বার্সাকে উড়িয়ে শেষ আটের পথে পিএসজি

লিওনেল মেসি-লুইস সুয়ারেসদের বলতে গেলে খুঁজেই পাওয়া গেল না। ম্যাচ জুড়ে শুধুই আনহেল দি মারিয়া-এদিনসন কাভানিরা। এই দুই ‘বার্থডে বয়’ এর সঙ্গে ছন্দে থাকা ইউলিয়ান ড্রাক্সলার খেললেন দাপুটে ফুটবল। আর তাতে মধুর প্রতিশোধ নিল পিএসজি, প্রলেপ পড়লো ক্ষতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2017, 09:42 PM
Updated : 15 Feb 2017, 01:12 PM

প্যারিসে মঙ্গলবার রাতে রীতিমত উড়ে গেল বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের ৪-০ গোলে হারিয়েছে পিএসজি! পিএসজির রক্ষণভাগে যা একটু আলো ছড়ালেন নেইমার। কিন্তু অদম্য হয়ে ওঠা দি মারিয়াদের সামনে তা কোনো পার্থক্যই গড়তে পারেনি।

২০১২-১৩ মৌসুমে এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল বার্সেলোনার। সেবার সেমি-ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখ নিজেদের মাঠ অ্যালিয়াঞ্জ আরেনায় ৪-০ গোলে হারিয়েছিল দলটিকে।

পিএসজির দারুণ জয়ে জোড়া গোল করেন আর্জেন্টিনার তারকা মিডফিল্ডার দি মারিয়া। একবার করে বল জালে জড়ান কাভানি ও ড্রাক্সলার।

চতুর্থ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান কাভানি; কিন্তু দি মারিয়ার ক্রস ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি উরুগুয়ের স্ট্রাইকার। চার মিনিটের ব্যবধানে আরও দুবার মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের পরীক্ষা নেয় স্বাগতিকরা। শুরুতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ মুঠোয় নেয় উনাই এমেরিরের শিষ্যরা।

টানা আক্রমণ করে যাওয়া পিএসজি সাফল্য পায় অষ্টাদশ মিনিটে। ২১ গজ দূর থেকে অসাধারণ ফ্রি-কিকে রক্ষণ দেয়ালের উপর দিয়ে বল জালে পাঠান দি মারিয়া। নিজের জায়গা থেকে নড়ারই সময় পাননি টের স্টেগেন।

বার্সেলোনা তাদের প্রথম সুযোগ পায় ২৭তম মিনিটে। ব্রাজিলিয়ান তারকার রক্ষণচেরা পাস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়েছিলেন আন্দ্রে গোমেস। কিন্তু গোলরক্ষকের সোজাসুজি শট মেরে বসেন তিনি।

খানিক বাদে বার্সেলোনার ত্রাতা টের স্টেগেন। দুরূহ কোণ থেকে ড্রাক্সলারের জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান জার্মানির গোলরক্ষক। স্বদেশি মিডফিল্ডারের সামনে বেশিক্ষণ প্রতিরোধ ধরে রাখতে পারেননি টের স্টেগেন। ৪০তম মিনিটে মার্কো ভেরাত্তির পাস ধরে ডান দিক থেকে কোনাকুনি শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ড্রাক্সলার।

জানুয়ারিতে ভলফসবুর্গ থেকে আসা ড্রাক্সলার ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের হয়ে এই নিয়ে নয় ম্যাচ পাঁচ গোল করলেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও একই চিত্র; পিএসজির আক্রমণ ঠেকাতে ব্যস্ত জেরার্দ পিকে-সামুয়েল উমতিতিরা। এবারও প্রতিপক্ষকে আরও ঠিক করে বললে দি মারিয়াকে বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেনি তারা। ৫৫তম মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ-পায়ের বাঁকানো শটে স্কোরলাইন ৩-০ করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।

৭১তম মিনিটে গ্যালারিকে উল্লাসে মাতান কাভানি। বেলজিয়ামের ডিফেন্ডার থমাসের কোনাকুনি পাস পেয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় প্রথম শটেই টের স্টেগেনকে পরাস্ত করেন উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার। এবারের আসরে এটা তার সপ্তম গোল।

গত চার বছরে দুবার কাতালান ক্লাবটির কাছে হেরেই ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে ছিটকে পড়া পিএসজি এবার দৃশ্যপট পাল্টে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিল। সে লক্ষ্যে ঘরের মাঠে জিতে এগিয়ে রইলো তারা।

ফিরতি পর্বে নিজেদের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি-সামর্থ্য সবই আছে ২০১৪-১৫ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নদের। এই ব্যবধান ঘোচানো ভীষণ কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়।

দিনের অন্য ম্যাচে নিজেদের মাঠে কনস্তানতিনোস মিত্রুগ্লুর একমাত্র গোলে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়েছে বেনফিকা। ৫৮তম মিনিটে পিয়েরে-এমেরিক আউবামেয়াং পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ না হলে ড্র নিয়েই ফিরতে পারতো জার্মানির দলটি।