এমএসএনের গোল উৎসবে বার্সার প্রতিশোধ

লিগের শুরুতে বার্সেলোনাকে তাদেরই মাঠে গিয়ে হতবাক করে দিয়েছিল আলাভেস। প্রতিশোধের নেশায় ফিরতি পর্বে একসঙ্গে জ্বলে উঠলো বিশ্বসেরা 'এমএসএন' আক্রমণত্রয়ী। তাদের নৈপুণ্যে গোল উৎসব করল লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2017, 05:06 PM
Updated : 11 Feb 2017, 10:28 PM

শনিবার স্থানীয় সময় বিকালে আলাভেসের মাঠে ৬-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। জোড়া গোল করেন লুইস সুয়ারেস। একবার করে বল জালে পাঠান লিওনেল মেসি, নেইমার ও ইভান রাকিতিচ। অন্য গোলটি আত্মঘাতী।

সেপ্টেম্বরে কাম্প নউয়ে ২-১ গোলে জিতেছিল বর্তমানে লিগে দ্বাদশ স্থানে থাকা ক্লাবটি।

বার্সেলোনার বিপক্ষে শনিবার আলাভেসের শুরুটা ছিল বেশ আত্মবিশ্বাসী। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরুতে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ভালোই জবাব দিচ্ছিল তারা।

চতুর্থ মিনিটে নেইমারের বাড়ানো বল ধরে মেসির নীচু শট কোনোমতে ঠেকান গোলরক্ষক। পাল্টা আক্রমণে ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো শটে চেষ্টা চালান স্পেনের মিডফিল্ডার মার্কোস লরেন্তে। পঞ্চদশ মিনিটে ডি-বক্সের মধ্যে থেকে আলেইশ ভিদালের জোরালো শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে গেলে বার্সেলোনার আরেকটি সুযোগ নষ্ট হয়।

২৩তম মিনিটে প্রথমার্ধের সহজতম সুযোগটি নষ্ট করে আলাভেস। প্রতি-আক্রমণে দারুণ ক্ষিপ্রতায় ডিফেন্ডার লুকাস দিনিয়েকে পিছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে জোরালো শট নেন স্পেনের থিও এরনান্দেস। বল এগিয়ে আসা গোলরক্ষক মার্ক আন্ড্রে টের স্টেগেনের গায়ে লাগে। পরমুহূর্তে পাল্টা আক্রমণে আন্দ্রে গোমেসের কোনাকুনি শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক পাচেকো।

এনরিকের দলের গোলের অপেক্ষা শেষ হয় ৩৭তম মিনিটে। দারুণ গোছানো এক আক্রমণে ডান দিক থেকে ভিদালের ক্রসে কাছ থেকে প্রথম ছোঁয়াতেই জালে পাঠান সুয়ারেস।

তিন মিনিট পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নেইমার। বাঁ-দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢোকা সুয়ারেসের উদ্দেশে উঁচু করে বল বাড়িয়েছিলেন মেসি। পাচেকো এক হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করলে বল সুয়ারেসের মাথায় লেগে নেইমারের পায়ে এসে পড়েছিল।

দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে আবারও সহজতম সুযোগ হারায় স্বাগতিকরা। বাঁ-দিক থেকে এরনান্দেসের ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়েছিলেন রবের্ত সান্তোস। একমাত্র বাধা ছিল গোলরক্ষক; কিন্তু ক্রসবারের উপর দিয়ে উঁচিয়ে মারেন ভেনেজুয়েলার এই ফরোয়ার্ড।

৬০তম মিনিটে স্কোরশিটে নাম লেখান মেসি। সেই সঙ্গে জয়-পরাজয়ের সব অনিশ্চয়তাও একরকম শেষ হয়ে যায়। বাঁ-দিক থেকে নীচু শটে গোলরক্ষকের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠান তিনি।

পাঁচ মিনিটের মধ্যে আরও তিনবার আলাভেসের জালে বল জড়ায়।

৬৩তম মিনিটে মেসির পা থেকে এরনান্দেস বল কেড়ে নিলেও আলেক্সিসের পায়ে লেগে ভিতরে ঢুকে যায়। দুই মিনিট পর ডান দিক থেকে চমৎকার শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাকিতিচ। এর দুই মিনিট পর নেইমারের নীচু শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বিপদুমক্ত করতে পারেননি। ফিরতি শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার।

১৮ গোল নিয়ে আবারও সতীর্থ মেসিকে ছাড়িয়ে এককভাবে গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে উঠলেন উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার। আর্জেন্টাইন তারকার গোল ১৭টি।

এই জয়ে ২২ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত শীর্ষে উঠেছে বার্সেলোনা। তবে কিছুক্ষণ পরই ওসাসুনার বিপক্ষে মাঠে নামতে যাওয়া রিয়াল মাদ্রিদের সামনে সুযোগ থাকছে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধারের।   

তিন মাস পর এই আলাভেসের বিপক্ষেই কোপা দেল রের শিরোপা লড়াইয়ে নামবে কাতালান ক্লাবটি। গোল বন্যার ম্যাচে শিরোপা ধরে রাখার ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলো তারা।

তবে বিশাল ব্যবধানে জেতা ম্যাচের শেষ দিকে একটা বড় ধাক্কা খায় বার্সেলোনা। গোড়ালিতে মারাত্মক আঘাত পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন স্পেনের মিডফিল্ডার ভিদাল।