ব্রাজিলের জয়রথ চলছেই

তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর বদলে যাওয়া ব্রাজিলের থামার কোনো লক্ষণই নেই। পেরুকে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিয়েছে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2016, 04:11 AM
Updated : 16 Nov 2016, 05:02 AM

পেরুর মাঠে ম্যাচের ২-০ ব্যবধানের জয়ে প্রথম গোলটি করেন গাব্রিয়েল জেসুস। দ্বিতীয়ার্ধে রেনাতো আগুস্তোর গোলটিও বানিয়ে দেন তরুণ এই ফরোয়ার্ড।

এই জয়ে অনন্য একটি রেকর্ড গড়ল তিতের দল। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে প্রথম দল হিসেবে এক আসরে টানা ছয় ম্যাচ জিতল ব্রাজিল।

পেরুর রাজধানী লিমার জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে শুরু হওয়া ম্যাচের সপ্তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকা স্বাগতিকরা। ক্রিস্তিয়ান কুয়েভার সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সের ভেতরে বাঁ দিক থেকে আন্দ্রে কাররিওর শট লাগে দূরের পোস্টে।

দশম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া নেইমারের পাস থেকে পাওলিনিয়োর শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক।

পঞ্চদশ মিনিটে ডান দিক থেকে রেনাতো আগুস্তোর ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি ফাঁকায় থাকা ফিলিপে কৌতিনিয়ো।

২০ মিনিট পর সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন ফের্নান্দিনিয়ো। কর্নার থেকে ম্যানচেস্টার সিটির এই মিডফিল্ডারের হেডে বল মাটিতে ড্রপ খেয়ে ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়।

বিরতির পর একাদশ মিনিটেও কৌতিনিয়োর কর্নার থেকে লক্ষ্যে হেড রাখতে পারেননি ফের্নান্দিনিয়ো। তবে ৫৮তম মিনিটে নিখুঁত লক্ষ্যভেদে ব্রাজিলকে কাঙ্ক্ষিত গোল এনে দেন সিটিতে তার ক্লাব সতীর্থ হতে চলা জেসুস। ডি-বক্সে বল নিয়ে ঢুকে কৌতিনিয়ো পড়ে গেলেও বল পেরুর এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে ১৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের পায়ে এসে পড়েছিল।

ক্রিস্তিয়ান রামোসের হেড একটুর জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে গেলে ৭২তম মিনিটে পেরু সমতায় ফেরার ভালো একটা সুযোগ হারায়। ৪ মিনিট পর কৌতিনিয়োর পাস থেকে নেইমারের জোরালো শটে বল ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে।

৭৮তম মিনিটে জয় নিশ্চিত হওয়া গোলেও বড় অবদান রাখেন দলকে এগিয়ে নেওয়া জেসুস। ডি-বক্সে ঢুকে ফাঁকায় থাকা সতীর্থকে বুদ্ধিদীপ্ত পাস দিয়েছিলেন তিনি। দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে নেওয়া নীচু শটে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠান আগুস্তো।

বাছাইপর্বে ছয় ম্যাচ খেলে ৫ গোল করা ছাড়াও তিনটি গোলে অবদান রাখলেন জেসুস।

যোগ করা সময়ে নেইমারের বাড়ানো বলে বাঁ দিক থেকে বদলি হিসেবে নামা দগলাস কস্তার নীচু ক্রসে পাওলিনিয়ো ফাঁকা জালেও বল পাঠাতে না পারায় আবারও ৩-০ গোলের জয় পাওয়া হয়নি তিতের দলের। আগের ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে এই ব্যবধানে হারিয়েছিল ব্রাজিল।

দ্বাদশ রাউন্ড শেষে শীর্ষে থাকা ব্রাজিলের পয়েন্ট ২৭। কোনো অঘটন না ঘটলে ব্রাজিলকে ছাড়া কোনো বিশ্বকাপ আয়োজনের নজির তৈরি হবে না।

আগের ম্যাচে কলম্বিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বাছাইপর্ব পার হওয়ার লড়াইয়ে ভালোভাবেই আছে আর্জেন্টিনা। ১২ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে এখন পঞ্চম স্থানে এদগার্দো বাউসার দল। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে আর্জেন্টাইন কোচ হোসে পেকারমানের দল কলম্বিয়া।

নিজেদের মাঠে ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারানো একুয়েডর ২০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে। সান্তিয়াগোতে উরুগুয়েকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সমান পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে চিলি। ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ব্রাজিলের পেছনে দ্বিতীয় স্থানেই থাকল উরুগুয়ে।

দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে শীর্ষ চারটি দল সরাসরি খেলবে রাশিয়া বিশ্বকাপে। পঞ্চম দলটিকে প্লে-অফ খেলতে হবে ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের সেরা দলের সঙ্গে।

নিজেদের মাঠে প্যারাগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে বাছাই পর্বের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে বলিভিয়া। এই হারে ১৫ পয়েন্ট পাওয়া প্যারাগুয়ের জন্য বাছাইপর্ব পার হওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়ল। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে অষ্টম স্থানে থাকা পেরুর জন্যও এখন বিশ্বকাপের টিকেট পাওয়াটা কঠিন।

নবম স্থানে থাকা বলিভিয়ার পয়েন্ট ৭। ১০ দলের মধ্যে তলানিতে থাকা ভেনেজুয়েলার ৫।