বার্সাকে মাটিতে নামাল সেল্তা ভিগো

প্রতিপক্ষদের উড়িয়ে দিতে অভ্যস্ত বার্সেলোনাকে মাটিতে নামাল সেল্তা ভিগো। রোববার রাতে নিজেদের মাঠে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে লা লিগা চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দিয়েছে দলটি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2016, 08:39 PM
Updated : 2 Oct 2016, 09:22 PM

আগের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ পয়েন্ট হারানোয় জিতলেই লা লিগার শীর্ষে ওঠার সুযোগ ছিল লুইস এনরিকের দলের। রোববার রাতে উল্টো তাদের হজম করতে হলো ৪-৩ গোলের হার!

গত মৌসুমেও সেল্তার মাঠে পর্যুদস্ত হয়েছিল বার্সেলোনা। নেইমার, মেসি, সুয়ারেসের সবাই খেললেও ৪-১ গোলে হেরে ফিরতে হয়েছিল। ওই মৌসুমে লিগে সেটাই ছিল চ্যাম্পিয়নদের সবচেয়ে বড় হার।

চোটে পড়া লিওনেল মেসির বদলে একাদশে জায়গা করে নেওয়া আর্দা তুরানের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে একাদশ মিনিটে লুইস সুয়ারেসের শট রুখে দেন গোলরক্ষক।

এরপর শুরু হয় সেল্তার চমক। ২২তম মিনিটে বার্সেলোনার রক্ষণে বোঝাপড়ার ঘাটতিতে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগানের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি সের্হিও বুসকেতস। স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ইয়াগো আসপাস বলের দখল নিয়ে ডি-বক্সে বাড়ান। বাঁ পায়ের প্রথম ছোঁয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কঠিন কোণ থেকে বল জালে পাঠিয়ে দেন ডেনমার্কের উইঙ্গার পিয়োনে সিসতো।

দুই মিনিট পরই আসপাসের দূরপাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান টের স্টেগেন।

আসপাসকে ঠেকিয়ে রাখা যায়নি। ম্যাচের আয়ু আধ ঘণ্টা পার হতেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি এক পাল্টা আক্রমণ থেকে। প্রায় মাঝমাঠে বল পেয়ে জেরার্দ পিকেকে ফাঁকি দিয়ে ডি-বক্সের ঠিক মাথা থেকে দুর্দান্ত কোনাকুনি শটে টের স্টেগেনকে পরাস্ত করেন গত মৌসুমেও এই মাঠে বার্সেলোনার জালে গোল করা এই স্ট্রাইকার। 

৩৩তম মিনিটে সেল্তার আক্রমণে আবারও ভেঙে পড়ে বার্সার রক্ষণ। এবার ডি-বক্সে আসপাসের বাড়ানো বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজের জালেই ঢুকিয়ে দেন ফরাসি ডিফেন্ডার জেরেমি ম্যাথিউ।

২০০৭ সালের পর লা লিগায় এই প্রথম প্রথমার্ধে ৩ গোল খাওয়া বার্সেলোনার কোচ লুইস এনরিকে আর খেলোয়াড়রা তখন হতভম্ব।

বিরতির পর গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকা বার্সেলোনা ব্যবধান কমায় ৫৮তম মিনিটে। বদলি হিসেবে নামা আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার ক্রসে লাফিয়ে উঠে দারুণ হেডে বল জালে পাঠান পিকে।

৬৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে ব্যবধান ১ গোলে কমিয়ে আনেন নেইমার। পাবলো এর্নান্দেস জার্সি টেনে আন্দ্রে গোমেসকে ফেলে দেওয়ায় স্পট কিকের বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি।

এরপর একের পর এক আক্রমণে বার্সেলোনার সমতা ফেরানোর চেষ্টার মাঝেই ৭৭তম মিনিটে চরম ভুল করে ফেলেন টের স্টেগেন। একটি ব্যাকপাস তেমন কোনো চাপ ছাড়াই বিপদমুক্ত করতে গিয়ে শট মারেন এগিয়ে আসা এর্নান্দেসের দিকে! বল তার মাথায় লেগে জালে ঢুকে যায়।

৭৯তম মিনিটে দলের পঞ্চম গোলটি প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন আসপাস। কাছ থেকে নেওয়া শট এবার অবশ্য ঠেকাতে কোনো ভুল করেননি টের স্টেগেন।

৮৭তম মিনিটে ডান পাশ থেকে দেনিস সুয়ারেসের ক্রসে আবার হেডে গোল করে সমর্থকদের মনে আশা জাগান পিকে। তবে শেষ সময়টায় আর সমতায় ফেরার গোল পায়নি চ্যাম্পিয়নরা।

দিনের প্রথম ম্যাচে ভালেন্সিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ওঠে আতলেতিকো মাদ্রিদ। পরের ম্যাচে এইবারের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে শীর্ষস্থান আর ফিরে পায়নি রিয়াল মাদ্রিদ। সমান ১৫ পয়েন্ট নিয়ে জিনেদিন জিদানের দল আছে দ্বিতীয় স্থানে।

অঘটনময় এক দিনে বার্সেলোনাও পারলো না শীর্ষে যেতে। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এখন চতুর্থ স্থানে আছে লুইস এনরিকের দল। ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে তৃতীয় সেভিয়া।