আবাহনীতে কোটানের রেখে যাওয়া চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন মামিচ

গত বছরে এপ্রিলে দ্রাগো মামিচ চলে যাওয়ার পর আবাহনী লিমিটেডের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জর্জ কোটান। জিতিয়েছিলেন ফেডারেশন কাপ, প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা। কোটান চলে যাওয়ার পর ফের ঘরোয়া ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী দলটির কোচ হয়ে ফিরেছেন মামিচ। ক্রোয়েশিয়ার এই কোচ জানালেন, সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন তিনি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2017, 02:18 PM
Updated : 7 Feb 2017, 02:18 PM

মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় পা রেখে দুপুরে আবাহনী ক্লাবে আসেন মামিচ। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন টিম ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপুর সঙ্গে আলোচনা সেরে। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ও এএফসি কাপের জন্য আপাতত দায়িত্ব পাওয়া এই কোচ দিয়েছেন সাফল্য ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি।

“যখন আপনি শিরোপা জিতবেন, তখন মনে হবে এটা সহজ কিন্তু সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কঠিন। তবে আমি বোঝাতে চাইছি, আগের বছরের মতো একই লক্ষ্য থাকবে আমাদের। অবশ্যই লক্ষ্য সবচেয়ে বড় ট্রফি (লিগ) জেতা এবং সম্ভব হলে বাকি ট্রফিগুলোও জয়ের চেষ্টা করা।”

আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের দ্বিতীয় আসর। লিগের শিরোপাধারী হিসেবে আগামী মার্চে এএফসি কাপ খেলবে আবাহনী। দুটি টুর্নামেন্টে ভালো কিছু পাওয়ার আশা মিয়ানমার ও মালদ্বীপের কোচের দায়িত্ব পালন করা মামিচের।

“প্রথমত দুটি টুর্নামেন্টেই সম্ভাব্য সেরা ফল পাওয়ার আশা আমাদের। আবাহনী এএফসি কাপে খেলবে, যেটা এই ক্লাব এবং দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে এ টুর্নামেন্টেও ভালো করা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সবকিছুর জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সময়টাও ভালো হয়েছে।”

“তবে ওটা (কোটানের সাফল্য) ছিল অনেক বড় অর্জন। ওই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি হবেই-এমনটা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না কিন্তু সেটার পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করতে পারি আমরা। বিশেষ করে এএফসি কাপে আরও ভালো করার চেষ্টাও করতে পারি।”

গত বছর জানুয়ারিতে আবাহনীর কোচ হন মামিচ। স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে এপ্রিলে চলে যান। এবার ফেরার পর দেখছেন চেনা যোদ্ধাদের মধ্যে নেই কেবল লি অ্যান্ড্রু টাক; ১০ গোল করা এই ইংলিশ মিডফিল্ডার মালয়েশিয়ার ক্লাবে যোগ দিয়েছেন। তবে ৬২ বছর বয়সী এই কোচ দলের ভাঙা-গড়া নিয়ে খুব বেশি ভাবছেন না।

“খেলোয়াড় আসে-যায়। কোচও আসে-যায়। কিন্তু ক্লাব একটা প্রতিষ্ঠান। সবাই ক্লাবের জন্য কাজ করে। এটাই স্বাভাবিক। আবাহনীর বর্তমান পরিস্থিতি ভালো এবং আমারও ভালো লেগেছে। কোটান খুব ভালো করেছেন। যার অর্থ হচ্ছে, আমার হাতেও ভালো খেলোয়াড় আছে। এ কারণে আমিও নিজের কাজটা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। কোটানের রেখে যাওয়া দলটাকে আরও ভালো করার চেষ্টা করব।”

“লি টাকের জায়গা পূরণ নিয়ে এখনও আমার কোনো ভাবনা নেই। আমি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। লি ভালো করেছে। আমি যতদূর জানি, সে লিগে ১০ গোল করেছিল; সতীর্থদের দিয়েও অনেক গোল করিয়েছিল। তবে রুপু এবং আমাদের যে খেলোয়াড় আছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে লির শূন্যতা অবশ্যই পূরণ করতে হবে আমাদের।”

জুয়েল রানা, নাবীব নেওয়াজ জীবন, ওয়ালী ফয়সাল, মামুন মিয়া, তপু বর্মনের মতো চেনা শিষ্যরা থাকায় দলে বড়সড় পরিবর্তনের প্রয়োজন বোধ করছেন না মামিচ।

“খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। এখানে অনেক খেলোয়াড়কে দেখছি; যাদের আমি আগেও দেখেছি। এই ছেলেদের আমি চিনি। হয়ত এদের মধ্যে এক-দুজনকে মনে করতে পারব না। লি চলে গেছে। তবে অন্য যারা আছে, তাদের মধ্যে থেকে সম্ভাব্য সেরাকে দিয়ে ওটা পূরণ করা হবে।”

১৪ মার্চ মালদ্বীপের দল মাজিয়া স্পোর্টসের বিপক্ষে এএফসি কাপে প্রথম ম্যাচ আবাহনীর। ১৯৮৮ সালে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করা মামিচ ২০১৪ সালে ছিলেন মালদ্বীপের জাতীয় দলের কোচ। মাজিয়া সম্পর্কে তাই জানাশোনাও আছেন তার।

“মালদ্বীপের ক্লাবটাতে প্রায় সবাই জাতীয় দলের খেলোয়াড় এবং এ কারণেই এই ক্লাবটা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানি। তারা আসলেই শক্তিশালী দল। বিভিন্ন পজিশনে তাদের মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ও আছে। তবে আমাদের দলে যারা আছে, তাদের নিয়েও আমি আশাবাদী।”

চুক্তি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি মামিচ। তবে আপাতত দুই টুর্নামেন্টের জন্য দায়িত্ব নিলেও আবাহনীর সঙ্গে লম্বা সময় কাটানোর ইচ্ছাও আছে বলে জানান ফুটবল ক্যারিয়ারে স্টপার, মিডফিল্ডার ও স্ট্রাইকার হিসেবে খেলা এই কোচ।