এবারই প্রথম সার্ভিসেস দলগুলোর বাইরে স্বাধীনতা কাপ কাবাডিতে খেলল জেলার দলগুলো। প্রাথমিক পর্ব পেরিয়ে আসা মৌলভীবাজার, দিনাজপুর ও বরিশাল জেলা চূড়ান্ত পর্বে সেভাবে আলো ছড়াতে পারেনি। কিন্তু নেছার, মাসুদ, দেলোয়াররা অনেক কিছু পাওয়ার আশা নিয়ে ফিরেছেন ঘরে।
তিন জেলার মধ্যে একমাত্র মৌলভীবাজারই চূড়ান্ত পর্বে জয়ের স্বাদ পেয়েছে; প্রাথমিক পর্বের চ্যাম্পিয়নরা জিতেছে ‘খ’ গ্রুপের ম্যাচে দিনাজপুরের বিপক্ষে ৪৫-২০ পয়েন্টে। রানার্সআপ হয়ে আসা দিনাজপুর ও তৃতীয় দল হিসেবে টিকেট পাওয়া বরিশাল জেলার চূড়ান্ত পর্বের খেরোখাতায় জয়ের আঁচড় পড়েনি।
কিন্তু মিরপুরের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আলোর বন্যায় খেলার আনন্দও কম নয় ঢাকার বাইরে থেকে আসা খেলোয়াড়দের। চার ম্যাচে যথাক্রমে ৯৪-১৭, ৪৯-২৪, ৪৯-১৩, ৩৯-২৩ ব্যবধানে হারা বরিশালের রেইডার নেছার আহমেদ কথাতে সে আনন্দের প্রতিফলন।
দলটির অধিনায়ক মাসুদ রানাও সুর মেলালেন সতীর্থের সঙ্গে, “জেলায় আমরা ভালো খেলি। কিন্তু এসে দেখলাম আমরা কতটা পিছিয়ে। তবে এই অভিজ্ঞতা অবশ্যই পরে খেলতে এলে কাজে লাগবে।”
অভিজ্ঞতা অর্জনের উচ্ছ্বাস জানানোর পর নেছার, মাসুদরা নেমে আসেন বাস্তবের মাটিতে। এই বাস্তবতা ভালোভাবে জানান টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও জাতীয় দলের সাবেক কোচ আব্দুল জলিলেরও। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে অকপটে তিনিও জানিয়েছেন সীমাবদ্ধতার কথা।
“এবার আমরা তাদেরকে সত্যিই তেমন কিছু দিতে পারিনি। এনএসসি ও ক্রীড়া পল্লীতে থাকার বন্দোবস্ত করেছি। খাওয়া আর যাতায়াতের খরচটা দিচ্ছি। আগে ওরা এটাও পেত না। এবার এতটুকু পাওয়াতেই ওরা খুশি। তবে, দেওয়া যখন শুরু করতে পেরেছি, এই কমিটি সামনে আরও দিতে পারবে।”
এই চাকরি আর একটু ভালো করে বাঁচার আশা নিয়ে ঢাকায় খেলতে আসার কথা বললেন নেছার, “খেলে তো আমরা টাকা পাই না। কিন্তু বাহিনীগুলোতে একটা চাকরি পাওয়ার স্বপ্ন নিয়েই আমরা মূলত এখানে খেলতে এসেছি।”
মৌলভীবাজারের কোচ দেলোয়ার জানালেন জেলা পর্যায়ে কাবাডির অবস্থাটা, “সবাই এই খেলায় আসতে চায় না। ফুটবল, ক্রিকেটে সব ধরনের সুবিধা আছে। আর্থিক নিশ্চয়তা আছে। কিন্তু এখানে নেই। যদি কেউ ভালো খেলে, তাহলে পুলিশ, সেনাবাহিনীতে একটা চাকরি পাবে, এতটুকুই।”
বরিশাল অধিনায়ক মাসুদের কণ্ঠে ভালোবাসার কাবাডিকে পেশা হিসেবে নিতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা, “জেলা থেকে ঢাকায় খেলতে এসে ভালো লাগছে। ভালোবাসি বলেই এই খেলার সঙ্গে আছি। কিন্তু যদি ফুটবল, ক্রিকেটের মতো কাবাডিকে আমরা পেশা হিসেবে নিতে পারতাম, তাহলে সত্যিই ভালো হত।”