মালদ্বীপের বিপক্ষে অল আউট খেলবে বাংলাদেশ

গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য পূরণে ভারতের বিপক্ষে রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নিয়েছিল বাংলাদেশ। তিন বারের চ্যাম্পিয়নদের রুখে দেওয়ার পর সাফ ফুটবলের সেমি-ফাইনালে মালদ্বীপকে পেয়ে এখন নিজেদের স্বাভাবিক খেলাই খেলবে মেয়েরা। অল আউট খেলেই প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠার ছক কষছেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরশিলিগুড়ি থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2017, 10:48 AM
Updated : 1 Jan 2017, 11:31 AM

মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ এর আগে দুইবার সেমি-ফাইনাল খেলেছে। গ্রুপের বাঁধা পেরিয়ে এবারই প্রথম সেরা চারে উঠল মালদ্বীপ। তবে কোচ আগের মতোই প্রতিপক্ষকে সমীহ করছেন। এবার পরিকল্পনা করছেন আক্রমণাত্মক কৌশলের।

“ভারতের বিপক্ষে আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারিনি, যেটা আমরা আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলাম। তো আমাদের লক্ষ্য মালদ্বীপের বিপক্ষে অলআউট ফুটবল খেলা।”

গ্রুপের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতকে প্রথমবারের মতো ড্রয়ে রুখে দিয়ে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। তাতে ২০১০ ও ২০১৪ সালে যাদের কাছে হেরে সেরা চার থেকে ছিটকে পড়া, সেই নেপালকে এড়ানোর স্বস্তি মিলেছে। এখন প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠার সমীকরণ মেলানোর পালা সাবিনাদের।

ভারতের শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে সাতটায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এর আগে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হওয়া নেপাল লড়বে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ ভারতের সঙ্গে। গত তিন আসরে এ দুই দলই ফাইনাল খেলেছে; প্রতিবারই শিরোপা জিতেছে ভারত।

গতবার গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে হারানো বাংলাদেশের মেয়েরা অবশ্য এবারও আত্মবিশ্বাসী। তবে কোচ আগের মতোই সতর্ক।

“প্রতিপক্ষ হিসেবে মালদ্বীপ অবশ্যই শক্তিশালী। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও নেপাল সবচেয়ে এগিয়ে; বাকিরা সবাই সমান। আপনারা জানেন, এখন সব দেশ মেয়েদের ফুটবল নিয়ে কাজ করছে এবং সবাই উন্নতি করছে। যেহেতু সেমি-ফাইনাল খেলা, সেহেতু কাউকে খাটো করে দেখার কিছু নেই। আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে ফাইনালের ওঠার চেষ্টা করব।”

ভারতের বিপক্ষে দারুণ কয়েকটি সেভ করা গোলরক্ষক সাবিনা আক্তারও সুর মেলালেন কোচের সঙ্গে।

“ওরাও শক্তিশালী দল। যখন যে দলের সঙ্গে খেলব, তাদেরকে শক্তিশালী মনে করতে হবে। কোনোভাবেই কোনো দলকে দুর্বল ভাবা যাবে না। তবে আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ফাইনালে উঠতে চাই।”

দুই জয়ে রানার্সআপ হয়ে সেরা চারে ওঠা মালদ্বীপের শুরুটা শ্রীলঙ্কাকে ৫-২ গোলে হারিয়ে। এরপর নেপালের কাছে ৯-০ গোলের হার। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভুটানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেরা চারে উঠে তারা।

আট গোল দেওয়ার বিপরীতে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে ১২ গোল হজম করা মালদ্বীপকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠতে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। অভিজ্ঞ ও তরুণদের নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল পাওয়ায় এই ফরোয়ার্ড লক্ষ্য পূরণের প্রশ্নে আরও বেশি আশাবাদী।

“গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠায় আমি ভীষণ খুশি। এখন আমার একটাই লক্ষ্য-ফাইনালে ওঠা। এ মুহূর্তে আর কোনো ভাবনা নেই আমাদের। সেরাটা দিয়ে লক্ষ্য পূরণ করতে চাই।”

প্রথমবারের মতো মালদ্বীপকে সাফের সেমি-ফাইনালের মঞ্চে তোলা কোচ নাওকো কাওমাতো বাংলাদেশকেই ফেভারিট মানছেন।

“বাংলাদেশ দুইবার সেমি-ফাইনাল খেলেছে। আমরা এবারই প্রথম। আমার চোখে ওরাই ফেভারিট।”

তবে মালদ্বীপ দলেও আছে সাবিনার মতো এক ম্যাচে পাঁচ গোল করা ফরোয়ার্ড ফাধাওয়া জাহির। মালদ্বীপের জাপানি কোচই জানিয়েছেন, দ্বীপ দেশটি ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। এগিয়ে চলছে দারুণ ভবিষ্যতের দিকে। তার কথাতেই পরিষ্কার ইঙ্গিত থাকছে, উন্নতির ধারাবাহিকতায় থাকা মালদ্বীপ সেমি-ফাইনালের যুদ্ধে কঠিন পরীক্ষাই নিতে যাচ্ছে সাবিনাদের।