বের্নাবেউয়ে হোঁচটে গ্রুপ রানার্সআপ রিয়াল

কদিন আগেই শেষ মুহূর্তের গোলে লা লিগায় বার্সেলোনার বিপক্ষে হার এড়িয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে উল্টো অভিজ্ঞতা হল জিনেদিন জিদানের দলের। করিম বেনজেমার নৈপুণ্যে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েও ঘরের মাঠে জিততে পারেনি তারা। শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সঙ্গে ড্র করেছে প্রতিযোগিতার সফলতম দলটি। 

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2016, 09:49 PM
Updated : 7 Dec 2016, 10:41 PM

বুধবার রাতে গ্রুপ পর্বের শেষ রাউন্ডের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। তাতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ হয়েছে ডর্টমুন্ডের; গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই নকআউট পর্বে খেলবে জার্মানির ক্লাবটি। দুই দলের প্রথম লেগের ম্যাচটিও ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বেনজেমার দুই অর্ধের দুই গোলে রিয়াল এগিয়ে যাওয়ার পর পিয়েরে এমেরিক আউবামেয়াং ব্যবধান কমান। শেষ দিকে মার্কো রয়েস অতিথিদের সমতায় ফেরান।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আবারও নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। এই নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা চার ম্যাচে গোলশূন্য থাকলেন প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা। ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গোলের ‘সেঞ্চুরি’ করার অপেক্ষাটাও তাই আরও দীর্ঘ হলো এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৯৮ গোল করা রোনালদোর।

টানা ৩৩ ম্যাচে অপরাজিত থেকে খেলতে নামা রিয়ালের শুরুটা ছিল দারুণ আত্মবিশ্বাসী। দশম মিনিটে রোনালদোর ছোট পাস গোল করার মতো পজিশনে পেয়েছিলেন বেনজেমা; কিন্তু ঠিকমতো শট নিতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর দুই মিনিটের ব্যবধানে দুটি সুযোগ নষ্ট করেন হামেস রদ্রিগেস।

২৮তম মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা। ডান দিক থেকে দানি কারবাহালের দারুণ ক্রস ছয় গজ বক্সের মধ্যে পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন বেনজেমা। বল গোলরক্ষকের গায়ে লেগে জালে জড়ায়।

৩৯তম মিনিটে কেইলর নাভাসের দারুণ নৈপুণ্যে গোলবঞ্চিত হয় ডর্টমুন্ড। আন্দ্রে শুরলের ফ্রি কিক ডান দিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বড় বাঁচা বেঁচে যায় রিয়াল। ৪৮তম মিনিটে দুই জনকে কাটিয়ে ডি বক্সে ঢুকে ফরাসি মিডফিল্ডার উসমান দেম্বেলের শট পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। খানিক পরেই গোলমুখে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন গনসালো কাস্ত্রো।

চার মিনিট পর কোনাকুনি হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বেনজেমা। বাঁ-দিক থেকে হামেস রদ্রিগেসের দারুণ ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে আসরে নিজের চতুর্থ গোলটি করেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার।

৬০তম মিনিটে ব্যবধান কমান আউবামেয়াং। সতীর্থের উঁচু করে বাড়ানো বল অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে ভিতরে ঢোকা জার্মান ডিফেন্ডার মার্সেল সিমেলজার আলতো টোকায় গোলমুখে বাড়িয়েছিলেন। তিন মিনিট পর স্কোরলাইনে সমতা টানতে পারতেন গ্যাবনের এই ফরোয়ার্ড; কিন্তু বলে পা লাগাতেই ব্যর্থ হন তিনি।

৬৮তম মিনিটে ডি বক্সের মুখে থেকে রোনালদোর জোরালো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক। রদ্রিগেসের নেওয়া কর্নারে বেনজেমার হেড গোললাইন থেকে ফেরান এক ডিফেন্ডার। ৭৩তম মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়েও ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন মার্সেলো।

৭৮তম মিনিটে ম্যাচের সহজতম সুযোগটি নষ্ট করেন রোনালদো। বাঁ-দিকে ফাঁকায় বল পেয়ে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের নেওয়া কোনাকুনি শট গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও পোস্টের বাধা এড়াতে পারেনি।

৮৮তম মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে সমতাসূচক গোলটি করেন রয়েস। দ্রুত বল পায়ে রিয়ালের সীমানায় ঢুকে পড়া আউবামেয়াংয়ের ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়েছিলেন এই জার্মান মিডফিল্ডার।

ছয় ম্যাচের চারটিতে জেতা ডর্টমুন্ডের পয়েন্ট ১৪। তিনটি করে জয় ও ড্র নিয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ১২।

‘এফ’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে স্পোর্তিংকে ১-০ গোলে হারিয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ইউরোপা লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে লেগিয়া ওয়ারস।

লেস্টারকে উড়িয়ে নকআউট পর্বে পোর্তো

অভিষেকে দুর্দান্ত ছুটে চলা লেস্টার সিটিকে প্রথম হারের স্বাদ দিতে তাদের জালে গোল উৎসব করেছে পোর্তো। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের ৫-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে নকআউট পর্বে উঠেছে পর্তুগালের ক্লাবটি।

আগেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করা লেস্টারের পয়েন্ট ১৩। দ্বিতীয় হওয়া পোর্তোর পয়েন্ট ১১।

‘জি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে ক্লাব ব্রুজকে ২-০ গোলে হারানো কোপেনহেগেন খেলবে ইউরোপা লিগে। তাদের পয়েন্ট ৯।

ড্র করে শেষ ষোলোয় সেভিয়া

অলিম্পিক লিওঁর মাঠে গোলশূন্য ড্র করে নকআউট পর্বে খেলা নিশ্চিত করেছে ইউরোপা লিগের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন সেভিয়া। ‘এইচ’ গ্রুপের দ্বিতীয় হওয়া স্প্যানিশ দলটির পয়েন্ট ১১।

এই গ্রুপ থেকে আগেই শেষ ষোলোয় ওঠা ইউভেন্তুস ২-০ গোলে দিনামো জাগরেবকে হারিয়েছে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ইতালির দলটির পয়েন্ট ১৪।

৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হওয়া ফরাসি ক্লাব লিওঁ খেলবে ইউরোপা লিগে।

‘ই’ গ্রুপ থেকে আগেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছিল মোনাকো ও বায়ার লেভারকুজেন। ফরাসি ক্লাব মোনাকোর শীর্ষস্থানও ছিল নিশ্চিত।

দুই দলের লড়াইয়ে মোনাকোকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে জার্মান ক্লাব লেভারকুজেন। ৬ ম্যাচে মোনাকোর পয়েন্ট ১১। লেভারকুজেনের পয়েন্ট ১০।

এই গ্রুপের অন্য ম্যাচে সিএসকে মস্কোকে ৩-১ গোলে হারানো টটেনহ্যাম হটস্পারের পয়েন্ট ৭। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির ইউরোপা লিগে খেলাও আগেই নিশ্চিত হয়েছিল।