ঘুরে দাঁড়াতে প্রত্যয়ী সিদ্দিকুর-সোহেল-জামালরা

বিদেশিদের সঙ্গে সিদ্দিকুর-সোহেলরা দারুণ লড়বেন, বাংলাদেশের গলফপ্রেমীদের এমন প্রত্যাশার ছিটেফোঁটাও প্রথম রাউন্ডে মেলেনি। সিদ্দিকুর, সোহেল, জামালরাও হতাশ চেনা কোর্সে নিজেদের শুরুটা ভালো না হওয়ায়। তবে বসুন্ধরা বাংলাদেশ ওপেনের পরের তিন রাউন্ডে ঘুরে দাঁড়াতে প্রত্যয়ী তারা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2017, 12:26 PM
Updated : 1 Feb 2017, 12:34 PM

কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে বুধবার সিদ্দিকুরের শুরুটা ছিল মোটামুটি। তবে তিন হোলে পারের সমান শট খেলার পর চতুর্থ হোলে গিয়ে বাধল বিপত্তি। বল গাছে লেগে বাউন্ডারির বাইরে। ওই হোলেই পারের চেয়ে তিন শট বেশি খেলে পিছিয়ে পড়লেন সিদ্দিকুর।

দিনের বাকিটা সময় শুরুর ওই ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করেছেন সিদ্দিকুর। সফলও হয়েছেন। পরে তিন বার্ডি করে পারের সমান শট খেলে ১৬ জনের সঙ্গে যৌথভাবে ২৯তম স্থানে আছেন এশিয়ান ট্যুরের দুটি শিরোপা জেতা এই গলফার। চতুর্থ হোলের ওই বিপর্যয় ভুলে পরের রাউন্ডগুলোয় ভালো করতে আশাবাদী সিদ্দিকুর।

“আসলে দুর্ভাগ্য, বিপর্যয় দিয়ে শুরু হয়েছিল, তবে ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। সব মিলিয়ে আমি দারুণ খুশি। এখনও তিন রাউন্ড আছে, ইনশাল্লাহ খুব ভালো আশা আছে।”

“শটগুলো ভালো ছিল কিন্তু ওই বল গাছে লেগে বাউন্ডারির বাইরে চলে গেলো। চার নাম্বার হোলেই তিনটা বোগি হলো। এর বাইরে কিন্তু আর কোনো বোগি হয়নি। পরে তিনটা বার্ডি করেছি। যেভাবে বল মেরেছি, তাতে আমি খুবই খুশি। শুধু পাটিংটাতে একটু সমস্যা হচ্ছে। এটা ঠিক হয়ে গেলে পারের চেয়ে চার বা পাঁচ শট কম খেলা আমার জন্য কঠিন কিছু হবে না।”

শুরুটা ভালো না হলেও শিরোপা স্বপ্ন ঠিকই দেখছেন সিদ্দিকুর। পারের চেয়ে সাত শট করে কম খেলে প্রথম রাউন্ড শেষে শীর্ষে থাকা দুই প্রতিযোগীকে ধরা অসম্ভব নয় বলেও মনে করেন তিনি।

“শীর্ষে থাকা দুজনকে ধরা খুব একটা কঠিন নয়। পরের তিনটা রাউন্ডে যদি আমার খেলাটা খেলতে পারি, তাহলে হবে। আমাদের কোর্সটা কিন্তু গত দুইবারের চেয়ে এবার বেশ কঠিন, যদি ওরা বিশেষ ভালো না করে তাহলে পরের রাউন্ডে ওদের এই নাম্বারটা ধরে রাখা কঠিন হবে এবং আমার বিশ্বাস ওদের সংখ্যাটাও (পারের চেয়ে কম শট) কমে যাবে। সে ক্ষেত্রে উইনার নাম্বারটা (পারের চেয়ে ১৫ শটের মতো) ধরা আমার হিসেবে কঠিন হবে না।”

গত আসরে দেশি গলফারদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো করা শাখাওয়াত সোহেল সব মিলিয়ে হয়েছিলেন ষষ্ঠ। এবার যাচ্ছেতাই শুরু হয়েছে তার; প্রথম রাউন্ডেই তিনটি বার্ডি, ছয়টি বোগি ও একটি ডাবল বোগি করেছেন। পারের চেয়ে পাঁচ শট বেশি খেলে ছয় জনের সঙ্গে যৌথভাবে ১০৩তম স্থানে থাকা সোহেলও আশাবাদী ঘুরে দাঁড়াতে।

“গ্রিন খুব ফাস্ট, এ কথা আগেও বলেছি। বল কোর্সে দাঁড়াচ্ছে না। তবে এটা কোনো অজুহাত নয়। ভালো করতে পারিনি, এটাই আসল কথা। আসলে শুরুটা ভালো হয়েছিল বলে একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী হয়ে গিয়েছিলাম। এ কারণে কিছু উচ্চাভিলাষী শটও খেলেছি; এটাই ছিল বোকামি।”

“এখন লক্ষ্য পারের চেয়ে বেশি শট খেলার ঘাটতি কাল পুষিয়ে নিয়ে কাট এড়ানো এবং আশা করি, সেটা পারব।”

গতবার সপ্তম হওয়া জামাল হোসেন এবার পারের চেয়ে এক শট কম খেলেছেন। প্রথম দিনে দেশি গলফারদের মধ্যে মোহাম্মদ নাজিম, রবিন মিয়া ও জামালই যা একটু আলো ছড়িয়েছেন। ১০ জনকে সঙ্গে নিয়ে এই তিন গলফার যৌথভাবে রয়েছেন পঞ্চদশ স্থানে। গত আসরে সপ্তম হওয়া জামাল অবশ্য গতির সমস্যার কথা বললেও নিজের খেলার অসন্তুষ্ট।

“যা হয়েছে, তা নিয়ে তো আর নতুন করে কিছু বলার নাই। চেষ্টা করেছি ভালো খেলতে কিন্তু পারিনি। গত কয়েকদিন শরীরটাও ভালো ছিল না। তাছাড়া গত এক মাস খুব বেশি অনুশীলন করা হয়েছে; এটা করতে গিয়ে শরীরও দুর্বল হয়ে গেছে। এ ধরনের টুর্নামেন্টের জন্য টানা ১০ দিন অনুশীলন করলেই হয় কিন্তু বেশি করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে।”

“বিপিজিএ ট্যুরগুলোয় আমাদের স্কোর ভালো হয়েছে। কেননা, কোর্স তখন সফট ছিল, লক্ষ্য ঠিক থাকলে শট নিলে বল যেখানে পড়ত, সেখানে বসে যেত। কিন্তু এখন সেটা হচ্ছে না কোর্সের গতি বেড়ে যাওয়ায়। তবে এটাও কথা না। কথা হলো, আমাদের কারো পারফরম্যান্স হচ্ছে না। এর মধ্যেও পারের চেয়ে এক শট কম খেলেছি, তাতেই খুশি। আশা করি, বাকি তিন দিন আরও ভালো করব।”

তিন লাখ ডলার প্রাইজমানির এশিয়ান ট্যুরের এই আসরের প্রথম রাউন্ডে সিদ্দিকুর ছাড়াও দেশি গলফারদের মধ্যে পারের সমান শট খেলেছেন মোহাম্মদ মুয়াজ, মোহাম্মদ সিয়াম, বাদল হোসেন ও দুলাল হোসেন।