এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সেমি-ফাইনালে এগিয়ে যাওয়ার পর দুই গোল হজম করে এফসি পচেয়নের কাছে হারে চট্টগ্রাম আবাহনী। দারুণ একটি সুযোগের অপমৃত্যুতে হতাশ মামুনুল।
“আক্ষেপ তো অবশ্যই থাকবে। এখানে যদি ফাইনাল খেলতে পারতাম, এটা শুধু আমার বা চট্টগ্রামবাসীর জন্য নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্যই বড় বিষয় হতো। খারাপ লাগছে যে, ফাইনাল খেলতে পারব না। নিজের শহরে হওয়া টুর্নামেন্টের ফাইনালে দর্শক হয়ে থাকাটা খুব কষ্টের।”
“এতটাই খারাপ লেগেছে, গতকাল বাড়িতে আসিনি। আজ এলাম। আরও খারাপ লাগার কারণ, আমরা তো নিজের জন্য খেলি না, দেশের জন্য খেলি। সাফল্য পেলে সবার ভালো লাগত। আমাদেরও ভালো লাগত।”
শুরুর গোলটা ধরে রাখতে পারলে মামুনুলের কথাগুলো হতে পারত তৃপ্তির সুরে জড়ানো। কেন হলো না? ২৮ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারও জানালেন, ব্যর্থতার কারণ একটা দুটো নয়, অনেক!
“একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, টুর্নামেন্টের সেরা দলটার কাছেই হেরেছি আমরা। তাদের সমন্বয়, বল নিয়ে তারা কতটা কমফরটেবল, সেটা আপনারা দেখেছেন। আর এটা যদি আমাদের লিগের দলটাও হতো, তাহলে অন্য কথা ছিল কিন্তু এটা নতুন একটা দল। নতুন শুরু করা।”
“তারপরও আমরা শুরুর ২০-২৫ মিনিট চাপ দিয়েছি। কিন্তু আমাদের কপাল খারাপ; ওই পেনাল্টিটা হয়ে গেলো। আমরাও একটা পেনাল্টি পেলাম না। আমাদের বিরুদ্ধে যে পেনাল্টি দেওয়া হয়েছে, সেটা কিন্তু পেনাল্টি না। কারণ ওখানে কাউকে চার্জ করা হয়নি।”
৭৪তম মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে বল দখলের এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের হাতে বল লাগলেও মামুনুলদের আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। এ নিয়েও আক্ষেপ আছে তার।
“খেলার মানে ওরা অবশ্যই আমাদের চেয়ে এগিয়ে। কিন্তু আমরাও যে লড়াই করিনি, তা নয়। আমাদের গোলগুলো যদি হয়ে যেত, পেনাল্টি যদি পেতাম, তাহলে ২-২ হত। আমাদের সুযোগ থাকত।”
“(টিম গেম) না, সেটা হয়নি। বিশেষ করে রক্ষণে আমরা ভালো করতে পারিনি। নিখুঁত ডিফেন্স করতে পারিনি। এ পর্যন্ত আমরা যতগুলো গোল খেয়েছি, তা কোনো না কোনোভাবে ডিফেন্সের ভুলে। আরও একটা ভুল ছিল, আমাদের আরও নীচে নেমে ডিফেন্স করা। আরেকটু ওপরে থাকতে পারতাম, তাহলে মাঝমাঠে ওদের রাখতে পারতাম এবং ওদের ওপরও চাপ থাকত।”
“দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল খেয়ে যাওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না। মানতেই হবে, এটা চ্যাম্পিয়ন টিমের মতো খেলা না। আগের দিনও নেপালের দলের বিপক্ষে তিন মিনিটের মাথায় গোল খেলাম; এগুলো চ্যাম্পিয়ন টিমের লক্ষ্য না।”
সম্মিলিতভাবে সেরাটা নিংড়ে দিতে না পারায় ক্লাব ক্যারিয়ারের বাঁকে বাঁকে অনেকবার বঞ্চিত হতে হয়েছে মামুনুলকে। আবাহনীর হয়ে কোটি টাকার সুপার কাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে হেরেছেন। গত লিগেও চট্টগ্রাম আবাহনী হয়েছে রানার্সআপ। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি ভারতের আইএফএ শিল্ডের ফাইনালেও শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের হয়ে।
এত কষ্টের ভীড়ে মামুনুলের জন্য আরও বেশি কষ্টের দেশের ফুটবলের পতাকা নিজের শহরে হওয়ার প্রতিযোগিতায় টেনে নিতে না পারাটা।
“আমরা যদি এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে পারতাম, তাহলে আমাদের সার্বিক ফুটবলের ধারাবাহিকতা বেড়ে যেত। জাতীয় দলে ভালো ফল পাওয়ার জন্য খেলোয়াড়রা আরও মরিয়া হয়ে উঠত।”