যান্ডের চোনবুরি স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচটি শুরু হবে।
আগের দিনের মতো রোববারও সকাল-বিকাল দুইবেলা অনুশীলন সেরেছে বাংলাদেশ। সকালে অবশ্য চোনবুরি সৈকতে হালকা স্ট্রেচিং, পানিতে মিনিট বিশেক দাপাদাপি ছাড়া কিছু ছিল না। বিকেলে হয়েছে ঘাম ঝরানো অনুশীলন।
শক্তির দিক থেকে ঢের এগিয়ে থাকা উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ভালো কিছু করার লক্ষ্যে অনুশীলনের পাশাপাশি আরও দুই দিকে বাড়তি মনোযোগ বাংলাদেশ কোচের। প্রথমত দলীয় খেলা খেলতে পারা, দ্বিতীয়ত মনের শক্তিটা কখনই না হারানো। কৃষ্ণাদের খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলতে পারছেন, তার শিষ্যরা যে কোনো পরিস্থিতি সামালানোর জন্য প্রস্তুত।
“গত সাফেও এই মেয়েদের অনেকে খেলেছে। এই ব্যাচটা এক সঙ্গে শারীরিক-মানসিকভাবে বেড়ে উঠেছে। টেকনিক্যালি এবং ট্যাকটিক্যালিও তারা এখন অনেক ভালো অবস্থানে আছে। প্রত্যেক মাসে যে পরীক্ষাগুলো হয়েছে-সেখানে তারা ভালো করেছে। এখন আমরা যাদের বিপক্ষে খেলব, পুরোপুরি না হলেও মোটামুটি তাদের পর্যায়ে আছে। আমার বিশ্বাস একটা দল হয়ে মেয়েরা খেলবে।”
গত এক বছরে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে ২২টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এই প্রস্তুতি ম্যাচগুলোয় ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্না করেন ১৬ গোল; গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের রানার্সআপ হওয়ায় তার অবদান ৫ গোল। আক্রমণভাগে স্বপ্নার সঙ্গী কৃষ্ণা রানি সরকার ও সানজিদা খাতুন। মিডফিল্ডে মিশরাত জাহান মৌসুমীর সঙ্গে আছেন মারিয়া মাণ্ডা ও মনিকা চাকমা। শামসুন্নাহার-মাশুরা-শিউলি আজিম থাকায় রক্ষণভাগ মোটামুটি গোছালো বলা যায়। প্রথম ম্যাচে কোচের চাওয়া তার শিষ্যরা মনের শক্তিটা ধরে রাখুক।
“মূল কথা হচ্ছে মেয়েদের মানসিকভাবে এই বিশ্বাস থাকতে হবে যে, আমরা খেলতে পারি এবং আমরা খেলতে পারব। ওরা যেহেতু অনূর্ধ্ব-১৬ দল (বয়স কম), আশা করব তাদের যেন মানসিক বিচ্যুতি না ঘটে। সেটা না হলে আশা করি আমরা ভালো কিছু করতে পারব।”
“আমরা আসলে ওই ভাবে কোনো ফল চাওয়ার কথা উল্লেখ করতে চাইছি না। আমরা কঠোর অনুশীলন করেছি.. তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলব, এটাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। আসলে ভালো খেললে সবকিছুই সম্ভব।”
“ওরা শারীরিকভাবে খুবই শক্তিশালী; এই প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন। ওরা ছোট থেকে ফুটবল খেলে। টেকনিক্যালি ও ট্যাকটিক্যালি অনেক এগিয়ে। তবে আশার কথা হচ্ছে, আমরা গত এক বছর অনেক পরিশ্রম করেছি। বড় দেশগুলোর সঙ্গে খেলে আমাদের আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে। টিম কম্বিনেশনও ভালো হয়েছে।”
“গত এক বছর মেয়েদের সঙ্গে যে কাজ করা হয়েছে, সেখানে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে খেলতে হবে। প্রতিপক্ষের পায়ে বল থাকলে কিভাবে, চাপে পড়লে কিভাবে, বল পায়ে থাকলে কিভাবে খেলতে হবে-এগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসলে কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে খেলতে হবে সেটা সঙ্গে মেয়েরা এখন অভ্যস্ত।”
চ্যাম্পিয়ন দলের কোচের মতোই উত্তর কোরিয়ার কোচ সং সুং গোওন জানালেন বাংলাদেশের কাছে হারটা কোনোভাবেই কাম্য নয় তার।
“এরই মধ্যে আমি আপনাদের বলেছি, বাংলাদেশ দল সম্পর্কে আমার কোনো তথ্য জানা নেই। তারা কেমন খেলবে তা অনুমান করতে পারব না। আমিও প্রথমবারের মতো এই প্রতিযোগিতায় উত্তর কোরিয়া দলের কোচ হিসেবে এসেছি। তবে হ্যাঁ, আমরা যদি তাদের কাছে হারি, তাহলে সেটা বড় অঘটনই হবে।”