অন্য দিকে টানা চার ম্যাচ জয় না পাওয়া এদগার্দো বাউসার দল বাছাইপর্ব পার হতে না পারার শঙ্কায় পড়েছে। গত তিন ম্যাচে চোটের জন্য ছিলেন না দলের সবচেয়ে বড় তারকা মেসি। কিন্তু ফিরেও দলের ভাগ্য ফেরাতে পারলেন না পাঁচ বারের বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
বেলো হরিজন্তের মিনেইরাও স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ৩-০ গোলের এই জয়ে প্রথমার্ধে লক্ষ্যভেদ করেন ফিলিপে কৌতিনিয়ো ও নেইমার। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান পাওলিনিয়ো। বিরতির পর একতরফা খেলা স্বাগতিকদের বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট না হলে ব্যবধান আরও বড় হতো।
২৩তম মিনিটে লিওনেল মেসির পাস থেকে লুকাস বিগলিয়ার জোরালো শট ডানে ঝাঁপিয়ে ঠেকান ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন।
আর্জেন্টিনা প্রথম সুযোগটা কাজে লাগাতে না পারলে কি হবে, দুই মিনিট পর নিজেদের প্রথম সুযোগেই কৌতিনিয়োর দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। নেইমারের পাস পাওয়ার পর আড়াআড়ি দৌড়ে দুই খেলোয়াড়কে এড়িয়ে ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে বুলেট গতির শট নেন লিভারপুলের এই তারকা। বল জালে জড়ায় ওপরের ডান কোণা দিয়ে; ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি গোলরক্ষক সের্হিও রোমেরো।
৪২তম মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল অতিথিরা। তবে আনহেল দি মারিয়ার বাড়ানো বলে ডি-বক্সের ভেতর থেকে ডিফেন্ডার এমানুয়েল মাসের নীচু শট দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
বিরতির ঠিক আগে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান বাড়ান নেইমার। গাব্রিয়েল জেসুসের বাড়ানো বল ডি-বক্সে নিয়ন্ত্রণে নিতে একেবারে ঠিক সময়ে দৌড় দিয়েছিলেন বার্সেলোনার এই তারকা ফরোয়ার্ড। গোলরক্ষক রোমেরোর পাশ দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠিয়ে তুলে নেন জাতীয় দলের হয়ে তার ৫০তম গোলটি।
বিরতির পর ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয়ার্ধে অনুজ্জল মেসি সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। ম্যাচে তার প্রভাব কমানোর কৌশল নেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ তিতে। তাতে পুরোপুরি সফল স্বাগতিকরা। আর বিরতির পরপরই বদলি হিসেবে নামা সের্হিও আগুয়েরো ছিলেন বিবর্ণ।
তবে তিন মিনিট পর ডিফেন্ডারদের বোঝাপড়ার ঘাটতিতে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে ব্রাজিল। মার্সেলোর ক্রস বিপদমুক্ত করতে পারেননি মাস। রেনাতো আগুস্তোর কাটব্যাকে পাওলিনিয়োর শট ফুনেস মোরির পায়ে লেগে জালে জড়ায়।
৬৮তম মিনিটে নেইমার ডি-বক্সে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েছিলেন। সাবালেতা কর্নারের বিনিময়ে সে যাত্রা দলকে বিপদমুক্ত করেন।
৭৯তম মিনিটে পাওলিনিয়োর বাড়ানো বলে আবারও ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন নেইমার। এবার গোলরক্ষক এগিয়ে এসে বলে কোনোরকমে হাত ছুঁইয়ে কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন।
দুই বছর আগে বেলো হরিজন্তেতেই বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে উড়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে সেই ভরাডুবির ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দিতে পারলো স্বাগতিকরা।
দুর্দান্ত এই জয়ে ১১ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল ব্রাজিল। তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নিয়ে টানা ৫ ম্যাচ জিতল পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানেই থাকল আর্জেন্টিনা।
অন্য ম্যাচে একুয়েডরকে ২-১ গোলে হারানো উরুগুয়ে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে। চিলির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করা কলম্বিয়া তৃতীয় ১৮ পয়েন্ট নিয়ে।
চিলির সমান ১৭ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে একুয়েডর।
পেরুর কাছে ৪-১ গোলে হারা প্যারাগুয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে আর্জেন্টিনার ঠিক পেছনেই আছে। চতুর্থ জয় পাওয়া পেরু ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে অষ্টম স্থানে।
বলিভিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে এবারের বাছাইপর্বে প্রথম জয় পেয়েছে ভেনেজুয়েলা। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে থাকা বলিভিয়ার চেয়ে ১ পয়েন্ট এগিয়ে দেশটি।