‘আলিকে নকআউট করতে চাইতাম, কিন্তু ভালোবাসতাম’

রিংয়ে প্রতিপক্ষের জন্য মুহাম্মাদ আলি ছিলেন মূর্তিমান এক আতঙ্ক। আর রিংয়ের বাইরে সেই আলিই ছিলেন মহানুভবতা আর মানবিকতার প্রতীক। ক্রীড়া বিশ্ব সর্বকালের সেরা বক্সারকে হারিয়ে যেমন শোকাহত, তেমনই সবাই কষ্ট পাচ্ছেন অসাধারণ এক মানুষের চলে যাওয়ায়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2016, 03:07 PM
Updated : 4 June 2016, 04:00 PM

সানি লিস্টন আর জো ফ্রেইজারের মতো জর্জ ফোরম্যানও ছিলেন আলির রিংয়ের প্রবল প্রতিপক্ষ। ১৯৭৪ সালের ৩০ অক্টোবর জায়ারের (এখন ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো) কিনশাসায় ‘রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল’ নামে পরিচিত লড়াইয়ে ফোরম্যানকে হারিয়ে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নের খেতাব পুনরুদ্ধার করেন আলি।

সেদিন হেরে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই বক্সারের মনে আলির যে ছবিটি আঁকা তা দারুণ এক ভালো মানুষের। অ্যারিজোনার ফিনিক্সের একটি হাসপাতালে শুক্রবার ৭৪ বছর বয়সে আলি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পর ফোরম্যান সাবেক প্রতিপক্ষকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।

“মুহাম্মাদ আলি তাকে ভালোবাসতে আপনাকে বাধ্য করবে। মানুষটি সবচেয়ে অসাধারণ ছিল। বক্সিং ভুলে যান, টেলিভিশন, সংবাদমাধ্যমে আসা অসাধারণ মানুষদের একজন ছিলেন তিনি।”

বিবিসি রেডিও ফাইভকে ফোরম্যান বলেন, “মুহাম্মাদ আলি তাই ছিলেন, যাকে আমি সুন্দর বলি। তিনি বিশেষ কিছু ছিলেন।”

৪২ বছর আগের সেই লড়াইয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বক্সার মুহাম্মাদ আলির মহিমা তুলে ধরেন দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফোরম্যান।

“আমি অল্পই যা জানতাম, তাতে বুঝেছি একজন বক্সারের চেয়ে আরও বড় কিছুর মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। … আমার যা ছিল (সব মার) তার সবই সহ্য করে নিয়ে পরে আমাকে এর চেয়েও খারাপভাবে ফেরত দিয়েছিলেন। আমি মানুষটাকে ভালোবাসতাম। আমি তাকে হারাতে এবং নকআউট করতে চাইতাম, কিন্তু আমি মানুষটাকে ভালোবাসতাম।”

‘রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল’সহ আলির অনেক লড়াইয়ের আয়োজন করা প্রমোটার ডন কিং বলেন, “এটা জীবনের কষ্টের একটি দিন। আমি মুহাম্মাদ আলিকে ভালোবাসতাম, সে আমার বন্ধু ছিল। আলির মৃত্যু নেই। মার্টিন লুথার কিংয়ের মতো তার চেতনাও বেঁচে থাকবে। সে পৃথিবীর জন্য নিবেদিত ছিল।”

সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত পেলের সঙ্গে আলির খুব ঘনিষ্ঠতা ছিল। ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার ইনস্টাগ্রামে কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।

“ক্রীড়া বিশ্ব বড় একটা ক্ষতির শিকার হলো। মুহাম্মাদ আলি আমার বন্ধু ছিলেন, আমার আদর্শ, আমার নায়ক। আমরা এক সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি এবং বছর বছর ধরে সব সময় ভালো যোগাযোগ রেখেছিলাম। কষ্টটা অনেক বড়।”