আবার রোনালদোর মুখোমুখি গ্রিজমান

ক্লাব আর আন্তর্জাতিক ফুটবল মিলিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো আর অঁতোয়ান গ্রিজমান। ইউরোর ফাইনালে পর্তুগাল আর ফ্রান্স ম্যাচের ভাগ্য এ দুজনের কেউই গড়ে দিতে পারেন বলে মনে করেন অনেকই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2016, 02:18 PM
Updated : 12 July 2016, 12:11 PM

ফ্রান্সের সাঁ-দেনিতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি শুরু হবে আগামী রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়। 

গত মে মাসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলেন রোনালদো আর গ্রিজমান। সেই ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন আতলেতিকো মাদ্রিদের তারকা গ্রিজমান। পরে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে আতলেতিকোকে হারিয়ে শিরোপা জেতে রিয়াল মাদ্রিদ। টাইব্রেকারে রিয়ালের প্রথম শট থেকে গোল করেছিলেন রোনালদো।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো গ্রিজমান এবারের ইউরোতে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন। ৬ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে বেশ এগিয়ে আছেন ফ্রান্সের এই ফরোয়ার্ড। ৩ গোল নিয়ে রোনালদো যৌথভাবে আছেন এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে।

পর্তুগালের সবচেয়ে বড় তারকা রোনালদো তিনটি গোল পেতে পারেন, কিন্তু রিয়ালের ফর্মটা ইউরোতে এখনও দেখাতে পারেননি তিনি। তবে শান্ত রোনালদোও অনেক ভয়ঙ্কর। যে কোনো সময় ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারেন তিনি। ওয়েলসের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে অসাধারণ এক হেডে গোল করে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়ে তা দেখিয়েছেন তিনবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। 

গ্রিজমানকে রুখতে পর্তুগালের কোচ ফের্নান্দো সান্তোসকে একটা বিষয় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে-তার কাছে বলের সরবরাহ বন্ধ করা। তবে পর্তুগাল দলের জন্য এটা কঠিন এক চ্যালেঞ্জ।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিজ্ঞতায় গ্রিজমানের চেয়ে বেশ এগিয়ে রোনালদো। ২৫ বছর বয়সী গ্রিজমান এই প্রথম ইউরোতে খেলছেন। আর রোনালদোর ক্যারিয়ারে এটি চতুর্থ ইউরো। ২০০৪ সালে দেশের মাটিতে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক হয় রোনালদোর। সেবার তার দল ফাইনালে গেলেও গ্রিসের কাছে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভাঙে।

এখনও ইউরোর শিরোপায় চুমো আঁকতে না পারলেও ব্যক্তিগত অর্জন আছে রোনালদোর। এবারের টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে হাঙ্গেরির বিপক্ষে গোল করে অনন্য এক রেকর্ড গড়েন তিনি। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোর চারটি আসরে গোল করা প্রথম খেলোয়াড় হয়ে যান রোনালদো।

এ ছাড়া ৯ গোল নিয়ে মিশেল প্লাতিনির সঙ্গে যৌথভাবে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে সবচেয়ে বেশি গোল করা খেলোয়াড়ও রোনালদো। ফাইনালে একটি গোল করতে পারলেই এককভাবে রেকর্ডটির মালিক হয়ে যাবেন ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

কঠিন হলেও তরুণ গ্রিজমানের সামনেও আছে একটি রেকর্ড ছোঁয়ার হাতছানি। ইউরোর এক আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল করা ফুটবলার এখন তিনি। ১৯৮৪ সালে প্লাতিনি করেছিলেন এক আসরে সর্বোচ্চ ৯ গোল। সুন্দর ফুটবল উপহার দিতে না পারলেও টুর্নামেন্টে রক্ষণে ভালো খেলা পর্তুগালের জালে তিন গোল করা অবশ্য গ্রিজমানের জন্য একটু কঠিনই হবে।

এবারের ইউরোতে আরেকটি দিক থেকেও রোনালদোকে পেছনে ফেলেছেন গ্রিজমান। প্রতি ৭৩ মিনিটে একটি করে গোল করেছেন তিনি। রোনালদো সেখানে প্রতি ২০০ মিনিটে করেছেন একটি করে গোল। তবে গোলে সহায়তার দিক থেকে আবার রোনালদো এগিয়ে আছেন। এ পর্যন্ত সতীর্থদের তিনটি গোলে সহায়তা করেন তিনি। বিপরীতে গ্রিজমান সহায়তা করেন সতীর্থদের দুটি গোলে।

সব মিলিয়ে ফাইনালে পর্তুগাল আর ফ্রান্সের লড়াইয়ের মাঝে এই দুই তারকার জমজমাট লড়াই দেখার আশা ফুটবল রোমাঞ্চপিয়াসীরা করতেই পারে।